Skip to content

নবম শ্রেণী বাংলা: কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি (প্রথম পাঠ)

Class 9 Bengali: Kalingadeshe Jharbristi (Chapter 01)

কলিঙ্গদেশে ঝড়বৃষ্টি (কবিতা) অডিও পডকাস্ট:

কলিঙ্গদেশে ঝড়বৃষ্টি (কবিতা) গুরুত্বপূর্ণ শব্দার্থঃ

গুরুত্বপূর্ণ শব্দার্থ (শব্দের অর্থ):

কলিঙ্গ– মধ্য-পূর্ব ভারতের একটি ইতিহাসপ্রসিদ্ধ অঞ্চল। এই অঞ্চলটি এক সময় ওড়িশা রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। তখন এ অঞ্চলের রাজধানী ছিল কলিঙ্গপত্তন। বঙ্গোপসাগরের পশ্চিম উপকূলে গঙ্গানদী থেকে গোদাবরী নদী পর্যন্ত এই অঞ্চলের বিতার ছিলো। 

কৈল– করিল 

ঈশান– ঈশান শব্দের অর্থ মহেশ্বর বা শিব। তবে পাঠ্য কাব্যাংশে ঈশান বলতে উত্তর-পূর্ব দিকের কোণকে বোঝানো হয়েছে। এই কোণের অধিপতি হলেন দেবতা শিব। উত্তর-পূর্ব কোণকে বলা হয় ঈশান, দক্ষিণ-পূর্ব কোণকে বলা হয় অগ্নি, দক্ষিণ-পশ্চিম কোণকে বলা হয় নৈঋত এবং উত্তর-পশ্চিম কোণকে বলা হয় বায়ু। 

চিকুর– কেশ বা চুল 

নিমিষেকে– নিমেশের মধ্যে 

গগন– আকাশ

চারি মেঘ– সম্বর্ত, আবর্ত, পুষ্কর, দ্রোণ এই চার প্রকার মেঘ 

নাদ– গর্জন 

গণিয়া– বিচার করে

বিপাক– দুর্গতি

রড়– দৌড় 

আচ্ছাদিত– আবৃত

হরিত– সবুজ বর্ণ

অষ্ট গজরাজ– ‘অমরকোষ’ গ্রন্থে অষ্ট গজরাজ বলতে আটটি হাতির নাম উল্লিখিত হয়েছে। যথা- ঐরাবত, পুন্ডরীক, বামন, কুমুদ, অঞ্জন, পুষ্পদন্ড, সার্বভৌম এবং সুপ্রতীক। এরা দেবরাজ ইন্দ্রের অষ্ট হাতি। এই অষ্ট হাতি তাদের শুঁড় দিয়ে পৃথিবীকে ধরে রেখেছে বলে মনে করা হয়। 

বেঙ্গ-তড়কা– ব্যাঙের মতো হঠাৎ লাফ দেওয়া 

করি– হাতি

মহী– পৃথিবী 

সোঙরে– স্মরণ করে 

জৈমিনি– মীমাংসা দর্শন প্রণেতা মুনি হলেন জৈমিনি। তিনি পঞ্চ বজ্রবারকের অন্যতম। বজ্রপাত হলে সাধারণ মানুষ তাকে স্মরণ করে।

ভুজঙ্গ– সাপ

বুলে– ভ্রমণ করে

নিরবধি– নিরন্তর

আছুক– পড়ে থাকুক

হেজ্যা– পোঁচে যাওয়া

বিদারিয়া– ভেদ করে

মঠ– আশ্রম বা মন্দির 

অট্টালিকা– প্রাসাদ

দলমল– টলমল অবস্থা 

খান খান– টুকরো টুকরো 

ধায়– দৌড়য় 

অম্বিকা– ধৃতরাষ্ট্রের মাতা, এখানে দেবী চন্ডী 

অম্বিকামঙ্গল– দেবী অম্বিকার পালাগান 

কলিঙ্গদেশে ঝড়বৃষ্টি (কবিতা) প্রশ্ন ও উত্তর

গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর (SAQ): ভাগ ০১

1. কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশটি কার লেখা, কোন্ কাব্যের অন্তর্গত?

উত্তর: কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশটি মধ্যযুগের কবি মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের অন্তর্গত।

2. মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত চণ্ডীমঙ্গল কাব্যটি অন্য কী কী নামে পরিচিত?

উত্তর: মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত চণ্ডীমঙ্গল কাব্যটি অভয়ামঙ্গল, চণ্ডিকামঙ্গল, কবিকঙ্কণ চণ্ডী, অম্বিকামঙ্গল প্রভৃতি নামেও পরিচিত।

3. মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত চণ্ডীমঙ্গল কাব্যটির ক-টি খণ্ড ও কী কী?

উত্তর: মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত চণ্ডীমঙ্গল কাব্যটির দুটি খণ্ড, যথা- আখেটিক খণ্ড এবং বণিক খণ্ড।

4. কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের কোন্ খণ্ডের অন্তর্গত?

উত্তর: কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশটি চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের আখেটিক খণ্ডের অন্তর্গত।

5. দেখিতে না পায় কেহ অঙ্গ আপনার। কলিঙ্গবাসী নিজেদের অঙ্গ দেখতে পাচ্ছে না কেন?

উত্তর: চারদিকের আকাশ মেঘে আচ্ছন্ন হওয়ায় সমগ্র কলিঙ্গদেশ অন্ধকারে ঢেকে গেছে, ফলে কলিঙ্গবাসী নিজেদের অঙ্গ দেখতে পাচ্ছেন না।

6. চারি মেঘে বরিষে মুষলধারে জল। — চারিমেঘ কী কী? চারি মেঘে জল দেয় অষ্ট গজরাজ। — চারি মেঘ – এর নাম লেখো।

উত্তর: চারি মেঘ হল মেঘের চারটি রূপ – সম্বর্ত, আবর্ত, পুষ্কর এবং দ্রোণ ৷

7. উচ্চনাদে কলিঙ্গে কীসের ডাক শোনা গিয়েছে?

উত্তর: ঘন মেঘে ঢাকা কলিঙ্গের আকাশে জোরে জোরে মেঘের ডাক শোনা গিয়েছে।

8. প্রলয় গণিয়া প্রজা ভাবয়ে বিষাদ। — মন্তব্যটির অর্থ লেখো। অথবা, কলিঙ্গের প্রজাদের মন বিষাদগ্রস্ত কেন?

উত্তর: চারদিক মেঘে ঢাকা অবস্থায় মুশলধারে বৃষ্টিপাতের সঙ্গে ঘনঘন মেঘের ডাকে প্রজারা ভয়াবহ বিপদের আশঙ্কায় বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।

9. হুড় হুড় দুড় দুড় বহে ঘন ঝড়। — উক্তিটির তাৎপর্য কী?

উত্তর: উদ্ধৃতাংশটিতে কলিঙ্গদেশে মেঘের প্রবল গর্জন এবং মুশলধারে বৃষ্টিপাতের সঙ্গে যে প্রচণ্ড ঝড় হচ্ছিল তার ভয়ানক রূপ প্রকাশ পাচ্ছে।

10. বিপাকে ভবন ছাড়ি প্রজা দিল রড়। — কোন্ বিপাকে পড়ে প্রজারা পালিয়েছিল?

উত্তর: মুশলধারায় বৃষ্টিপাতের সঙ্গে ভয়ংকর ঝড়ের তাণ্ডব শুরু হওয়ায় আসন্ন বিপদের কথা ভেবে প্রজারা নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিল।

11. শ্রীকবিকঙ্কণ কার উপাধি?

উত্তর: শ্রীকবিকঙ্কণ চণ্ডীমঙ্গল কাব্যধারার শ্রেষ্ঠ কবি মুকুন্দ চক্রবর্তীর উপাধি।

12. ধূলে আচ্ছাদিত হইল যে ছিল হরিত — লাইনটির অর্থ লেখো।

উত্তর: উদ্ধৃত পঙ্ক্তিটির অর্থ হল সবুজ শস্যখেত ধুলোয় ঢেকে গেল।

13. প্রজা চমকিত। — কোথাকার প্রজা কেন চমকিত হল?

উত্তর: বিধ্বংসী ঝড়বৃষ্টির তাণ্ডবে সমগ্র কলিঙ্গদেশ ধুলোয় ঢেকে যায় এবং প্রবল দুর্যোগে শস্যখেতের ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সেখানকার প্রজারা চমকিত হয়।

14. চারদিকে মেঘে জল দেয় কারা?

উত্তর: কলিঙ্গদেশে প্রবল ঝড়বৃষ্টির সময় চারদিকে মেঘে জল দিয়েছিল অষ্ট গজরাজ বা আটটি শ্রেষ্ঠ হাতি।

15. জলধারার বর্ষণকে কীসের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?

উত্তর: জলধারার প্রবল বর্ষণকে করি-কর অর্থাৎ হাতির শুঁড় দিয়ে জল ঢালার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

16. করি-কর সমান বরিষে জলধারা – করি কর শব্দের অর্থ কী?

উত্তর: করি শব্দের অর্থ হাতি ও কর অর্থ হাত। কিন্তু করি কর এই শব্দবন্ধে উল্লিখিত অংশে হাতির শুঁড় বুঝিয়েছে।

17. কারো কথা শুনিতে না পায় কোনো জন। — কারও কথা শুনতে না পাওয়ার কারণ কী?

উত্তর: প্রবল বৃষ্টিপাতের সঙ্গে বারবার মেঘের প্রবল গর্জনে কলিঙ্গবাসীরা কেউ কারও কথা শুনতে পাচ্ছিল না।

18. মেঘ ঝড়বৃষ্টির থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কলিঙ্গবাসী কার কথা স্মরণ করেছেন? অথবা, কলিঙ্গবাসী জৈমিনিকে স্মরণ করে কেন?

উত্তর: মেঘ ঝড়বৃষ্টির সঙ্গে প্রবল বজ্রপাতেরও হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কলিঙ্গবাসী ঋষি জৈমিনির কথা স্মরণ করেছেন।

19. জৈমিনি কে?

উত্তর: ঋষিপুরুষ জৈমিনি হলেন মীমাংসা দর্শনের রচয়িতা এবং ব্যাসদেবের শিষ্য।
জৈমিনি মুনি মীমাংসা দর্শন প্রণেতা। জৈমিনি মুনির অপর নাম বজ্রপাত নিবারক। তাই বজ্রপাতের সময় তার নামকীর্তন করা হয়।

20. না পায় দেখিতে কেহ রবির কিরণ। — রবির কিরণ দেখতে না পাওয়ার কারণ কী?

উত্তর: ভয়ংকর কালো মেঘে চারদিক ঢেকে গিয়ে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে কেউ সূর্যরশ্মি দেখতে পাচ্ছিল না।

21. গর্ত ছেড়ে কারা জলে ভেসে বেড়াচ্ছে?

উত্তর: প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে কলিঙ্গদেশ জলমগ্ন হয়ে যাওয়ায় গর্ত ছেড়ে সাপ জলে ভেসে বেড়াচ্ছে।

22. কলিঙ্গদেশে কত দিন টানা বৃষ্টিপাত হয়েছিল?

উত্তর: কলিঙ্গদেশে টানা সাত দিন প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছিল।

23. সাত দিনের বৃষ্টিতে কৃষিকাজ ও ঘরবাড়ির কী ক্ষতি হল?

উত্তর: সাত দিনের বৃষ্টিতে শস্যখেত জলে ডুবে যাওয়ায় ফসল নষ্ট হয়ে গেল এবং প্রবল শিলাবৃষ্টিতে বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেল।

24. ভাদ্রপদ মাসে যেন পড়ে থাকা তাল। — কবি কোন্ বিষয়ের সঙ্গে এমন তুলনা করেছেন?

উত্তর: প্রবল ঝড়বৃষ্টিতে ঘরের চাল ভেদ করে যে শিল মেঝেতে এসে পড়ে তার সঙ্গে ভাদ্র মাসের পাকা তালের তুলনা করা হয়েছে।

25. কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশে শিল পড়াকে কীসের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?

উত্তর: কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশে বড়ো আকারের শিল পড়াকে ভাদ্র মাসে তাল পড়ার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

26. চণ্ডীর আদেশ পান বীর হনুমান। — আদেশ পেয়ে হনুমান কী করেছিল?

উত্তর: দেবী চণ্ডীর আদেশ পেয়ে বীর হনুমান মঠ, অট্টালিকা ভেঙে খানখান করেছিল।

27. উঠে পড়ে ঘরগুলা করে দলমল। – এর কারণ কী?

উত্তর: পর্বতের সমান নদীর ঢেউয়ের দাপটে কলিঙ্গদেশের বাড়িঘর জলে ভাসতে ভাসতে টলমল করছিল।

28. চণ্ডীর আদেশে নদনদী কী করে?

উত্তর: চণ্ডীর আদেশে নদনদীরা ছুটে যায়, আর চারদিকে তারা পর্বতের সমান ঢেউ তোলে।

29. মঙ্গলকাব্য কাকে বলে?

উত্তর: আনুমানিক খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতক থেকে অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত বাংলাদেশের সমাজজীবনে লোকদেবতার প্রশস্তিমুখর যে বিশেষ এক শ্রেণির ধর্ম বিষয়ক আখ্যানকাব্য প্রচলিত ছিল, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে সেই কাহিনিকাব্য মঙ্গলকাব্য নামে পরিচিত।

30. মঙ্গলকাব্য কয় প্রকার?

উত্তর: মঙ্গলকাব্য প্রধানত চার প্রকার।

31. মঙ্গলকাব্যের প্রকারভেদ লেখো।

উত্তর: মঙ্গলকাব্যের মূলত চারটি ভাগ। যেমন – মনসামঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল, অন্নদামঙ্গল। এ ছাড়াও মঙ্গলকাব্যের বহু অপ্রধান শাখা তৎকালীন সমাজে প্রচলিত ছিল। যেমন — শীতলামঙ্গল, ষষ্ঠীমঙ্গল, রায়মঙ্গল, পঞ্চাননমঙ্গল ইত্যাদি।

32. মঙ্গলকাব্যের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।

উত্তর: মঙ্গলকাব্যের দুটি বৈশিষ্ট্য হল —
i. গ্রন্থারম্ভে দেববন্দনা ও গ্রন্থউৎপত্তির কারণ বর্ণিত হবে।
ii. বারোমাস্যা, চৌতিশা, নারীগণের পতিনিন্দা ইত্যাদি বর্ণনা এই কাব্যে উপস্থিত থাকবে।

33. কবিকঙ্কণ মুকুন্দ জন্মস্থান কোথায়?

উত্তর: বর্ধমান জেলায় রত্নানদী তীরস্থ দামিন্যা গ্রামে কবিকঙ্কণ মুকুন্দ জন্মগ্রহণ করেন।

34. কবি মুকুন্দ চক্রবর্তীর পিতা ও মাতার নাম লেখো।

উত্তর: কবি মুকুন্দ চক্রবর্তীর পিতার নাম হৃদয় মিশ্র ও মাতার নাম দৈবকী।

35. মুকুন্দ চক্রবর্তী কোন সময়ের কবি?

উত্তর: মুকুন্দ চক্রবর্তী ষোড়শ শতকের কবি। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে যুগবিভাজন পর্বের বিচারে মধ্যযুগের কবি তিনি।

36. কবি মুকুন্দ কোন্ রাজার সভাকবি ছিলেন?

উত্তর: কবি মুকুন্দ চক্রবর্তী বাঁকুড়া রায়ের পুত্র রঘুনাথ রায়ের সভাকবি ছিলেন।

37. কবি মুকুন্দ চক্রবর্তীর লেখা মঙ্গলকাব্যের নাম কী?

উত্তর: কবি মুকুন্দ চক্রবর্তীর লেখা মঙ্গলকাব্যের নাম অভয়ামঙ্গল।

38. চণ্ডীমঙ্গল কার লেখা?

উত্তর: চণ্ডীমঙ্গল কবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তীর লেখা।

39. কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কোন্ কাব্যের অন্তর্গত?

উত্তর: কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি পদ্যাংশটি কবি মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত ‘অভয়ামঙ্গল’ কাব্যের ‘আখেটিক’ খণ্ডের অন্তর্গত।

40. কলিঙ্গের বর্তমান নাম কী?

উত্তর: কলিঙ্গের বর্তমান নাম উড়িষ্যা বা ওড়িশা।

41. কলিঙ্গদেশে অন্ধকার নেমে এল কীভাবে?

উত্তর: মুকুন্দ চক্রবর্তী বিরচিত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতায় ঘন মেঘে আকাশ আচ্ছন্ন হয়ে কলিঙ্গদেশে অন্ধকার নেমে এসেছিল।

42. কেউ নিজের অঙ্গ দেখতে পায়নি কেন?

উত্তর: কলিাদেশের আকাশ ঘন কালো মেঘে আবৃত হয়ে যায়, ফলে দিনের বেলাতেই যেন রাতের আঁধার নেমে আসে। এর ফলে দৃশ্যমানতা কমে গেলে প্রজারা নিজের অঙ্গ দেখতে পায় না।

43. কোন প্রান্তে চিকুর সমনে উড়ল?

উত্তর: ঈশান কোণে চিকুর সঘনে উড়ল।

44. সমনে শব্দের অর্থ কী?

উত্তর: সঘনে শব্দের অর্থ ঘন ঘন।

45. চিকুর কথার অর্থ কী?

উত্তর: চিকুর কথার অর্থ চুল বা কেশ হলেও পাঠ্যাংশে ‘চিকুর’ কথার অর্থ তীব্রবিদ্যুৎ বা বাজ।

46. কোথায় মেঘ ডাকে?

উত্তর: কবি মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতায় উত্তর পবনে দুরদুর শব্দে মেঘ ডাকে।

47. কত প্রকার মেঘে জল দেয়?

উত্তর: মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতায় চার প্রকার মেঘে জল দেয়। পুরাণ মতে সেই চার প্রকার মেঘ হল – সম্বত, আবর্ত, পুষ্কর, দ্রোণ।

48. চারি মেঘে কেমন বর্ষণ হচ্ছিল?

উত্তর: কবিকঙ্কণ রচিত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি পদ্যাংশে কলিঙ্গদেশে চারি মেঘে মুষলধারায় বর্ষণ হচ্ছিল।

49. নাদ শব্দের অর্থ কী?

উত্তর: নাদ শব্দের অর্থ তীব্র আওয়াজ।

50. কারা প্রলয় গুণল?

উত্তর: কবি মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতায় কলিঙ্গদেশের প্রজারা প্রলয় গুণল।

51. কারা ভবন ছাড়ল?

উত্তর: কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতাংশে কলিঙ্গদেশের প্রজারা ভবন ছাড়ল।

52. প্রজারা ভবন ছেড়ে বেরিয়ে গেল কেন?

উত্তর: কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি পদ্যাংশে কলিঙ্গদেশে প্রচণ্ড ঝড়ের দাপটে প্রজারা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে প্রাণ রক্ষার্থে ভবন ছেড়ে বেরিয়ে গেল।

53. রড় শব্দের অর্থ কী?

উত্তর: রড় শব্দের অর্থ ছুট বা দৌড়।

54. হরিত শব্দের অর্থ কী?

উত্তর: হরিত শব্দের অর্থ সবুজ।

55. ধূলে আচ্ছাদিত হইল যে ছিল হরিত। — বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?

উত্তর: কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি’ কবিতাংশে কবি মুকুন্দ চক্রবর্তী বলতে চেয়েছেন কলিঙ্গদেশে প্রবল ঝড়ের দাপটে উড়ে আসা ধুলোর আস্তরণে সমস্ত সবুজ আচ্ছাদিত হয়েছিল।

56. কী উলটে পড়েছিল?

উত্তর: মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত ‘কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ কবিতায়খেতের শস্য উলটে পড়েছিল।

57. প্রজা চমকিত হয়েছিল কেন?

উত্তর: কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি ও বজ্রপাতের ফলে এক দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া সৃষ্টি হয়। ঝড়ের দাপটে মাঠের শস্য উপড়ে পড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায়। তা দেখে প্রজ্ঞা চমকিত হয়েছিল।

58. গজ শব্দের দুটি সমার্থক শব্দ লেখো।

উত্তর: গজ শব্দের দুটি সমার্থক শব্দ হস্তী,মাতঙ্গ।

59. অষ্ট গজরাজ কী করেছিল?

উত্তর: অষ্ট গজরাজ চার মেঘের সহায়তায় প্রবল বৃষ্টিপাত ঘটিয়েছিল। পুরাণ মতে অষ্টগজরাজ হল – ঐরাবত, পুন্ডরীক, বামন,কুমুদ, অঞ্জন, পুষ্পদত্ত, সার্বভৌম ও সুপ্রতীক।

60. বেঙ্গ-তড়কা কথার অর্থ কী?

উত্তর: বেঙ্গ তড়কা কথার অর্থ ব্যাঙের মতো তড়াক করে লাফ দেওয়া।

61. বরিষে শব্দের গদ্যরূপ কী?

উত্তর: বরিষে শব্দের গদ্যরূপ বর্ষণ করে।

62. মহী শব্দের দুটি সমার্থক শব্দ লেখো।

উত্তর: মহী শব্দের দুটি সমার্থক শব্দ হল – পৃথিবী, ভুবন।

63. পথ চেনা যায় না কেন?

উত্তর: কলিঙ্গদেশে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে জলস্থল একাকার হয়েপথ হারিয়ে যায়।

64. কেউ কারোর কোনো কথা শুনতে পায় না কেন?

উত্তর: কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ পদ্যাংশে মেঘের গর্জনের তীব্রতায় কেউ কারোর কোনো কথা শুনতে পায় না।

65. পরিচ্ছিন্ন কথাটির অর্থ কী?

উত্তর: পরিচ্ছিন্ন কথাটির অর্থ হল বিভক্ত বা বিচ্ছিন্ন।

66. কলিঙ্গদেশে সন্ধ্যা দিবস রজনী – র কী অবস্থা?

উত্তর: কলিঙ্গদেশের আকাশ ঘন কালো মেঘে আচ্ছন্ন। প্রবলবৃষ্টিপাতের ফলে সন্ধ্যা দিবস রজনী পৃথকভাবে দৃশ্যমান হচ্ছে না। একটানা আঁধারে দিনরাতের সীমানা মুছে গেছে।

67. কলিঙ্গে সোত্তরে — কথার অর্থ কী?

উত্তর: কলিঙ্গে সোঙরে’ কথার অর্থ কলিাদেশ স্মরণ করে।

68. হুড়হুড়, দুড়দুড়, ঝনঝন কী ধরনের শব্দ?

উত্তর: হুড়হুড়, দুড়পুড়, ঝনঝন ধ্বন্যাত্মক শব্দ।

69. না পায় দেখিতে কেহ – কী দেখতে পায় না?

উত্তর: কলিঙ্গদেশের প্রজারা ঘন কালো মেঘে ছাওয়া অন্ধকারে দিনে নিজের অঙ্গ বা দেহ দেখতে পায় না।

70. কলিঙ্গদেশে কেন কেউ ‘রবির কিরণ দেখতে পায় না?

উত্তর: কবিকঙ্কণ রচিত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি পদ্যাংশে কলিঙ্গদেশের আকাশে ঘন কালো মেঘের আড়ালে সূর্য ঢাকা পড়ে যাওয়ায় দৃশ্যমানতা একদম নষ্ট হয়ে যায়। ফলে ‘রবির কিরণ’ দেখা যায় না।

71. ভুজঙ্গ শব্দের দুটি প্রতিশব্দ লেখো।

উত্তর: ভুজঙ্গ শব্দের দুটি প্রতিশব্দ – ফণী, সৰ্প।

72. কী হেজ্যা গেল?

উত্তর: কলিঙ্গবাসীর ঘর হেজ্যা গেল।

73. হেজ্যা গেল ঘর। কথার অর্থ কী?

উত্তর: মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি পদ্যাংশে সাতদিনের প্রবল বর্ষায় জল ঢুকে বাড়িঘর নষ্ট হয়ে গেল। এ কথাই বোঝানো হয়েছে।

74. কী ভেদ করে শিল পড়ে?

উত্তর: মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত ‘কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ কবিতায় কলিঙ্গবাসীর ঘরের চাল ভেদ করে শিল পড়ে।

75. কবিতায় চাল শব্দের অর্থ কী? সাধারণভাবে চাল শব্দের অর্থ কী?

উত্তর: কবিতায় ‘চাল’ শব্দের অর্থ ঘরের আচ্ছাদন বা ছাউনি।
সাধারণভাবে চাল শব্দের অর্থ ধান থেকে জাত দানা, যা দিয়ে ভাত প্রস্তুত করা হয়’ কিংবা মতলব।

76. শিলকে কীসের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?

উত্তর: মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতায় শিলকে ভাদ্রমাসে পড়ে থাকা তালের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

77. কবিতায় কোন মাসের কথা পাওয়া যায়?

উত্তর: কুন্দ চক্রবর্তীর কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতায় ভাদ্র মাসের কথা পাওয়া যায়।

78. বীর হনুমান কার আদেশ পান?

উত্তর: কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ পদ্যাংশে বীর হনুমান দেবী চণ্ডীরআদেশ পান।

79. কী কী ভেঙে খানখান হয়েছে?

উত্তর: কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ পদ্যাংশে মঠ, অট্টালিকা ভেঙে খানখান হয়েছে।

80. কে মঠ অট্টালিকা ভেঙে খানখান করে?

উত্তর: মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত ‘কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ পদ্যাংশে দেবী চণ্ডীর আদেশে বীর হনুমান মঠ অট্টালিকা ভেঙে খানখানকরে।

81. ঢেউগুলির আকৃতি কেমন ছিল?

উত্তর: কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশে প্রবল জলোচ্ছ্বাসের কারণে ঢেউগুলি পর্বতের ন্যায় বিশাল ছিল।

82. ঘরগুলির কী অবস্থা হয়েছিল?

উত্তর: কলিঙ্গদেশে সংঘটিত প্রচণ্ড দুর্যোগে পর্বতসম ঢেউয়ের আঘাতে প্রজাদের ঘরগুলি ধ্বংস হওয়ার অবস্থা হয়েছিল।

83. নদনদীগণ কার আদেশে ধায়?

উত্তর: কবিকঙ্কণ রচিত ‘কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ কবিতায় দেবীচণ্ডীর আদেশে নদনদীগণ ধায়।

84. অম্বিকা কার নাম?

উত্তর: মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতায় অম্বিকা দেবী চণ্ডীর নাম।

85. শ্রীকবিকঙ্কণ কার গান গেয়েছেন?

উত্তর: শ্রীকবিকঙ্কণ দেবী অম্বিকার তথা চণ্ডীর স্তুতিগান ‘অম্বিকামঙ্গল’গেয়েছেন।

গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর (SAQ): ভাগ ০২

1. চণ্ডীর আদেশে হনুমান কি করছিল?

উত্তর:- চণ্ডীর আদেশে হনুমান মঠ অট্টালিকা ভেঙ্গে খানখান করছিল।

2. কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ কাব্যাংশটি কার লেখাকোন্ কাব্যের অন্তর্গত?

Ans:কলিঙ্গদেশে ঝড়বৃষ্টি’ কাব্যাংশটি মধ্যযুগের কবি মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত ‘অম্বিকামঙ্গল’ কাব্যের অন্তর্গত।

3. মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত চণ্ডীযাল কাব্যটি অন্য কী কী নামে পরিচিত?

উত্তর:- মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত চণ্ডীমঙ্গল কাব্যটি ‘অভয়ামঙ্গল’,’চন্ডিকামঙ্গল’, ‘কবিকঙ্কণ চণ্ডী’,’অম্বিকাঙাল’ প্রভৃতি নামেও পরিচিত।

4. মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত চণ্ডীমণ্ডল কাব্যটির ক-টি খণ্ড ও কী কী?

উত্তর:- মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত চণ্ডীমঙ্গল কাব্যটির দুটি খণ্ড, যথা— আখেটিক খণ্ড এবং বণিক খন্ড |

5. ‘কলিদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ চণ্ডীমণ্ডল কাব্যের কোন্ খণ্ডের অন্তর্গত?

উত্তর:- ‘কলিদেশে ঝড়বৃষ্টি’ কাব্যাংশটি চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের আখেটিক খন্ডের অন্তর্গত।

6. জলধারার বর্ষপকে কীসের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?

উত্তর:- জলধারার প্রবল বর্ষশকে করি-কর অর্থাৎ হাতির গুঁড় দিয়ে জল লার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে |

7. “কারাে কথা শুনিতে না পায় বোনাে জন।’—কারও কথা শুনতে না পাওয়ার কারণ কী?

উত্তর:- প্রবল বৃষ্টিপাতের সঙ্গে বারবার মেঘের প্রবল গর্জনে কলিজাবাসী কেউ কারও কথা শুনতে পাচ্ছিল না।

8. ‘কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি‘ কার লেখা?

উত্তর:- মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর লেখা।

9. কোথায় অন্ধকার হয়ে এলো?

উত্তর:- কলিঙ্গের আকাশ অন্ধকার হয়ে এলো।

10. মুষলধারে কে বর্ষণ করছে?

উত্তর:- মুষলধারে চারিমেঘ জল বর্ষণ করছে।

11. শিলাবৃষ্টি প্রজাদের কী ক্ষতি করেছিল?

উত্তর:- শিলাবৃষ্টির ফলে প্রজাদের ঘরের চাল ভেদ করে মেঝেতে শিল এসে পড়ে।

12. বন্যার জলের ঢেউ কীরূপ লাভ করেছিল?

উত্তর:- বন্যার জলের ঢেউ পর্বতের সমান উচ্চতা লাভ করেছিল।

13. মঙ্গল্কাব্যে যে ভণিতার ব্যবহার করা হয়ে থাকেতা কী?

উত্তর:- মধ্যযুগীয় কবিরা তাদের পরিচিতি প্রদানের উদ্দেশ্যে পদের শেষে নিজেদের নাম ও পরিচয় উল্লেখ করতেন, একেই ভণিতা বলা হয়।

14. ‘উলটিয়া পড়ে শস্য’-শস্য উলটিয়ে কেন পরে?

উত্তর:- প্রবল বর্ষণে এবং প্রবল বায়ু প্রবাহের ফলে খেতের ফসল নুয়ে পড়ে অর্থাৎ উল্টে পড়ে।

15. কবি বেঙ্গ তড়কা বাজ পড়ার কথা বলেছেন কেন?

উত্তর:- কলিঙ্গদেশে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে সাতদিন ধরে টানা বর্ষণ হয়। তখন বারবার বাজ পড়তে থাকে। তাই কবি একে বেঙ্গল তড়কা বাজ বলেছেন।

16. জৈমিনি কে কারা স্মরণ করে?

উত্তর:- জৈমিনি কে কলিঙ্গের সকল লোক স্মরণ করে।

17. ‘দেখিতে না পায় কেহ’-কেন দেখতে পাই না?

উত্তর:- আকাশ মেঘে ঢেকে যাওয়াই চারিদিক অন্ধকার হয়ে আসে, তাই কেউ নিজের অঙ্গ দেখতে পায়না।

18. ‘চারিমেঘ’বলতে কোন মেঘকে বোঝানো হয়েছে?

Ans:’চারিমেঘ’বলতে সম্বর্ত, আবর্ত, পুষ্কর ও দ্রোণ-চার প্রকারের কে বোঝানো হয়েছে।

19. আকাশের কোন কোণে প্রথমে মেঘ জমেছিল?

উত্তর:- আকাশের ঈশাণ কোণে অর্থাৎ উত্তর-পূর্ব কোণে প্রথমে মেঘ জমেছিল।

20. ‘বেঙ্গ তরকা বাজ’কি?

উত্তর:- ব্যাঙের মতন তড়কা করে লাফিয়ে লাফিয়ে যে বাজ পড়ে তাকে বেঙ্গল তড়কা বাজ বলে।

21. ‘উঠে-পড়ে ঘরগুলো করে দলমল’-ঘরগুলো দলমল করার কারণ কি?

উত্তর:- সাত দিনের বর্ষণে কলিঙ্গ শহরে প্রবল বন্যা হয়। পর্বত সমান ঢেউ হয়ে বন্যার জল আসে পড়ে ঘরগুলোতে। তাই সেখানকার ঘরগুলো দলমল করছিল।

22. জৈমিনি কে কখন তারা স্মরণ করে?

উত্তর:- কলিঙ্গ দেশে যখন প্রবল ঝড় বৃষ্টি শুরু হয় তখন বারবার বাজ করতে থাকে। সেই সময় ভীত কলিঙ্গের সকল লোক জৈমিনি কে স্মরণ করে।

23. ‘না পারে দেখিতে কেহ রবির কিরণ’-রবির কিরণ দেখতে না পাওয়ার কারণ কি?

উত্তর:- কলিঙ্গ দেশে সাতদিন ধরে প্রবল ঝড় বৃষ্টি হয়, কালো মেঘে সমস্ত আকাশ ঢেকে থাকে। তাই কলিঙ্গ বাসি রবির কিরণ দেখতে পারেনি।

24. কলিঙ্গদেশে কখন অন্ধকার নেমে আসে?

উত্তর:- যখন কলিঙ্গের সমগ্র আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে যায়, তখন কলিঙ্গে অন্ধকার নেমে আসে।

25. ‘চারি মেঘ’ বলতে কী বোঝায়?

উত্তর:- সম্বর্ত, আবর্ত, পুষ্কর ও দ্রোণ হলো চার প্রকার মেঘ।

26. ‘রড়’ কী ধরণের শব্দ?

উত্তর:- ‘রড়’ শব্দটি একটি প্রচলিত লৌকিক শব্দ, যার অর্থ দৌড়ে পালানো।

27. ঝড়ে শষ্যক্ষেত্রের কী দশা হয়?

উত্তর:- ঝড়ে শস্যের গাছগুলি সব উলটে পড়ে।

28. মেঘের গর্জনের ফলে প্রজাদের কী অবস্থা হয়?

উত্তর:- মেঘের গর্জনের ফলে প্রজারা কেউ কারো কোনো কথা শুনতে পারছিলো না।

29. কলিঙ্গে নিরবধি কতদিন ধরে বৃষ্টিপাত হয়েছিল?

উত্তর:- কলিঙ্গে একটানা সাত দিন বৃষ্টি হয়েছিল।

30. মেঘ ঝড়বৃষ্টির থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কনিবাসী কার কথা স্মরণ করেছেনঅথবাকলিলবাসী জৈমিনিকে স্মরণ করে কেন?

উত্তর:- মেঘ ঝড়বৃষ্টির সঙ্গে প্রবল বজ্রপাতের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কলিঙ্গবাসী ঋষি জৈমিনির কথা স্মরণ করেছেন।

31. “না পায় দেখিতে কেহ রবির কি” রবির কিরণ দেখতে না পাওয়ার কারণ কী?

উত্তর:- ভয়ংকর কালাে মেঘে চারদিক ডেকে গিয়ে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে কেউ সূর্যরশ্মি দেখতে পাচ্ছিল না।

32. গর্ত ছেড়ে কারা জলে ভেসে বেড়াচ্ছে?

উত্তর:- প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে কলিঙাদেশ জলমগ্ন হয়ে যাওয়ায় গর্ত ছেড়ে সাপ জলে ভেসে বেড়াচ্ছে |

33. সাত দিনের বৃষ্টিতে কৃষিকাজ ও ঘরবাড়ির কী ক্ষতি হল?

উত্তর:- সাত দিনের বৃষ্টিতে শস্যখেত জলে ডুবে যাওয়ায় ফসল নষ্ট হয়ে গেল এবং প্রবল শিলাবৃষ্টিতে বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেল।

34. “ভাদ্রপদ মাসে যেন পড়ে থাকা তাল”—কবি কোন বিষয়ের সঙ্গে এমন তুলনা করেছেন?

উত্তর:- প্রবল ঝড়বৃষ্টিতে ঘরের চাল ভেদ করে যে শিল মেঝেতে এসে পড়ে তার সঙ্গে ভাদ্র মাসের পাকা তালের তুলনা করা হয়েছে।

35. কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি’ কাব্যাংশে শিল পড়াকে কীসের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?

উত্তর:- ‘কলিজাদেশে ঝড়বৃষ্টি’ কাব্যাংশে বড়াে আকারের শিল পড়াকে ভাদ্র মাসে তলি পড়ার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে |

36. “চণ্ডীর আদেশ পান বীর হনুমান।”—আদেশ পেয়ে হনুমান কী,করেছিল?

উত্তর:- দেবী চণ্ডীর আদেশ পেয়ে বীর হনুমান মঠ, অট্টালিকা ভেঙে খানখান করেছিল।

37. “উঠে পড়ে ঘরগুলা করে দলমল”—এর কারণ কী?

উত্তর:- পর্বতের সমান নদীর ঢেউয়ের দাপটে কলিঙ্গদেশের বাড়িঘর জলে ভাসতে ভাসতে টলমল করছিল।

38. “দেখিতে না পায় কেহ অঙগ আপনার” — কলিঙ্গবাসী নিজেদের অঙল দেখতে পাচ্ছে না কেন?

উত্তর:- চারদিকের আকাশ মেঘে আচ্ছন্ন হওয়ায় সমগ্র কলিঙ্গদেশ অন্ধকারে ঢেকে গেছে, ফলে কলিঙ্গবাসী নিজেদের অঙ্গ দেখতে পাচ্ছেন

39. উচ্চনাদে কলিঙ্গ কীসের ডাক শােনা গিয়েছে?

উত্তর:- ঘন মেঘে ঢাকা কলিঙ্গের আকাশে জোরে জোরে মেঘের ডাক শােনা গিয়েছে।

40. “প্রলয় গগিয়া প্রজা ভাবয়ে বিষাদ।”–মন্তব্যটির অর্থ লেখাে। অথবাকলিঙ্গের প্রজাদের মন বিষাদগ্রস্ত কেন?

উত্তর:- চারদিক মেঘে ঢাকা অবস্থায় মুশলধারে বৃষ্টিপাতের সঙ্গে ঘনঘন মেঘের ডাকে প্রজারা ভয়াবহ বিপদের আশঙ্কায় বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।

41. “হড় হড় দুড় দুড় বহে ঘন ঝড়।”~-উক্তিটির তাৎপর্য কী?

উত্তর:- উদ্ধৃতাংশটিতে কলিঙ্গদেশে মেঘের প্রবল গর্জন এবং মুশলধারে বৃষ্টিপাতের সঙ্গে যে প্রচন্ড ঝড় হচ্ছিল তার ভয়ানক রূপ প্রকাশ পাচ্ছে।

42. “বিপাকে ভবন ছাড়ি গ্রজা দিল রড়” –কোন্ বিপাকে পড়ে প্রজারা পালিয়েছিল?

উত্তর:- মুশলধারায় বৃষ্টিপাতের সঙ্গে ভয়ংকর ঝড়ের তাণ্ডবে আসন্ন পদ্যেকেথা ভেবে প্রজারা নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিল

43. শ্রীকবিকঙ্কণ কার উপাধি?

উত্তর:- শ্রীকবিকঙ্কণ কবি মুকুন্দ চক্রবর্তীর উপাধি।

44. “ধূলে যাচ্ছাদিত হইল যে ছিল হরিত”—আইনটির অর্থ লেখাে ।

উত্তর:- উস্তৃত পত্তিটির অর্থ হল সবুজ শস্যখেত ধুলােয় ঢেকে গেল।

45. প্রজা চমকিত হল কেন ?

উত্তর:- বিধ্বংসী ঝড়বৃষ্টির তাণ্ডবে সমগ্র কলিঙ্গদেশ ধুলােয় ডেকে যায়।এবং প্রবল দুর্যোগে শস্যখেতের ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় প্রজারা চমকিত হয়।

46. “চারি মেঘে জল দেয় অষ্ট গরজ ‘চারি মেঘ’-এর নাম লেখাে।

উত্তর:- ‘চারি মেঘ’ হল সম্বৰ্ত, অাবর্ত, পুকর এবং দ্ৰোণ।

47. চারদিকে মেঘে জল দেয় কারা?

উত্তর:- কলিলাদেশে প্রবল ঝড়বৃষ্টির সময় চারদিকে মেঘে জল দিয়েছিল ‘অষ্ট গজরাজ’ বা আটটি শ্রেষ্ঠ হাতি।

48. চণ্ডীর আদেশে হনুমান কি করছিল?

উত্তর:- চণ্ডীর আদেশে হনুমান মঠ অট্টালিকা ভেঙ্গে খানখান করছিল।

49. ‘উলটিয়া পড়ে শস্য‘-শস্য উলটিয়ে কেন পরে?

উত্তর:- প্রবল বর্ষণে এবং প্রবল বায়ু প্রবাহের ফলে খেতের ফসল নুয়ে পড়ে অর্থাৎ উল্টে পড়ে।

50. কবি বেঙ্গ তড়কা বাজ পড়ার কথা বলেছেন কেন?

উত্তর:- কলিঙ্গদেশে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে সাতদিন ধরে টানা বর্ষণ হয়। তখন বারবার বাজ পড়তে থাকে। তাই কবি একে বেঙ্গল তড়কা বাজ বলেছেন।

51. জৈমিনি কে কারা স্মরণ করে?

উত্তর:- জৈমিনি কে কলিঙ্গের সকল লোক স্মরণ করে।

52. ‘দেখিতে না পায় কেহ‘-কেন দেখতে পাই না?

উত্তর:- আকাশ মেঘে ঢেকে যাওয়াই চারিদিক অন্ধকার হয়ে আসে, তাই কেউ নিজের অঙ্গ দেখতে পায়না।

53. ‘চারিমেঘবলতে কোন মেঘকে বোঝানো হয়েছে?

উত্তর:’চারিমেঘ’বলতে সম্বর্ত, আবর্ত, পুষ্কর ও দ্রোণ-চার প্রকারের কে বোঝানো হয়েছে।

54. ‘প্রজা দিল রড়‘-‘রড়‘ শব্দের অর্থ কি?

উত্তর:- দৌড়ানো বা ছুটে যাওয়া।

55. ‘বেঙ্গ তরকা বাজকি?

উত্তর:ব্যাঙের মতন তড়কা করে লাফিয়ে লাফিয়ে যে বাজ পড়ে তাকে বেঙ্গল তড়কা বাজ বলে।

56. ‘উঠে-পড়ে ঘরগুলো করে দলমল‘-ঘরগুলো দলমল করার কারণ কি?

উত্তর:- সাত দিনের বর্ষণে কলিঙ্গ শহরে প্রবল বন্যা হয়। পর্বত সমান ঢেউ হয়ে বন্যার জল আসে পড়ে ঘরগুলোতে। তাই সেখানকার ঘরগুলো দলমল করছিল।

57. জৈমিনি কে কখন তারা স্মরণ করে?

উত্তর:- কলিঙ্গ দেশে যখন প্রবল ঝড় বৃষ্টি শুরু হয় তখন বারবার বাজ করতে থাকে। সেই সময় ভীত জৈমিনি কে স্মরণ করে।

58. ‘না পারে দেখিতে কেহ রবির কিরণ‘-রবির কিরণ দেখতে না পাওয়ার কারণ কি?

উত্তর:- কলিঙ্গ দেশে সাতদিন ধরে প্রবল ঝড় বৃষ্টি হয়, কালো মেঘে সমস্ত আকাশ ঢেকে থাকে। তাই কলিঙ্গ বাসি রবির কিরণ দেখতে পারেনি।

59. শ্রীকবিকঙ্কণ কোন গান গেয়েছেন

উত্তর:শ্রীকবিকঙ্কণ অম্বিকা মঙ্গল গান গেয়েছেন।

60. ‘সোঙ্গরে’ শব্দের অর্থ হল?

উত্তর:- স্মরণ করে

61. “গর্ত ছাড়ি ভুজঙ্গ ভাসিয়া বুলে জলে”- ‘বুলে’ শব্দটির অর্থ হল?

উত্তর:- ঘুরে বেরায়

62. কবিতায় যে মাসে তাল পড়ার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর:- ভাদ্র।

63. বীর হমুমান কার আদেশ পান?

উত্তর:- দেবী চন্ডীর।

64. কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতার উৎস ?

উত্তর:- চন্ডীমঙ্গল।

65. কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতার কবি হলেন?

উত্তর:- মুকুন্দরাম চক্রবর্তী।

66. ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ হয়েছিল ?

উত্তর:- কলিঙ্গদেশে।

67. চারিদিক অন্ধকারে দেখতে না পাওয়ার কারণ হল?

উত্তর:- সূর্য মেঘে ঢাকা পড়েছিল।

68. ‘চিকুর’ বলতে বোঝানো হয়েছে?

উত্তর:- বিদ্যুৎ।

69. ‘রড়’ কথার অর্থ হল?

উত্তর:- দৌড় বা ছুট।

70. শ্রীকবিকঙ্কণ কোন গান গেয়েছেন?

Ans:শ্রীকবিকঙ্কণ অম্বিকা মঙ্গল গান গেয়েছেন।

71. ‘প্রজা দিল রড়’-‘রড়’ শব্দের অর্থ কি?

উত্তর:- দৌড়ানো বা ছুটে যাওয়া।

72. কোথায় অন্ধকার হয়ে এলো?

উত্তর:- কলিঙ্গের আকাশ অন্ধকার হয়ে এলো।

73. ‘কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি’ কার লেখা?

উত্তর:- মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর লেখা।

74. মুষলধারে কে বর্ষণ করছে?

উত্তর:- মুষলধারে চারিমেঘ জল বর্ষণ করছে।

গুরুত্বপূর্ণ বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর:

1. ‘বিপাকে ভবন ছাড়িয়া প্রজা দিল রড়’-প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা কর ?

উঃ – ‘কলিঙ্গ দেশে ঝড়-বৃষ্টি’ কবিতায় দেবী চন্ডীর ধ্বংসাত্মক রূপ, ক্রিয়াকলাপ বর্ণিত হয়েছে। কলিঙ্গ বাসীকে কলিঙ্গ ত্যাগ করতে বাধ্য করার উদ্দেশ্যে একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন -ঘন মেঘে আকাশ অন্ধকার করে দেওয়া, টানা সাতদিন মুষল ধারে বৃষ্টি হওয়া, ঘন ঘন মেঘ ডাকা, বজ্রপাত হওয়া, প্রবল বেগে ঝড় প্রবাহিত হওয়া প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা উঠে এসেছে। বাধ্য হয়ে সেই সমস্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগে অসহায় বোধ করলে কলিঙ্গবাসী নিজেদের ঘর-বাড়ি ছেড়ে পার্শ্ববর্তী নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশ্যে দৌড়াতে থাকে।

2. “কলিঙ্গে সোঙরে সকল লোক যে জৈমিনি” -প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা কর।

উঃ – ‘কলিঙ্গ দেশে ঝড়-বৃষ্টি’ কবিতায় জৈমিনি হলেন পুরানের বজ্রনিবারক মুনি। কলিঙ্গবাসীকে কলিঙ্গ ত্যাগ করতে দেবী চন্ডী যেমন ঝড়-বৃষ্টি ঘটিয়েছেন তেমনই আরও বেশি পরিমানে আতঙ্কিত করতে ঘন ঘন বজ্রপাত-এর অবতারনা করেছেন। এর আওয়াজে কেউ কারোর কথা শুনতে ও বুঝতে পারে না, অন্যকে বোঝাতে পারে না। তাই এই প্রলয় থেকে নিজেদের রক্ষা করতে তারা বজ্রনিবারক মুনি জৈমিনির স্মরণাপন্ন হয়েছেন।

3. ‘চন্ডীর আদেশ পান বীর হনুমান’ – হনুমান কখন কী আদেশ পান ?

উঃ – ‘চন্ডীমঙ্গল’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ কবিতায় দেবী চন্ডীর উগ্ৰলীলা বর্ণিত হয়েছে। কবিতায় দেবীর নির্দেশে প্রবাল ঝড়-বৃষ্টি ও বজ্রপাতে কলিঙ্গবাসীকে আতঙ্কিত করতে এবং তার পরে পরবর্তী ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ ঘটাতে আদেশ দেন হনুমানকে। চন্ডীর নির্দেশে হনুমান অবশিষ্ট ঘর-বাড়ি, মঠ ভাঙচুর করতে থাকে, ফলে মানুষের অসহায় সময়ের আশ্রয় হিসেবে মঠ, মন্দিরগুলি ধ্বংস হয়ে গেলে তারা বাধ্য হয় কলিঙ্গ ত্যাগ করতে।

4. ‘কলিঙ্গ-দেশে ঝড়-বৃষ্টি’ – কবিতায় দেবী চন্ডী কোন কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটিয়েছেন আলোচনা কর।

উঃ -কবি মুকুন্দ চক্রবর্তীর ‘কলিঙ্গ দেশে ঝড়-বৃষ্টি’ কবিতায় দেবী চন্ডীর উগ্ৰলীলার পরিচয় পাওয়া যায়। কলিঙ্গবাসীকে কলিঙ্গ ত্যাগ করতে বাধ্য করার জন্যই দেবী চন্ডী কলিঙ্গবাসীর উপর একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ সৃষ্টি করেছেন।

কলিঙ্গে আতঙ্কিত পরিবেশ সৃষ্টি করতে প্রথমেই সমস্ত আকাশকে ঘন কালো মেঘে ঢেকে দিয়েছেন। সাথে, প্রবল মেঘের গর্জন অনবরত হয়ে চলেছে। এরপর মুষল ধারে হাতির শুঁড় থেকে নির্গত জলের মতোই বৃষ্টিপাত হতে শুরু করে। ঝড়-বৃষ্টি ও মেঘের গর্জনের প্রবল আওয়াজে বিপদ বুঝতে পেরে কলিঙ্গবাসী নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে দৌড়াতে শুরু করে।

প্রবল ঝড়বৃষ্টিতে জমির সমস্ত ফসল নষ্ট হয়ে যায়। একটানা সাতদিন নিরন্তর বৃষ্টি এবং বড়ো বড়ো শিলাবৃষ্টির প্রভাবে মজুত করা শস্য পচে যায় , নষ্ট হয়ে যায়। জল-স্থল একাকার হয়ে যায়, সাপ গর্ত ছেড়ে জলের উপর ভেসে বেড়ায়, পথ-ঘাট আলাদা করে কিছু বোঝা যায় না। এরপর অবশিষ্ট অট্টালিকা মঠ-মন্দির ধ্বংস করার জন্য, মানুষকে অসহায় করার জন্য দেবী চন্ডীর নির্দেশে পর্বত সমান নদী প্রবলবেগে প্রবাহিত হয়। হনুমান অবশিষ্ট মঠ-মন্দির গুলিও ধ্বংস করে দেয়, এই সমস্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথায় কবিতায় বর্ণিত হয়েছে।

5. ‘দেখিতে না পায় কেহ অঙ্গ আপনার’- কখন এবং কেন এরকম হয়েছিল ?

উৎসঃ
কবিকঙ্কন “মুকুন্দরাম চক্রবর্তী” রচিত “চন্ডীমঙ্গল” কাব্যের “আখেটিক খন্ড”-এর অন্তর্গত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ” অংশটি আমাদের পাঠ্য “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” নামে গৃহীত হয়েছে।

প্রসঙ্গঃ
কলিঙ্গদেশে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময়ে এই ঘটনা ঘটেছিল।

কারণঃ
হঠাৎই কলিঙ্গদেশে ভয়ংকর প্লাবনের আশঙ্কা দেখা দেয়। আকাশ ঘন কালো মেঘে ছেয়ে যায়। ফলে সমগ্র কলিঙ্গদেশ অন্ধকারে ঢেকে যায়। কালো মেঘের বুক চিরে ঘনঘন বিদ্যুতের ঝলকানি দেখা যায়। অন্ধকার এতটাই ঘন হয়ে ওঠে যে, তা ভেদ করে প্রজাদের নিজেদের চেহারা পর্যন্ত দেখার উপায় থাকে না।

6. ‘ঈশানে উড়িল মেঘ সঘনে চিকুর’- ঈশান শব্দটির অর্থ লিখে উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।

উৎসঃ
কবিকঙ্কন “মুকুন্দরাম চক্রবর্তী” রচিত “চন্ডীমঙ্গল” কাব্যের “আখেটিক খন্ড”-এর অন্তর্গত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ” অংশটি আমাদের পাঠ্য “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” নামে গৃহীত হয়েছে।

ঈশান শব্দের অর্থঃ
ঈশান শব্দের অর্থ উত্তর-পূর্ব কোণ।

তাৎপর্যঃ
কলিঙ্গদেশে আকস্মিক প্রাকৃতিক বিপর্যয় শুরু হয়। তৈরি হয় বন্যার আশঙ্কা। প্রবল ঝড়বৃষ্টি কলিঙ্গদেশে সর্বনাশ ডেকে আনে। ঈশান কোণে মেঘের ঘনঘটায় চারদিক অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। প্রজারা সেই অন্ধকারে নিজেদেরকেও দেখতে পায় না। মেঘের বুক চিরে অবিরাম বিদ্যুতের ঝিলিক পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তোলে। উদ্ধৃতাংশটিতে সেই ভয়াবহ বিপর্যয়ের বর্ণনা করা হয়েছে।

7. ‘নিমিষেকে জোড়ে মেঘ গগন-মণ্ডল’ — নিমিষেকে কথাটির অর্থ কী? গগনমণ্ডলে এর ফলে কী পরিস্থিতি সৃষ্টি হল ?

উৎসঃ
কবিকঙ্কন “মুকুন্দরাম চক্রবর্তী” রচিত “চন্ডীমঙ্গল” কাব্যের “আখেটিক খন্ড”-এর অন্তর্গত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ” অংশটি আমাদের পাঠ্য “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” নামে গৃহীত হয়েছে।

নিমিষেকে কথার অর্থঃ
নিমিষেকে কথাটির অর্থ মুহূর্তের মধ্যে।

সৃষ্ট পরিস্থিতিঃ
অতি অল্পসময়ে কলিঙ্গের আকাশ ঘন কালো মেঘে ঢেকে যায়। ঈশান কোণে ঘন অন্ধকারের মধ্যে বিদ্যুতের ঝলকে আকাশ কেঁপে ওঠে। মেঘের গর্জন শোনা যায়। মুহূর্তের মধ্যে কালো মেঘ ছেয়ে গিয়ে চারিদিক অন্ধকারে ঢেকে দেয়।

8. ‘চারি মেঘে বরিষে মুষলধারে জল’- মুশলধারে জলবর্ষণের কারণ কী ?

উৎসঃ
কবিকঙ্কন “মুকুন্দরাম চক্রবর্তী” রচিত “চন্ডীমঙ্গল” কাব্যের “আখেটিক খন্ড”-এর অন্তর্গত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ” অংশটি আমাদের পাঠ্য “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” নামে গৃহীত হয়েছে।

জলবর্ষণের কারণঃ
কলিঙ্গদেশের আকাশ হঠাৎ ঘন কালো মেঘে ছেয়ে যায়। গাঢ় অন্ধকারে নিজেদের চেহারা পর্যন্ত দেখতে পান না কলিঙ্গবাসী। ঈশান কোণে ঘন মেঘের জমায়েতে চারদিক অন্ধকারে ঢাকা পড়ে যায়। প্রবল মেঘের গর্জন, ঘনঘন বিদ্যুতের ঝিলিকে পৃথিবী কেঁপে ওঠে। দূরদিগন্তে মেঘের গম্ভীর আওয়াজ শোনা যায়। মুহূর্তের মধ্যে সারা আকাশ ঢেকে যায় কালো মেঘে। তারপরই মেঘে প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হয় কলিঙ্গদেশে।

9. ‘কলিঙ্গে উড়িয়া মেঘ ডাকে উচ্চনাদ’- কলিঙ্গের অবস্থান উল্লেখ করে উদ্ধৃতাংশটির ব্যাখ্যা করো।

উৎসঃ
কবিকঙ্কন “মুকুন্দরাম চক্রবর্তী” রচিত “চন্ডীমঙ্গল” কাব্যের “আখেটিক খন্ড”-এর অন্তর্গত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ” অংশটি আমাদের পাঠ্য “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” নামে গৃহীত হয়েছে।

কলিঙ্গের অবস্থানঃ
বর্তমান ওড়িশার বেশির ভাগ অংশ, অন্ধ্রপ্রদেশের উত্তর ভাগ এবং মধ্যপ্রদেশের কিছুটা অংশ জুড়ে ছিল প্রাচীন এই কলিঙ্গদেশ।

ব্যাখ্যাঃ
কবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশে কলিঙ্গদেশে ভয়াবহ প্লাবনের বর্ণনা করা হয়েছে। কলিঙ্গের আকাশ আচমকা ঘন কালো মেঘে ছেয়ে যায়। ঈশান কোণে ঘনঘন বিদ্যুতের ঝলকানি দেখা যায়। দূরদিগন্তে মেঘের গম্ভীর আওয়াজের সঙ্গে সঙ্গেই কালো মেঘরাশিতে আকাশ ঢেকে যায়। মেঘের প্রবল গর্জনের সঙ্গে শুরু হয় মুশলধারায় বৃষ্টি। সমগ্র কলিঙ্গ মেঘের গুরুগম্ভীর শব্দে কেঁপে ওঠে।

10. ‘প্রলয় গণিয়া প্ৰজা ভাবয়ে বিষাদ’ – প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রজাদের বিষাদের কারণ আলোচনা করো।

উৎসঃ
কবিকঙ্কন “মুকুন্দরাম চক্রবর্তী” রচিত “চন্ডীমঙ্গল” কাব্যের “আখেটিক খন্ড”-এর অন্তর্গত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ” অংশটি আমাদের পাঠ্য “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” নামে গৃহীত হয়েছে।

প্রসঙ্গঃ
উদ্ধৃতিটিতে কলিঙ্গদেশের প্রজাদের কথা বলা হয়েছে।

বিষাদের কারণঃ
কলিঙ্গদেশের আকাশে হঠাৎ প্রচুর মেঘ জমাট বাঁধে। ঈশান কোণে জমাটবাঁধা মেঘ সারা আকাশ ঢেকে ফেললে সর্বত্র অন্ধকার নেমে আসে। উত্তরের প্রবল বাতাসে দূর থেকে মেঘের গম্ভীর আওয়াজ ভেসে আসে। মেঘের প্রবল গর্জন ও ঘনঘন বিদ্যুৎচমকের সঙ্গে শুরু হয় প্রবল বৃষ্টিপাত। মহাপ্লাবনের আশঙ্কায় প্রজারা আতঙ্কিত ও বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে।

11. ‘বিপাকে ভবন ছাড়ি প্রজা দিল রড়’- রড় শব্দের অর্থ কী ? কোথাকার প্রজারা কী কারণে বিপাকে পড়েছিল ?

উৎসঃ
কবিকঙ্কন “মুকুন্দরাম চক্রবর্তী” রচিত “চন্ডীমঙ্গল” কাব্যের “আখেটিক খন্ড”-এর অন্তর্গত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ” অংশটি আমাদের পাঠ্য “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” নামে গৃহীত হয়েছে।

রড় শব্দের অর্থঃ
রড় শব্দের অর্থ পালিয়ে যাওয়া।

বিপাকে পড়ার কারণঃ
দেবী চণ্ডীর ইচ্ছা অনুযায়ী কলিঙ্গদেশে প্রবল ঝড়বৃষ্টি বিপর্যয় ডেকে আনে। আকাশ ঘন মেঘে ঢেকে যায়। ঘন অন্ধকারে প্রজাদের নিজেদের চেহারা পর্যন্ত দেখার উপায় থাকে না। প্রবল বৃষ্টির সঙ্গে মেঘের গম্ভীর গর্জন ও ঝড়ের তাণ্ডবে সেখানকার প্রজারা বিপদের আশঙ্কায় ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়।

12. ‘জলে মহী একাকার পথ হইল হারা’- কোথাকার পথ কেন হারিয়ে গিয়েছে ?

উৎসঃ
কবিকঙ্কন “মুকুন্দরাম চক্রবর্তী” রচিত “চন্ডীমঙ্গল” কাব্যের “আখেটিক খন্ড”-এর অন্তর্গত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ” অংশটি আমাদের পাঠ্য “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” নামে গৃহীত হয়েছে।

উদ্দিষ্ট পথঃ
উদ্ধৃতাংশে কলিঙ্গদেশের পথ হারিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

পথ হারানোর কারণঃ
কলিঙ্গের আকাশে হঠাৎ ঘন কালো মেঘরাশি জমাট বাঁধে আর মেঘের প্রবল গর্জনের সঙ্গে শুরু হয় ঘনঘন বিদ্যুতের ঝলকানি আর মুশলধারায় বৃষ্টি। মনে হয়, আটটি হাতি যেন প্রবলবেগে জল বর্ষণ করে পৃথিবীকে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে। প্রচণ্ড বৃষ্টিতে সমগ্র কলিঙ্গদেশ জলে ডুবে যায়। জল-স্থলের পার্থক্য মুছে গিয়ে কলিঙ্গদেশে পথ হারিয়ে যায়।

13. ‘পরিচ্ছিন্ন নাহি সন্ধ্যা দিবস রজনী’- পরিচ্ছিন্ন শব্দের অর্থ কী? কবি এরকম বলেছেন কেন ?

উৎসঃ
কবিকঙ্কন “মুকুন্দরাম চক্রবর্তী” রচিত “চন্ডীমঙ্গল” কাব্যের “আখেটিক খন্ড”-এর অন্তর্গত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ” অংশটি আমাদের পাঠ্য “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” নামে গৃহীত হয়েছে।

পরিচ্ছিন্ন কথার অর্থঃ
পরিচ্ছিন্ন শব্দটির অর্থ হল বিভেদ বা পার্থক্য।

কবির এরকম বক্তব্যের কারণঃ
দেবী চণ্ডীর ইচ্ছায় কলিঙ্গদেশে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। সমগ্র আকাশ মেঘে ঢেকে যায়। বিদ্যুৎ চমক আর মেঘগর্জনের সঙ্গে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়। সবুজ শস্যের খেত ধুলোয় ঢেকে যায়। প্রবল বৃষ্টিতে জল-স্থল একাকার হয়ে পথ হারিয়ে যায়। অন্ধকার এতটাই নিবিড় হয়ে যায় যে দিন এবং রাত্রিকেও কেউ আলাদা করতে পারে না।

14. ‘চারি মেঘে জল দেয় অষ্ট গজরাজ’- উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।

উৎসঃ
কবিকঙ্কন “মুকুন্দরাম চক্রবর্তী” রচিত “চন্ডীমঙ্গল” কাব্যের “আখেটিক খন্ড”-এর অন্তর্গত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ” অংশটি আমাদের পাঠ্য “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” নামে গৃহীত হয়েছে।

তাৎপর্যঃ
কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতায় দেবী চণ্ডীর নির্দেশে কলিঙ্গদেশে প্রাকৃতিক বিপর্যয় নেমে আসে। ঘন কালো মেঘে আকাশ ঢেকে যায়। প্রবল মেঘগর্জনে প্রজারা চিন্তিত হয়ে পড়ে। ঝড়ের তাণ্ডবে তারা ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। সবুজ শস্যের খেত ধুলোয় ঢেকে যায়। বৃষ্টি এতটাই তীব্র হয় যে কবি মনে করেন, আটটি দিকের পাহারাদার আটটি হাতি—ঐরাবত, পুণ্ডরীক, বামন, কুমুদ, অঞ্জন, পুষ্পদন্ত, সার্বভৌম এবং সুপ্রতীক যেন তাদের শুঁড়ের সাহায্যে চারমেঘে জল দিচ্ছে। আর তার ফলেই প্রবল বৃষ্টিপাতে চারপাশ জলে ডুবে গেছে।

15. ‘কলিঙ্গে সোঙরে সকল লোক যে জৈমিনি’- জৈমিনি কে ? কলিঙ্গবাসীর জৈমিনিকে স্মরণের কারণ কী ?

উৎসঃ
কবিকঙ্কন “মুকুন্দরাম চক্রবর্তী” রচিত “চন্ডীমঙ্গল” কাব্যের “আখেটিক খন্ড”-এর অন্তর্গত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ” অংশটি আমাদের পাঠ্য “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” নামে গৃহীত হয়েছে।

জৈমিনির পরিচয়ঃ
জৈমিনি হলেন এক বাক্‌সিদ্ধ ঋষি। এঁনার নাম স্মরণ করলে বজ্রপাত বন্ধ হয়ে যায়, এই বিশ্বাসে বজ্রপাতের সময় মানুষ এঁর নামকীর্তন করে।

কলিঙ্গবাসীর জৈমিনিকে স্মরণের কারণঃ
কলিঙ্গদেশের আকাশে হঠাৎ ঘন কালো মেঘ জমে ওঠে। আকাশভাঙা মেঘ থেকে বৃষ্টি নামে মুশলধারায়। মেঘের গম্ভীর গর্জন, ঘনঘন বজ্রপাত, ঝড়ের প্রবল তাণ্ডবে কলিঙ্গবাসী ভীত হয়ে পড়ে। এই ভীষণ বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার আশায় তারা ঋষি জৈমিনিকে স্মরণ করতে থাকে।

16. ‘না পায় দেখিতে কেহ রবির কিরণ’ – কারা, কেন রবির কিরণ দেখতে পায়নি ?

উৎসঃ
কবিকঙ্কন “মুকুন্দরাম চক্রবর্তী” রচিত “চন্ডীমঙ্গল” কাব্যের “আখেটিক খন্ড”-এর অন্তর্গত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ” অংশটি আমাদের পাঠ্য “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” নামে গৃহীত হয়েছে।

উদ্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গঃ
উদ্ধৃতাংশটিতে ঝড়বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত কলিঙ্গবাসীদের কথা বলা হয়েছে।

রবির কিরণ দেখতে না পাওয়ার কারণঃ
কলিঙ্গদেশের আকাশে হঠাৎই প্রচুর মেঘ জমাট বাঁধে। দূরদিগন্তে মেঘের গম্ভীর আওয়াজের সঙ্গে শুরু হয় মুশলধারায় বৃষ্টি। কালো মেঘে চারদিক অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যাওয়ায় কলিঙ্গবাসীর পক্ষে দিনরাত্রির পার্থক্যও বোঝা সম্ভব হয় না ৷ সাত দিন একটানা প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে তারা একেবারেই সূর্যের আলো দেখতে পায় না।

17. ‘ভাদ্রপদ মাসে যেন পড়ে থাকা তাল’- কীসের কথা বলা হয়েছে ? মন্তব্যটির প্রসঙ্গ আলোচনা করো।

উৎসঃ
কবিকঙ্কন “মুকুন্দরাম চক্রবর্তী” রচিত “চন্ডীমঙ্গল” কাব্যের “আখেটিক খন্ড”-এর অন্তর্গত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ” অংশটি আমাদের পাঠ্য “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” নামে গৃহীত হয়েছে।

উদ্দিষ্ট বিষয়ঃ
কলিঙ্গদেশে প্রবল ঝড়বৃষ্টির ফলে যে শিল পড়েছিল, এখানে তার কথা বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গঃ
কাব্যাংশে বর্ণনা করা হয়েছে যে আকাশ কালো-করা বিপুল মেঘরাশির সঙ্গে প্রবল বৃষ্টিতে বন্যা সৃষ্টি হয় কলিঙ্গে। টানা সাত দিনের একটানা বৃষ্টির সঙ্গে অনবরত শিলও পড়তে শুরু করে। ভাদ্র মাসে তাল পেকে যেমন গাছ থেকে পড়ে যায় ঠিক তেমনিভাবে অত্যন্ত বড়ো আকারের শিল ঘরের চাল ভেদ করে মেঝেতে পড়ে প্রজাদের ঘরবাড়ি সব নষ্ট করে দেয়।

18. ‘চণ্ডীর আদেশে ধায় নদনদীগণ’- এর ফলে কী হয়েছে ?

উৎসঃ
কবিকঙ্কন “মুকুন্দরাম চক্রবর্তী” রচিত “চন্ডীমঙ্গল” কাব্যের “আখেটিক খন্ড”-এর অন্তর্গত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ” অংশটি আমাদের পাঠ্য “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” নামে গৃহীত হয়েছে।

ফলশ্রুতিঃ
দেবী চণ্ডীর আদেশে কলিঙ্গের নদনদীগুলি ফুলে ফেঁপে উঠে প্রবাহিত হয়েছে। দেবীর আদেশেই কলিঙ্গে কালো ঘন মেঘের রাশির সঙ্গে বিদ্যুতের ঝলকানি ডেকে আনে প্রচণ্ড বৃষ্টি। সাত দিনের একটানা বৃষ্টিতে প্লাবিত হয় সমগ্র কলিঙ্গদেশ, জল-স্থল সব একাকার হয়ে যায়। দেবীর নির্দেশেই আবার কলিঙ্গের সমস্ত নদনদী ফুলেফেঁপে ধেয়ে আসে। নদনদীর পাহাড়সমান ঢেউয়ের আঘাতে কলিঙ্গদেশের ঘরবাড়ি সব ভেসে গিয়ে ঢেউয়ের মাথায় টলমল করতে থাকে।

19. কলিঙ্গদেশে যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সৃষ্টি হয়েছিল তা কবিতা অবলম্বনে আলোচনা করো।

উৎসঃ
কবিকঙ্কন “মুকুন্দরাম চক্রবর্তী” রচিত “চন্ডীমঙ্গল” কাব্যের “আখেটিক খন্ড”-এর অন্তর্গত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ” অংশটি আমাদের পাঠ্য “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” নামে গৃহীত হয়েছে।

কলিঙ্গদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরিচয়ঃ
দেবী চন্ডীর ইচ্ছায় ব্যাধ কালকেতু সাত ঘড়া ধন লাভ করে গুজুরাট নগরি নির্মাণ করলে সেখানে প্রজা স্থাপনের উদ্দেশ্যে দেবী চন্ডী পার্শবর্তী কলিঙ্গদেশে প্রবল প্রাকৃতিক দুর্যোগের সৃষ্টি করেন। আমাদের পাঠ্য কবিতায় আমরা যার পরিচয় লাভ করি।
সমগ্র কলিঙ্গদেশের আকাশ এমনভাবে ঘন কালো মেঘ দ্বারা আচ্ছাদিত হয়ে যায় যে কেউ কারো মুখ পর্যন্ত দেখতে পায় না। উত্তর-পূর্ব কোণ জুড়ে কালো মেঘ বিদ্যুতের ভয়াবহ চমক সৃষ্টি করে-

“ঈশানে উড়িল মেঘ সঘনে চিকুর”

উত্তর দিক থেকে প্রবল বাতাস বইতে থাকে ও মুহূর্তের মধ্যে সমগ্র কলিঙ্গদেশের আকাশে বিস্তৃত কালো মেঘে ঢেকে যায়। সম্বর্ত, আবর্ত, পুষ্কর ও দ্রোণ- এই চার প্রকার মেঘের সম্মিলিত বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে যায়-

“চারি মেঘে বরিষে মুষুলধারে জল”

মেঘের উচ্চনাদে কলিঙ্গের প্রজারা মহাপ্রলয়ের আশঙ্কায় আশঙ্কিত হয়ে ওঠে। ঝড়ের তান্ডবে প্রজারা নিদের গৃহ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। প্রচন্ড ঝড়ে পথের ধুলো দ্বারা সকল সবুজ আচ্ছাদিত হয়ে যায়। এমনকি ঝড়ের আঘাতে প্রজাদের মজুদ করা শস্য উলটে পড়ে যায়। চার প্রকার মেঘ যেন ঐরাবত, পুন্ডরীক, বামন, কুমুদ, অঞ্জন, পুষ্পদন্ত, সার্বভৌম ও সুপ্রতীক নামক অষ্ট গজরাজের সহায়তায় কলিঙ্গের বুকে বৃষ্টিপাতে ব্রতী হয়-

“চারি মেঘে জল দেয় অষ্ট গজরাজ”

ব্যঙের মতো লাফিয়ে লাফিয়ে বাজ পড়তে থাকে। কলিঙ্গদেশের জল-স্থল মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় বলে প্রজারা পথ হারিয়ে ফেলে ও গর্ত থেকে সাপ বেরিয়ে পড়ে জলে ভেসে বেড়াতে থাকে। প্রচন্ড মেঘের গর্জনে কলিঙ্গবাসী নিজেদের কথা পর্যন্ত শুনতে পারছিল না। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে দিন ও রাতের প্রভেদ পর্যন্ত অবলুপ্ত হয়ে যায়-

“পরিচ্ছিন্ন নাহি সন্ধ্যা দিবস রজনী”

ভীত কলিঙ্গবাসী পরিত্রাণের উদ্দেশ্যে জৈমিনি মুনিকে স্মরণ করতে থাকে। নিরন্তর সাত দিন বৃষ্টিতে ফসল সঠিক ভাবে ঝাড়াই-মাড়াই না হওয়ায় তা পচে যেতে থাকে। প্রজাদের ঘরের চাল ভেদ করে ভাদ্রমাসে তাল পড়ার মতো শিল পড়তে থাকে-

“মেঝ্যাতে পড়য়ে শিল বিদারিয়া চাল
ভাদ্রপদ মাসে যেন পড়ে থাকা তাল ।”

ভয়ংকর প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাঝে দেবী চন্ডীর আদেশে বীর হনুমান কলিঙ্গের সমস্ত মঠ ও অট্টালিকা ভেঙে টুকরো টুকরো করে দিতে থাকেন। দেবী চন্ডীর আদেশে নদনদীরা কলিঙ্গের উদ্দেশ্যে ধাবিত হলে পর্বতসম ঢেউ কলিঙ্গদেশে আছড়ে পড়ে।
এইরূপে কলিঙ্গদেশে যে প্রাকৃতিক অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছিল তা কলিঙ্গবাসীকে বিপদগ্রস্থ করে তুলেছিল।

20. “প্রলয় গনিয়া প্রজা ভাবয়ে বিষাদ”- কোন্‌ দেশের প্রজার কথা বলা হয়েছে? তাদের এমন দুর্দিন কেন তা লেখো।

উৎসঃ
কবিকঙ্কন “মুকুন্দরাম চক্রবর্তী” রচিত “চন্ডীমঙ্গল” কাব্যের “আখেটিক খন্ড”-এর অন্তর্গত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ” অংশটি আমাদের পাঠ্য “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” নামে গৃহীত হয়েছে। প্রশ্নোক্ত অংশটি এই কবিতার অন্তর্গত।

যে দেশের প্রজাঃ
প্রশ্নোক্ত অংশে কলিঙ্গদেশের প্রজাদের কথা বলা হয়েছে।

দুর্দিনের কারণঃ
ভয়ংকর প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাঝে দেবী চন্ডীর আদেশে বীর হনুমান কলিঙ্গের সমস্ত মঠ ও অট্টালিকা ভেঙে টুকরো টুকরো করে দিতে থাকেন। দেবী চন্ডীর আদেশে নদনদীরা কলিঙ্গের উদ্দেশ্যে ধাবিত হলে পর্বতসম ঢেউ কলিঙ্গদেশে আছড়ে পড়ে।
এইরূপে কলিঙ্গদেশে যে প্রাকৃতিক অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছিল তা কলিঙ্গবাসীকে বিপদগ্রস্থ করে তুলেছিল।

Loading

Leave a Reply

error: