Skip to content

জ্ঞানচক্ষু : প্রশ্ন-উত্তর দশম শ্রেণী বাংলা

gyanchokhu

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

  1. ‘ বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের ।’- তপনের বুকের রক্ত ছলকে ওঠার কারণ কী ছিল ? 

Ans: গল্প ছাপানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে দীর্ঘদিন অদৃশ্য থাকার পর হঠাৎই একদিন ছোটোমাসি ও মেসো ‘ সন্ধ্যাতারা পত্রিকা হাতে নিয়ে তপনদের বাড়িতে আসে । তাতে তার গল্প ছাপার কথা ভেবে তপনের বুকের রক্ত ছলাত করে ওঠে । 

  1. ‘ পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে ? ’ – এখানে কোন্ ঘটনাকে অলৌকিক ঘটনা বলা হয়েছে ?

Ans: পত্রিকায় তপন কুমার রায়ের লেখা গল্প ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হওয়া এবং সেই পত্রিকা বহু মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার ঘটনাকেই ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পে অলৌকিক ঘটনা বলা হয়েছে । 

  1. ‘ তা ঘটেছে , সত্যিই ঘটেছে ।’— কোন্ ঘটনার কথা বলা হয়েছে ? 

Ans: তপনের লেখক মেসো তার একটি গল্প ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকার সম্পাদককে বলে ছাপিয়ে দিয়েছিলেন । এই অবিশ্বাস্য , অভূতপূর্ব ঘটনার কথাই এখানে বলা হয়েছে । 

  1. ‘ গল্পটা ছাপা হলে যে ভয়ংকর আহ্লাদটা হবার কথা , সে আহ্লাদ খুঁজে পায় না । ‘ – উদ্দিষ্ট ব্যক্তির আহ্লাদিত না – হতে পারার কারণ কী ? 

Ans: নিজের লেখা ছেপে বেরোলে যে – তীব্র আনন্দ হওয়ার কথা সেই আহ্লাদ খুঁজে পায় না তপন । তার কৃতিত্বের চেয়েও যেন বড়ো হয়ে ওঠে ছোটোমেসোর গল্প ছাপিয়ে দেওয়ার কৃতিত্ব । 

  1. ‘ তপন আর পড়তে পারে না ।’- তপনের আর পড়তে না পারার কারণ কী ? 

Ans: নিজের লেখা গল্প পত্রিকায় ছেপে বেরোনোর পর পড়তে গিয়ে তপন দেখে কারেকশনের নাম করে ছোটো মেসোমশাই তার লেখাটা পুরোটাই পালটে দিয়েছেন । তাই তপন আর পড়তে পারে না । 

  1. ‘ এই দুঃখের মুহূর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন , ‘ সংকল্পটি কী ? 

Ans: তপন সংকল্প করেছিল , ভবিষ্যতে যদি কখনও আর কোনো লেখা ছাপাতে হয় , তবে সে নিজে হাতে সেই লেখা পৌঁছে দিয়ে আসবে পত্রিকার অফিসে।

  1. ‘ তপনকে যেন আর কখনো না শুনতে হয় ‘ এখানে কী শোনার কথা বলা হয়েছে ? 

Ans: তপনকে যেন আর কখনও শুনতে না হয় যে , অমুক তপনের লেখা ছাপিয়ে দিয়েছে ।

  1. ‘ তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই , – কীসের কথা বলা হয়েছে ? 

Ans: আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পে তপনের মনে হয়েছে নিজের গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা লাইন পড়ার চেয়ে দুঃখের আর কিছুই নেই । 

    1. ‘ গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল তপনের ‘ – তপনের গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল কেন ? 

Ans: স্কুলের হোমটাস্কের খাতায় একাসনে বসে তপন নিজের প্রথম গল্পটি লিখে ফ্যালে । তারপর নিজের লেখা আস্ত গল্পটি পড়ে তার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছিল। 

  1. ‘ তিনি নাকি বই লেখেন , ‘ এখানে কার কথা বলা হয়েছে ? 

Ans: এখানে তপনের নতুন মেসোমশাইয়ের কথা বলা হয়েছে । 

  1. ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ – র পত্রিকার কী লেখা ছিল ? 

Ans: ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকার সূচিপত্রে ছাপার হরফে লেখা ছিল , ‘ প্রথম দিন ‘ ( গল্প ) শ্রী তপন কুমার রায় । 

  1. ‘ তপনের গল্প পড়ে ছোটোমাসি কী বলেছিল ? 

Ans: তপনের গল্পটা সবটা না পড়েই একটু চোখ বুলিয়ে পিঠ চাপড়ানোর সুরে ছোটোমাসি বলেছিল , তার লেখাটি ভালোই হয়েছে । খানিক রসিকতার সুরে এটা কোথাও থেকে টুকলিফাই করা কিনা সে কথা ছোটোমাসি জানতে চেয়েছিল ।

  1. ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পটি কার লেখা ? এর উৎস উল্লেখ করো । 

Ans: আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু গল্পটির উৎস হল তাঁর ‘ কুমকুম নামক ছোটোদের গল্পসংকলন। 

  1. ‘ কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল ! ‘ – কোন্ কথা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল ? 

Ans: লেখকরা ভিন্ন জগতের প্রাণী — এটিই ছিল তপনের ধারণা । কিন্তু তার নতুন মেসোমশাই একজন লেখক শুনে বিস্ময়ে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল । 

  1. ‘ সত্যিকার লেখক ।’— এই উক্তির মধ্য দিয়ে তপনের মনের কোন্‌ ভাব প্রকাশিত হয়েছে বলে তোমার মনে হয় ? 

Ans: এই উক্তির মধ্য দিয়ে তপনের মনের বিস্ময় প্রকাশ পেয়েছে । লেখকরা আদৌ বাস্তব জগতের মানুষ নন – এই অলীক ভাবনা নতুন মেসোর সঙ্গে পরিচয়ে ভেঙে যাওয়াতেই এমন উক্তি । 

  1. ‘ এমন সময় ঘটল সেই ঘটনা । ‘ –কোন ঘটনার কথা বলা হয়েছে ? 

Ans: ছোটোমাসি ও লেখক মেসোমশাইয়ের ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকা নিয়ে তপনদের বাড়িতে আসার কথা প্রদত্ত অংশে বলা হয়েছে । 

  1. ‘ এ বিষয়ে সন্দেহ ছিল তপনের ।’— কোন্ বিষয়ে তপনের সন্দেহ ছিল ? 

Ans: লেখকদের যে বাস্তব জীবনে কখনও দেখা যেতে পারে , তাঁরাও যে তপনের বাবা , ছোটোমামা বা মেজোকাকার মতোই সাধারণ মানুষ— সে বিষয়ে তপনের সন্দেহ ছিল । 

  1. ‘ আর সেই সুযোগেই দেখতে পাচ্ছে তপন ।’— কোন্ সুযোগে তপন কী দেখতে পাচ্ছে ? 

Ans: লেখক মেসোমশাইকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়ে তপন বুঝতে পারে লেখকরা কোনো আকাশ থেকে পড়া জীব নয় , তাদেরই মতো মানুষ । 

  1. ‘ তখন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায় ।’— কে , কেন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায় ?

Ans: ছোটোমেসো তপনের লেখাটা ছাপানোর কথা বললে তপন প্রথমে সেটাকে ঠাট্টা বলে ভাবে । কিন্তু মেসোর মুখে করুণার ছাপ দেখে তপন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায় । 

  1. ‘ মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে সেটা ।’— উক্তিটি কার ? কোন্‌টা মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে ? 

Ans: উক্তিটি তপনের ছোটোমাসির । তপনের লেখা গল্পটা ছোটোমেসো যদি একটু কারেকশন করে ছাপানোর ব্যবস্থা করে দেন , তবে সেটাই মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে । 

গল্পের বই
  1. ‘ নতুন মেসোকে দেখে জানলে সেটা ।’— তপন কী জেনেছিল ? 

Ans: তপন ছোটো থেকেই বহু গল্প শুনেছে ও পড়েছে । কিন্তু সে জানত না যে , সাধারণ মানুষ সহজেই তা লিখতে পারে । নতুন মেসোকে দেখে সেটাই জানল । 

  1. ‘ যেন নেশায় পেয়েছে ।’— কোন্ নেশার কথা বলা হয়েছে ? 

Ans: নতুন মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন যে – গল্প লিখেছিল তা মাসির উৎসাহে মেসো ছাপিয়ে দেওয়ার কথা বলেন । এরপর থেকে তপনকে গল্প লেখার নেশায় পায় । 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

  1. নতুন মেসোকে দেখে জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল তপনের।— ‘ জ্ঞানচক্ষু বলতে কী বোঝ ? তা কীভাবে তপনের খুলে গিয়েছিল ?

Ans: আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পে জ্ঞানচক্ষু বলতে মানুষের অন্তর্দৃষ্টিকে বোঝানো হয়েছে , যার সাহায্যে মানুষ প্রকৃত সত্যকে যাচাই করে নিতে পারে । একজন লেখক সম্পর্কে তপনের মনে যে ধারণা ছিল তা নতুন মেসোর প্র সংস্পর্শে এসে ভেঙে যায় । লেখকরা যে তার বাবা , মামা ও কাকাদের ল মতোই সাধারণ জীবনযাপন করে সেটা সে প্রত্যক্ষ করে । তাদের মতোই দাড়ি কামান , সিগারেট খান , খেতে বসে খাবার তুলে দেন , পলিটিকাল তর্কও করেন — এসব দেখেই তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে যায় । ও ভাবে লেখকরা আকাশ থেকে পড়া কোনো জীব নয় , নিছক মানুষ । 

  1. রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই । — কথাটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো । 

Ans: উদ্ধৃতিটি আশাপূর্ণা দেবীর জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে গৃহীত । জহর ‘ অর্থাৎ মূল্যবান রত্ন বিশেষজ্ঞকে জহুরি বলা হয় । এক্ষেত্রে জহুরি বলতে নতুন মেসোকে বোঝানো হয়েছে । লেখক মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন একটা আস্ত গল্প লিখে মাসিকে দেখায় । মাসি তা নিয়ে সারাবাড়িতে শোরগোল বাধিয়ে মেসোকে দেখাতে যান । তপন ব্যাপারটায় আপত্তি তুললেও মনে মনে পুলকিত হয় এই ভেবে যে , তার লেখার মূল্য একমাত্র কেউ যদি বোঝে তবে ছোটোমেসোই বুঝবে , কেননা জহুরির জহর চেনার মতো একজন লেখকই পারে কোনো লেখার মূল্যায়ন করতে । 

  1. ‘ বিকেলে চায়ের টেবিলে ওঠে কথাটা । ” — কোন্ কথা উঠেছিল ? 

Ans: ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পে তপন লেখক মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে একটি গল্প লেখে তার স্কুলে ভরতি হওয়ার দিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে । তা ছোটোমাসির হাতে পড়ে এবং মাসি তা নিয়ে বেশ হইচই করে তাঁর লেখক – স্বামীকে গল্পটি দেখান । তাঁর স্বামী গল্প দেখে তপনকে ডেকে তার গল্পের প্রশংসা করেন এবং সামান্য কারেকশান করে দিলে তা ছাপার যোগ্য এ কথাও বলেন । মাসির অনুরোধে মেসো তপনকে কথা দেন ‘ সন্ধ্যাতারায় তার গল্প ছাপিয়ে দেবেন । এ কথাটাই চায়ের টেবিলে উঠেছিল । 

  1. তপনের প্রথম গল্প লেখার অভিজ্ঞতার বর্ণনা দাও ।

Ans: ছোটোমেসোকে দেখার আগে তপন জানতই না যে সাধারণ মানুষের পক্ষেও গল্প লেখা সম্ভব । কিন্তু ছোটোমেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত তপন একদিন দুপুরে সবাই যখন ঘুমের ঘোরে , তখন চুপিচুপি তিনতলার সিঁড়িতে উঠে যায় । তারপর একাসনে বসে হোম টাস্কের খাতায় লিখে ফেলে আস্ত একটা গল্প । লেখা শেষ হলে নিজের লেখা পড়ে নিজেরই গায়ে কাঁটা দেয় তপনের , মাথার চুল খাড়া হয়ে ওঠে । উত্তেজিত তপন ছুটে নীচে এসে তার লেখক হওয়ার খবরটা ছোটোমাসিকে দেয় ।

  1. ‘ শুধু এই দুঃখের মুহূর্তে গভীর সংকল্প করে দুঃখের মুহূর্তটি কী ? তপন কী সংকল্প করেছিল ?

Ans: ‘ জ্ঞানচক্ষু গল্পের নায়ক তপনের জীবনের সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্তটি একপলকে দুঃখের মুহূর্তে পর্যবসিত হয় । কারণ সে প্রকাশিত গল্পটি পড়তে গিয়ে টের পায় , লেখক – মেসো গল্পটিকে সংশোধনের নামে প্রায় সম্পূর্ণ বদলে ফেলেছেন । এ গল্পকে আর যাই হোক তার নিজের লেখা বলা যায় না । এই ঘটনায় তপন সংকল্প করেছিল যে , যদি কোনোদিন নিজের কোনো লেখা ছাপতে দেয় , তবে নিজে গিয়ে ছাপতে দেবে । ছাপা হোক বা না হোক অন্তত তাকে এ কথা শুনতে হবে না যে , কেউ তার লেখা প্রভাব খাটিয়ে ছাপিয়ে দিয়েছে । 

  1. ‘ আজ যেন তার জীবনে সবচেয়ে দুঃখের দিন- কার কথা বলা হয়েছে ? ‘ আজ ‘ কী কারণে বক্তার কাছে সবচেয়ে দুঃখেরদিন ? 

Ans: এখানে ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের প্রধান চরিত্র তপনের কথা বলা হয়েছে । মেসোমশাইয়ের দৃষ্টান্তে উদ্বুদ্ধ হয়ে তপন একটি গল্প লিখে ফেলে । এরপর মাসির প্রশ্রয়ে এবং তাঁর প্ররোচনায় লেখক নতুন মেসো সেই গল্পটি ‘ সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপিয়ে দেন । কিন্তু পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ার পর সে দেখে পুরো গল্পটাই মেসো আগাগোড়া নতুন করে লিখে দিয়েছেন । এ গল্পে শুধু তার নামটুকুই আছে ; অথচ সে কোথাও নেই । এই ঘটনা তপনের অন্তর্মনে আঘাত করে । লজ্জায় , অনুতাপে , আত্মসম্মানহীনতায় সে সকলের কাছ থেকে পালিয়ে ছাতের অন্ধকারে একলা দাঁড়িয়ে কেঁদে ফেলে । নিজের কাছে নিজেই এভাবে ছোটো হয়ে যাওয়ায় তার মনে হয় , ‘ আজ ‘ জীবনে সবচেয়ে দুঃখের দিন ।

  1. ‘ সত্যিই তপনের জীবনের সবচেয়ে সুখের দিনটি এল আজ – তপনের জীবনে সুখের দিনটি কীভাবে এল ? গল্পের শেষে সুখের দিনটি কীভাবে দুঃখের দিন হয়ে উঠল ? 

Ans: লেখক মেসোমশাইয়ের সৌজন্যে ও বদান্যতায় সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় তপনের গল্পটি প্রকাশিত হয় । ছাপার অক্ষরে তপনকুমার রায়ের গল্প প্রকাশ পাওয়ার এই দিনটি প্রাথমিকভাবে তার জীবনে সবচেয়ে সুখের দিন হয়ে উঠেছিল । পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ার পর সে দেখে পুরো গল্পটাই মেসো আগাগোড়া নতুন করে লিখে দিয়েছেন । এ গল্পে শুধু তার নামটুকুই আছে ; অথচ সে কোথাও নেই । এই ঘটনা তপনের অন্তর্মনে আঘাত করে । লজ্জায় , অনুতাপে , আত্মসম্মানহীনতায় সে সকলের কাছ থেকে পালিয়ে ছাতের অন্ধকারে একলা দাঁড়িয়ে কেঁদে ফেলে । নিজের কাছে নিজেই এভাবে ছোটো হয়ে যাওয়ায় তার মনে হয় , ‘ আজ ‘ জীবনে সবচেয়ে দুঃখের দিন । 

  1. পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে- কোন্ ঘটনাকে ‘ অলৌকিক ঘটনা বলা হয়েছে ? অলৌকিক বলতে কী বোঝ ? 

Ans: মেসোমশাইকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন একটা গল্প লিখে ফেলে । সেই গল্পটি মাসির প্ররোচনায় ও মেসোর প্রভাবে সত্যিই একটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয় । ছোট্ট তপনের কাছে তার গল্প ছাপার অক্ষরে প্রকাশ পাওয়ার ঘটনা ছিল স্বপ্নের মতোই কাল্পনিক । তাই এই ঘটনাটিকে অলৌকিক বলা হয়েছে । 

  1. ‘ গল্প ছাপা হলে যে ভয়ংকর আহ্লাদটা হওয়ার কথা , সে আহ্লাদ খুঁজে পায় না’- কার গল্প ? গল্প ছাপা হওয়ার পরেও বক্তার মনে আনন্দ নেই কেন ? 

Ans: এখানে ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের নায়ক তর্পনের লেখা প্রথম দিন ‘ গল্পটির কথা বলা হয়েছে । লেখক মেসোর প্রভাব ও পরিচিতির জোরে ছোট্ট তপনের লেখা গল্পটি ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় । তপনের লেখা গল্প ছাপা হওয়ার সংবাদে সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায় । কিন্তু তপনের কৃতিত্বের বদলে মেসোর মহত্ত্বকেই বাড়ির বড়োরা বেশি গুরুত্ব দেয় । তাদের মতে মেসোই ও গল্প ছাপিয়ে দিয়েছেন । মেজোকাকু বলেন , এমন মেসো থাকলে তারাও একবার চেষ্টা করে দেখতেন । এসব নানা কথায় তপন ক্রমশ যেন হারিয়ে যায় । তাই মনটা একটু তিক্ত হয়ে যাওয়ায় ; গল্প ছাপা হওয়ার ভয়ংকর আহ্লাদটা সে আর খুঁজে পায় না ।

    1. ‘ সে সব বই নাকি ছাপাও হয়।- উক্তিটিতে যে – বিস্ময় প্রকাশিত হয়েছে , তা পরিস্ফুট করো ।

Ans: আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পে তপন নামের বালকটি তার ছোটোমাসির সদ্যবিবাহিত স্বামী অর্থাৎ তার মেসো যে একজন লেখক , এ কথা জেনে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যায় ) লেখকেরা যে সাধারণ মানুষ এবং তার মেসোমশাই একজন লেখক , যাঁর বই ছাপা হয় — এ তথ্য তার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল । আলোচ্য উদ্ধৃতাংশে বালক তপনের মনের সেই বিস্ময় প্রকাশ পেয়েছে । 

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

‘ জ্ঞানচক্ষু গল্পে জ্ঞানচক্ষু বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? গল্পটি পড়ে তুমি কী শিক্ষা পেলে লেখো । 

Ans: ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পটির লেখিকা কথাশিল্পী আশাপূর্ণা দেবী । তিনি জ্ঞানচক্ষু কী ? জ্ঞানচক্ষু ’ বলতে মানুষের আত্ম – অনুভূতি এবং অন্তদৃষ্টি লাভের বিষয়টিকে তুলে ধরতে চেয়েছেন । ” জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পটির নায়ক তপন । ছোট্ট তপন তার সীমিত জীবনবৃত্তে কখনও কোনো লেখককে দেখেনি । তাই সত্যিকারের লেখক নতুন মেসোকে দেখে সাহিত্যিক সম্পর্কে তার সমস্ত ভুল ধারণার নিরসন হয় । মেসোকে হাতের কাছে পেয়ে অনুপ্রাণিত হয়ে সে নিজেই এবার একটা আস্ত গল্প লিখে ফেলে । 

এরপর মাসির প্রশ্রয়ে এবং লেখক মেসোর প্রভাবে সেই গল্পটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয় । সে মনে মনে বেশ গর্বও অনুভব করে । কিন্তু ছাপা লেখাটি পড়তে গিয়ে টের পায় সংশোধন করতে গিয়ে লেখক – মেসো গল্পের আগাগোড়া বদলে দিয়েছেন । নির্বিচারে কলম চালানোয় নিজের নামে সঙ্গ পড়ে প্রাপ্ত শিক্ষা ছাপানো গল্পে সে আর নিজেকেই কোথাও খুঁজে পায় না । ফলে তপনের লেখকমন আহত হয় । সে দুঃখে , লজ্জায় ও অসম্মানে একলা হাতে গিয়ে কেঁদে ফেলে । এমন গভীর খারাপ লাগার দিনে দাঁড়িয়ে সে সংকল্প করে ; ভবিষ্যতে কারও মুখাপেক্ষী না হয়ে নিজের লেখা নিজেই ছাপতে দেবে । আসলে কাউকে অবলম্বন করে কিছু পেতে গেলে যে আত্মসম্মান খুইয়ে নিজের মনের আয়নায় নিজেকেই ছোটো হয়ে যেতে হয় এই শিক্ষাই তপন লাভ করে আর আমরাও তার সঙ্গে টের পাই স্বকীয়তা এবং আত্মমর্যাদাবোধের সঙ্গে আপস করে কখনই জীবনে কিছু লাভ করা যায় না ।

Loading

Leave a Reply

error: