Skip to content

ধীবর বৃত্তান্ত – বাংলা নাট্যাংশ (নবম শ্রেণী)

Class 9: Dhibar Brittanto by Kalidas Bengali Drama (Chapter 01)

অডিও পডকাস্ট: ধীবর বৃত্তান্ত নাটক আলোচনা

ধীবর বৃত্তান্ত নাটক প্রশ্ন ও উত্তর

গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর (SAQ): ভাগ ০১

1. “হাতবাঁধা অবস্থায় এক পুরুষকে সঙ্গে নিয়ে দুই রক্ষীর প্রবেশ।”– পুরুষটির হাত বাঁধা ছিল কেন ?

উত্তরঃ পুরুষটির কাছে রাজা দুষ্মন্তের আংটি পাওয়া গিয়েছিল, তাই তাকে চোর সন্দেহে হাত বেঁধে নিয়ে আসা হয়।

2. ধীবরকে কারা ধরে এনেছিল ?

উত্তরঃ ধীবরকে নগর রক্ষায় নিযুক্ত রাজশ্যালক এবং দুজন রক্ষী ‘সূচক’ ও ‘জানুক’ ধরে নিয়েছিল।

3. তীর্থ থেকে ফিরে এসে মহর্ষি কণ্ব কী করেছিলেন ?

উত্তরঃ শকুন্তলাকে পতিগৃহে অর্থাৎ রাজা দুষ্মন্তের কাছে পাঠাবার ব্যবস্থা করেছিলেন।

4. দুষ্মন্ত প্রদত্ত আংটিটি শকুন্তলা কীভাবে হারিয়ে ফেলেছিলেন ?

উত্তরঃ পতিগৃহে যাবার পথে শচীতীর্থে স্নানের পর শকুন্তলা যখন অঞ্জলি দিতে যান তখন আংটিটি হাত থেকে খুলে জলে পড়ে গিয়েছিলো। আর এইভাবে আংটি হারিয়ে যায়।

5. ধীবর আংটিটি কোথায় পেয়েছিল ?

উত্তরঃ ধীবর আংটিটি রুই মাছের পেটে পেয়েছিল।

6. প্রিয়ংবদার অনুরোধে ঋষি দুর্বাসা কী বলেছিলেন ?

উত্তরঃ ঋষি দুর্বাসা বলেছিলেন যে, প্রিয়জন শকুন্তলাকে ভুলে গেলেও কোনো স্মৃতিচিহ্ন দেখালে এই অভিশাপ দূর হবে।

7. পতিগৃহে যাবার পর শকুন্তলাকে দেখে দুষ্মন্তের প্রতিক্রিয়া কী হয়েছিল ?

উত্তরঃ পতিগৃহে যাবার পর শকুন্তলাকে দেখে দুষ্মন্ত তাকে চিনতে পারেননি।

8. “আপনারা শান্ত হন।”– বক্তা কাদের শান্ত হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে ?

উত্তরঃ ‘ধীবর-বৃত্তান্ত’ নাট্যাংশের প্রধান চরিত্র ধীবর দুই নগররক্ষীকে শান্ত হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।

9. রাজা দুষ্মন্তের শ্যালকের কাজ কী ছিল ?

উত্তরঃ রাজা দুষ্মন্তের শ্যালকের কাজ ছিল নগর রক্ষা করা।

10. ধীবর সংসার চালাতো কীভাবে ?

উত্তরঃ সে জাল, বড়শি ইত্যাদি নানা উপায়ে মাছ ধরে সংসার চালাত।

11. ধীবর সম্পর্কে রাজার আদেশ কী ছিল ?

উত্তরঃ রাজা দুষ্মন্ত ধীবরকে আংটির মূল্যের সমপরিমাণ অর্থ পরিতোষিকসহ মুক্তি দেবার আদেশ দিয়েছিলেন।

12. আংটিটি পেয়ে রাজার কোন প্রতিক্রিয়া হয়েছিল ?

উত্তরঃ আংটিটি ফিরেছে রাজা দুষ্মন্ত মুহূর্ত কালের জন্য বিহ্বলভাবে চেয়েছিল।

13. মুক্তি পেয়ে ধীবর কী করেছিল ?

উত্তরঃ মুক্তি পেয়ে খুশিতে ধীবর পারিতোষিকের অর্ধেক রক্ষীদের ফুলের দাম হিসাবে দিয়েছিল।

14. দুষ্মন্ত প্রদত্ত আংটিটি শকুন্তলা কীভাবে হারিয়ে ফেলেছিলেন ?

উত্তরঃ শচীতীর্থে স্নানের পরে অঞ্জলি দেওয়ার সময়ে হাত থেকে খুলে জলে পড়ে গিয়ে শকুন্তলার আংটিটি হারিয়ে যায়।

15. ‘এ অবশ্যই গোসাপ-খাওয়া জেলে হবে।’– শ্যালক এরকম সন্দেহ করেছিল কেন ?

উত্তরঃ ধীবরের গা থেকে কাঁচা মাংসের গন্ধ আসছিল বলে রাজার শ্যালক এরকম সন্দেহ করেছিলেন।

16. শকুন্তলার সখির নাম কী ছিল ?

উত্তরঃ শকুন্তলার সখির নাম ছিল প্রিয়ংবদা।

17. “মহারাজ এ সংবাদ শুনে খুব খুশি হবেন।”– কোন সংবাদ শুনে মহারাজের খুশি হবেন ?

উত্তরঃ ধীবরের কাছ থেকে মহারাজের আংটি উদ্ধার করার কথা শুনে মহারাজা দুষ্মন্ত খুশি হবেন বলে রক্ষীরা এই মন্তব্য করেছে।

18. ‘চলরে গাঁটকাটা’– তাকে কোথায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ গাঁটকাটা অর্থাৎ ধীবরকে রাজবাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

19. শকুন্তলার সঙ্গে কার বিবাহ হয়েছিল ?

উত্তরঃ শকুন্তলার সঙ্গে রাজা দুষ্মন্তের বিবাহ হয়েছিল।

20. দুষ্মন্ত শকুন্তলার বিয়ে কোথায় হয়েছিল ?

উত্তরঃ ঋষি কণ্বের আশ্রমে দুষ্মন্ত শকুন্তলার বিয়ে হয়েছিল।

21. ঋষি কণ্বের অবর্তমানে কোন্ ঋষি তার আশ্রমে এসেছিলেন ?

উত্তরঃ ঋষি কণ্বের অবর্তমানে ঋষি দুর্বাসা তার আশ্রমে এসেছিলেন।

22. শকুন্তলাকে কে অভিশাপ দিয়েছিলেন ?

উত্তরঃ ঋষি দুর্বাসা শকুন্তলাকে অভিশাপ দিয়েছিলেন।

23. শকুন্তলাকে দুর্বাসা অভিশাপ দিয়েছিলেন কেন ?

উত্তরঃ স্বামী দুষ্মন্তের চিন্তায় অন্যমনস্ক হয়ে পড়ায় শকুন্তলা দুর্বাসার আগমন সংবাদ বুঝতে পারেননি। এই অবহেলাই অপমানিত হয় দুর্বাসা, শকুন্তলা’কে অভিশাপ দেয়।

24. দুর্বাসা মুনি শকুন্তলাকে কী অভিশাপ দিয়েছিলেন ?

উত্তরঃ দুর্বাসা মুনি শকুন্তলাকে এই বলে অভিশাপ দিয়েছিলেন যে যার চিন্তায় মগ্ন, সে ব্যক্তি শকুন্তলাকে ভুলে যাবেন।

25. দুর্বাসা মুনি কীভাবে তার অভিশাপের প্রভাব দূর হবে বলে জানিয়েছিলেন ?

উত্তরঃ প্রিয়ংবদার বিশেষ অনুরোধে দুর্বাসা মুনি জানিয়েছিলেন, যদি তিনি কোন নিদর্শন তার প্রিয়জনকে দেখাতে পারেন তবে অভিশাপের প্রভাব দূর হবে।

26. জেলে তার পারিতোষিকের অর্ধেক অর্থ কী করতে চেয়েছিল ?

উত্তরঃ রক্ষীরা ধীবরকে মারার আগে যে ফুলের মালা তার গলায় পরাতে চেয়েছিল, রাজার দেওয়া পারিতোষিকের অর্ধেক অর্থ সেই ফুলের দাম হিসেবে ধীবর দিতে চেয়েছিল।

27. ‘আপনারা অনুগ্রহ করে শুনুন।’– বক্তা কোন কথা শোনাতে চেয়েছে ?

উত্তরঃ ধীবর বৃত্তান্ত নাট্যাংশে আলোচ্য উক্তিটির বক্তা ধীবর নগররক্ষীদের কাছে নিজের পরিচয় এবং কীভাবে সে রাজার আংটিটি পেয়েছে সে কথা শোনাতে চেয়েছে।

28. “প্রভু, অনুগৃহীত হলাম।” –কীভাবে বক্তা অনুগৃহীত হয়েছিল ?

উত্তরঃ মহারাজ আংটি ফিরে পেয়ে তার মুল্যের সমপরিমাণ অর্থ ধীবরকে দেওয়ায় সে অনুগৃহীত হয়েছিল।

29. ধীবরের কথামতো বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ কখন নির্দয় হয়ে থাকেন ?

উত্তরঃ ধীবরের কথামতো বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ যজ্ঞীয় পশুবধের সময় নির্দয় হয়ে থাকেন।

30. ধীবরকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ শুনে দ্বিতীয় রক্ষীর আচরণ কেমন ছিল ?

উত্তরঃ ধীবরকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ শুনে দ্বিতীয় রক্ষী হিংসাভরা বক্রোক্তি করেছিল।

গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর (SAQ): ভাগ ০২

  1. ‘ধীবর বৃত্তান্ত’ -নাটকটির উৎস লেখ।

উঃ -নাট্যকার কালিদাসের  ‘অভিজ্ঞান শকুন্তলম’ সংস্কৃত নাটক থেকে ধীবর বৃত্তান্ত অংশটি গৃহীত। এটি বাংলায় তরজমা করেছেন সত্যনারায়ণ চক্রবর্তী।

  1. নাটকটি মূল নাটকের কোন অঙ্ক থেকে নেওয়া ?

উঃ -অভিজ্ঞান ‘শকুন্তলমের’ ষষ্ঠ অঙ্ক থেকে নেওয়া।

  1. শকুন্তলার দুই সখীর নাম কী ?

উঃ -অনুসূয়া ও প্রিয়ংবদা।

  1. শকুন্তলা কোন ঋষির কাছে প্রতিপালিত হয়েছেন ?

উঃ -মহর্ষি কণ্ব।

  1. শকুন্তলাকে কে অভিশাপ দিয়েছিলেন ?

উঃ -ঋষি দুর্বাসা

  1. দুর্বাসা কী অভিশাপ দিয়েছিলেন ?

উঃ -যার চিন্তায় শকুন্তলা মগ্ন হয়ে ঋষি দুর্বাসাকে যথাযথ আপ্যায়ন করেননি সেই ব্যক্তি শকুন্তলাকে ভুলে যাবে।

  1. কার অনুরোধে কীভাবে শকুন্তলা অভিশাপ মুক্ত হয় ?

উঃ -শকুন্তলার সখী প্রিয়ংবদার অনুরোধে শকুন্তলা অভিশাপ মুক্ত হয়।ঋষির কথা মতো , দুষ্মন্ত -শকুন্তলার প্রেমের কোনো স্মৃতিচিহ্ন দেখাতে পারলে শকুন্তলা অভিশাপ মুক্ত হবে।

  1. শকুন্তলার স্মৃতিচিহ্নস্বরূপ আংটিটি কোথায় হারিয়ে যায়?

উঃ -শচীতীর্থে 

  1. রাজার নাম খোদাই করা আংটিটি কে, কীভাবে পায় ?

উঃ -রাজার নাম খোদাই করা আংটিটি প্রথমে ধীবর একটি মাছের পেট থেকে পেয়েছিল। পরবর্তীকালে দুই রক্ষী কর্তৃক রাজশ্যালক এটিকে পায় ও রাজার কাছে পৌঁছে দেয়।

  1. “আপনারা শান্ত হন”-কে, কাদের একথা বলেছে ?

উঃ -চোর হিসেবে অভিযুক্ত জেলেটি (পুরুষ ) নগররক্ষায় নিযুক্ত দুইরক্ষীকে উদ্দেশ্য করে একথা বলেছেন।

  1. “এরকম বলবেন না”-বক্তা কে ? কোন কথার পরিপ্রেক্ষিতে সে কী বলেছে ?

উঃ -বক্তা হল পুরুষ বা জেলেটি।

শ্যালক যখন তাকে অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করতে তার জীবিকাকে ছোটো করতে চেয়েছেন তখন ধীবর একথা বলেছেন। বক্তা জানিয়েছেন যে বৃত্তি নিয়ে মানুষ জন্মেছে সেই বৃত্তি নিন্দনীয় হলে তা পরিত্যাগ করা উচিত নয়। বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ স্বভাবে দয়া পরায়ণ হলেও যজ্ঞীয় পশুবধের সময় নির্দয় হয়ে থাকেন।

  1. “মহারাজ এ সংবাদ শুনে খুশি হবেন”- মহারাজ কে ? কে, কেন একথা বলেছে ?

উঃ -মহারাজ হলেন রাজা দুষ্মন্ত।

নগররক্ষায় নিযুক্ত দুই রক্ষী উপরোক্ত কথাটি বলেছেন। কারন তারা মনে করেছে এই কাজে মহারাজ বুঝতে পারবেন রক্ষীরা তাদের যথাযথ দায়িত্ব পালন করছে। তাই তিনি তার প্রিয় আংটিটি ফিরে পাচ্ছেন।

  1. “সব সত্যি বলে প্রমাণিত হয়েছে”-বক্তা কে ? কোন প্রসঙ্গে একথা বলেছেন ?

উঃ -বক্তা হলেন রাজার শ্যালক।

চোর সন্দেহে নগররক্ষায়িযুক্ত দুই রক্ষী ধীবরকে ধরে আনলে যহারাজার নিকট সেই আংটি ও সংবাদ পরিবেশিত হয়। রাজা সমস্ত কিছু বুঝে ধৃত ধীবরকে নির্দোষ বলে ঘোষণা করেন। শ্যালক এই সংবাদকে সত্য বলে উল্লেখ করেছেন।

  1. তীর্থ থেকে ফিরে এসে মহর্ষি কণ্ব কি করেছিলেন?

উঃ – শকুন্তলাকে পতিগৃহে অর্থাৎ রাজা দুষ্মন্তের কাছে পাঠাবার ব্যবস্থা করেছিলেন।

  1. দুষ্মন্ত প্রদত্ত আংটিটি শকুন্তলার কিভাবে হারিয়ে ফেলেছিলেন?

উঃ – পতিগৃহে যাবার পথে এসো তিথিতে স্নানের পর শকুন্তলা যখন অঞ্জলি দিতে যান তখন আংটিটি হাত থেকে খুলে জলে পড়ে গিয়েছিলো। আর এইভাবে আংটি হারিয়ে যায়।

  1. পতিগৃহে যাবার পর শকুন্তলাকে দেখে দুষ্মন্তের প্রতিক্রিয়া কি হয়েছিল?

উঃ – পতিগৃহে যাবার পর শকুন্তলাকে দেখে দুষ্মন্ত তাকে চিনতে পারেননি।

  1. হাতবাঁধা অবস্থায় এক পুরুষকে সঙ্গে নিয়ে দুই রক্ষীর প্রবেশ।” — পুরুষ টির হাত বাঁধা কেন?

উঃ – পুরুষটির কাছে রাজা দুষ্মন্তের আংটি পাওয়া যাওয়ায় তাকে চোর সন্দেহে হাত বেঁধে নিয়ে আসা হয়।

  1. ধীবরকে কারা ধরে এনেছিল?

উঃ – ধীবর কে নগর রক্ষায় নিযুক্ত রাজশ্যালক এবং দুজন রক্ষী সূচক ও জালুক ধরে নিয়েছিল।

  1. “আপনারা শান্ত হন।”— বক্তা কাদের শান্ত হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে?

উঃ – ‘ধীবর-বৃত্তান্ত’ নাট্যাংশের প্রধান চরিত্র ধীবর দুই নগররক্ষীকে শান্ত হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।

  1. ধীবর আংটিটি কোথায় পেয়েছিল?

উঃ – ধীবর আংটিটি রুই মাছের পেটে থেকে পেয়েছিল।

  1. ধীবর সংসার চালাতো কিভাবে?

উঃ – সে জাল, বরশি ইত্যাদি নানা উপায়ে মাছ ধরে সংসার চালাত।

  1. রাজা দুষ্মন্তের শ্যালকের কাজ কী ছিল?

উঃ – রাজা দুষ্মন্তের শ্যালকের কাজ ছিল নগর রক্ষা করা।

  1. ধীবর সম্পর্কে রাজার আদেশ কি ছিল?

উঃ – রাজা দুষ্মন্ত ধীবর কে আন্টি টির মূল্যের সমপরিমাণ অর্থ পরিতোষিক সহ মুক্তি দেবার আদেশ দিয়েছিলেন।

  1. আংটিটি পেয়ে রাজার কোন প্রতিক্রিয়া হয়েছিল?

উঃ – আংটিটি ফিরেছে রাজা দুষ্মন্ত মুহূর্ত কালের জন্য বিহ্বলভাবে চেয়েছিল।

  1. মুক্তি ও পারিতোষিক পেয়ে ধীবর কি করেছিল?

উঃ – মুক্তি পেয়ে খুশিতে ধীবর পারিতোষিকের অর্ধেক রক্ষীদের ফুলের দাম হিসাবে দিয়েছিল।

  1. প্রিয়ংবদার অনুরোধে ঋষি দুর্বাসা কী বলেছিলেন?

উঃ – ঋষি দুর্বাসা বলেছিলেন যে, প্রিয়জন শকুন্তলাকে ভুলে গেলেও কোনো স্মৃতিচিহ্ন দেখালে এই অভিশাপ দূর হবে।

  1. দুষ্মন্ত প্রদত্ত আংটিটি শকুন্তলা কীভাবে হারিয়ে ফেলেছিলেন?

উঃ – শচীতীর্থে স্নানের পরে অঞ্জলি দেওয়ার সময়ে হাত থেকে খুলে জলে পড়ে গিয়ে শকুন্তলার আংটিটি হারিয়ে যায়।

  1. “এ অবশ্যই গোসাপ-খাওয়া জেলে হবে”। – শ্যালক এ সন্দেহ করেছিল কেন?

উঃ – ধীবরের গা থেকে কাঁচা মাংসের গন্ধ আসছিল বলে রাজার শ্যালক এরকম সন্দেহ করেছিলেন।

29.“মহারাজ এ সংবাদ শুনে খুব খুশি হবেন।” – কোন সংবাদ শুনে মহারাজের খুশি হওয়ার কথা বলা হয়েছে?

উঃ – ধীবরের কাছ থেকে মহারাজের আংটি উদ্ধার করার কথা শুনে মহারাজা দুষ্মন্ত খুশি হবেন বলে রক্ষীরা এই মন্তব্য করেছে।

30.‘চলরে গাঁটকাটা’ – তাকে কোথায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে?

উঃ – গাঁটকাটা অর্থাৎ ধীবরকে রাজবাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

  1. ধীবরকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ শুনে দ্বিতীয় রক্ষীর আচরণ কেমন ছিল?

উঃ – ধীবরকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ শুনে দ্বিতীয় রক্ষী হিংসাভরা বক্রোক্তি করেছিল।

  1. শকুন্তলার সঙ্গে কার বিবাহ হয়েছিল?

উঃ – শকুন্তলার সঙ্গে রাজা দুষ্মন্তের বিবাহ হয়েছিল।

  1. দুষ্মন্ত শকুন্তলার বিয়ে কোথায় হয়েছিল?

উঃ – ঋষি কণ্বের আশ্রমে দুষ্মন্ত শকুন্তলার বিয়ে হয়েছিল।

  1. ঋষি কণ্বের অবর্তমানে কোন ঋষি তার আশ্রমে এসেছিলেন?

উঃ – ঋষি কর্ণের আবর্তমানে ঋষি দুর্বাসা তার আশ্রমে এসেছিলেন।

  1. শকুন্তলাকে কে অভিশাপ দিয়েছিলেন?

উঃ – ঋষি দুর্বাসা শকুন্তলাকে অভিশাপ দিয়েছিলেন।

  1. শকুন্তলাকে দুর্বাসার অভিশাপ দিয়েছিলেন কেন?

উঃ – স্বামী দুষ্মন্তের চিন্তায় অন্যমনস্ক হয়ে পড়ায় শকুন্তলা দুর্বাসার আগমন সংবাদ বুঝতে পারেননি। এই অবহেলাই অপমানিত হয় দুর্বাসা শকুন্তলা’ কে অভিশাপ দেয়।

  1. দুর্বাসা মুনি শকুন্তলাকে কি অভিশাপ দিয়েছিলেন?

উঃ – দুর্বাসা মুনি শকুন্তলাকে এই বলে অভিশাপ দিয়েছিলেন যে যার চিন্তায় মগ্ন সে ব্যক্তি শকুন্তলাকে ভুলে যাবেন।

  1. শকুন্তলার সখির নাম কি ছিল?

উঃ – শকুন্তলার শখের নাম ছিল প্রিয়ংবদা।

  1. দুর্বাসা মুনি কিভাবে তার অভিশাপের প্রভাব দূর হবে বলে জানিয়েছিলেন?

উঃ – প্রিয়ংবদার বিশেষ অনুরোধে দুর্বাসা মুনি জানিয়েছিলেন, যদি তিনি কোন নিদর্শন তার প্রিয়জনকে দেখাতে পারেন তবে অভিশাপের প্রভাব দূর হবে।

40.‘আপনারা অনুগ্রহ করে শুনুন’। – কোন কথা বক্তা শোনাতে চেয়েছে?

উঃ – ধীবর বৃত্তান্ত নাট্যাংশে আলোচ্য উক্তিটির বক্তা ধীবর নগররক্ষীদের কাছে নিজের পরিচয় এবং কীভাবে সে রাজার আংটিটি পেয়েছে সে কথা শোনাতে চেয়েছে।

41.“প্রভু, অনুগৃহীত হলাম।” –কীভাবে বক্তা অনুগৃহীত হয়েছিল?

উঃ – মহারাজ আংটি ফিরে পেয়ে তার মুল্যের সমপরিমাণ অর্থ ধীবরকে দেওয়ায় সে অনুগৃহীত হয়েছিল।

  1. ধীবরের কথামতো বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ কখন নির্দয় হয়ে থাকেন?

উঃ – ধীবরের কথামতো বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ যজ্ঞীয় পশুবধের সময় নির্দয় হয়ে থাকেন।

  1. জেলে তার পারিতোষিকের অর্ধেক অর্থ কী করতে চেয়েছিল?

উঃ – রক্ষীরা ধীবরকে মারার আগে যে ফুলের মালা তার গলায় পরাতে চেয়েছিল, রাজার দেওয়া পারিতোষিকের অর্ধেক অর্থ সেই ফুলের দাম হিসেবে ধীবর দিতে চেয়েছিল।

  1. ধীবর বৃত্তান্ত’ নাট্যাংশে কোন্ কোন্ চরিত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়?

উত্তর: ধীবরবৃত্তান্ত’ নাট্যাংশের চরিত্রগুলি হল—জানুক ও সূচক নামে দুই রক্ষী, নগরপাল রাজশ্যালক এবং ধীবর |

  1. মহষি কম্বের অনুপস্থিতিতে দুষ্মন্ত কী করেছিলেন?

উত্তর: মহর্ষি কম্বের অনুপস্থিতিতে দুষ্মন্ত শকুন্তলাকে বিয়ে করেছিলেন এবং তাঁকে রেখে রাজধানীতে ফিরে গিয়েছিলেন |

  1. শকুন্তলা দুম্মস্তকে আং টি দেখাতে পারেননি কেন?

উত্তর: শচীতীর্থে অঞ্জলি দেওয়ার সময়ে শকুন্তলার আংটি খুলে জলে পড়ে যাওয়ায় শকুন্তলা দুষ্মন্তকেআংটি দেখাতে পারেননি।

  1. রাজসভায় শকুন্তলা অপমানিত হয়েছিলেন কেন?

উত্তর: রাজসভায় দুষ্মন্ত শকুন্তলাকে চিনতে না পারায় শকুন্তলা অপমানিতা হয়েছিলেন।

  1. রাজা দুষ্মন্তের শ্যালকের কাজ কী ছিল?

উত্তর: রাজা দুষ্মন্তের শ্যালকের কাজ ছিল নগর রক্ষা করা।

  1. রক্ষীরা কাকে, কীভাবে সঙ্গে নিয়ে প্রবেশ করেছিল?

উত্তর: পিছনে হাতবাঁধা অবস্থায় এক ধীবরকে সঙ্গে নিয়ে রক্ষীদের প্রবেশ ঘটেছিল।

  1. “আমি একজন জেলে। জেলেটির বাসস্থান কী ছিল?

উত্তর: জেলেটি তার বাসস্থান শক্রাবতারে বলে জানিয়েছিল।

  1. ধীবরের পাওয়া আংটিটি কেমন ছিল?

উত্তর: ধীবরের পাওয়া আংটিটি ছিল মণিখচিত এবং রাজার নাম খোদাই করা।

  1. “শুনুন মহাশয়, এরকম বলবেন না |”—এখানে কী না বলার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: এখানে ধীবরটি রাজার শ্যালককে ধীবরের জীবিকা নিয়ে ব্যঙ্গবিদ্রুপ না করার কথা বলেছে।

  1. ধীবর চরিত্রটি জীবিকা বিষয়ে কী বলেছে?

উত্তর: ধীবরের মতে, যে বৃত্তি নিয়ে মানুষ জন্মেছে তা নিন্দনীয় হলেও তা পরিত্যাগ করা উচিত নয়।

   54. “প্রভু, অনুগৃহীত হলাম।”—কীভাবে বক্তা অনুবৃহীত হয়েছিল?

উত্তর: মহারাজ আংটি ফিরে পেয়ে তার মূল্যের সমপরিমাণ অর্থ ধীবরকে দেওয়ায় সে অনুগৃহীত হয়েছিল।

  1. “মহারাজ এ সংবাদ শুনে খুব খুশি হবেন।’—কোন সংবাদ শুনে মহারাজের খুশি হওয়ার কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ ধীবরের কাছ থেকে মহারাজের আংটি উদ্ধার করার কথা শুনে মহারাজা দুষ্মন্ত খুশি হবেন বলে রক্ষীরা এই মন্তব্য করেছে।

গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর: (৩ নম্বরের)

  1. “.. তখন তপোবনে এলেন ঋষি দুর্বাসা।’-—দুর্বাসার এই আগমনের তাৎপর্য কী?

উত্তর: দুর্বাসা যখন মহর্ষি করে তপােবনে আসেন তখন শকুন্তলা তার স্বামী রাজা দুষ্মন্তের চিন্তায় অন্যমনস্ক ছিলেন। ফলে দুর্বাসার উপস্থিতি তিনি বুঝতে পারেননি। শকুন্তলার এরকম আচরণে ঋষি অপমানিত বােধ করেন। তিনি তাকে অভিশাপ দেন যে, যাঁর চিন্তায় শকুন্তলা মগ্ন হয়ে আছেন, সেই ব্যক্তিই একদিন শকুন্তলাকে ভুলে যাবেন। শেষপর্যন্ত অবশ্য শকুন্তলার সখী প্রিয়ংবদার অনুরােধে ঋষি দুর্বাসা বলেন যে, রাজার দেওয়া কোনাে স্মৃতিচিহ্ন রাজাকে দেখাতে পারলে তবেই এই অভিশাপের প্রভাব দূর হবে।

  1. “শকুন্তলা অপমানিত হলেন রাজসভায়।”—শকুন্তলার এই অপমানের কারণ কী ছিল?

উত্তর: দুষ্মন্ত যখন শকুন্তলাকে বিবাহ করে তার কাছ থেকে বিদায় নিয়েছিলেন তখন তাকে একটি আংটি পরিয়ে দিয়েছিলেন | কিন্তু অনেক দিন রাজা শকুন্তলার খোজ না নেওয়ায় মহর্ষি কঘের উদ্যোগে শকুন্তলাকে স্বামীর ঘরে পাঠানাের আয়ােজন করা হয়। শকুন্তলার সখীরা মনে করে যে, দুর্বাসার অভিশাপকে ব্যর্থ করার জন্য এই আংটিটিই হবে স্মারকচিহ্ন| কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত যাওয়ার পথে স্নানের সময় শকুন্তলার হাত থেকে আংটিটি খুলে জলে পড়ে যায়। ফলে দুষ্মন্তের রাজসভায় শকুন্তলা কোনাে স্মারকচিহ দেখাতে না পারায় অপমানিত হন।

  1. “কীভাবে এই আংটি আমার কাছে এল—তা বললাম।”–বক্তা আংটি পাওয়ার প্রসঙ্গে কী বলেছিল?

অথবা,

“ঘটনাক্রমে সেই আংটি পেল এক ধীবর …”-কোন্ ঘটনাক্রমে সে আংটিটি পেয়েছিল?

উত্তর: দুমন্তের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য যাত্রাপথে শচীতীর্থে অঞ্জলি দেওয়ার সময় শকুন্তলার হাত থেকে দুষ্মন্তের দেওয়া আংটিটি জলে পড়ে যায়। ঘটনাক্রমে রাজশ্যালক ও রক্ষীরা সেই আংটিটি পায় এক ধীবরের কাছে

ধীবরের কাছে রাজার নাম খোদাই করা রত্নখচিত আংটিটি পেয়ে রক্ষীরা তাকে চোর সাব্যস্ত করে। তখন ধীবর নিজের পেশাগত পরিচয় দেয় এবং বলে যে, একদিন একটা রুই মাছ ধরার পরে সে যখন মাছটি টুকরো টুকরো করে কাটছিলো তখন তার পেটের মধ্যে মণিমুক্তাখচিত এই আংটিটি সে দেখতে পায়। তারপরে সেই আংটিটি বিক্রি করার জন্য যখন সে লোককে দেখাচ্ছিল, তখনই রক্ষীরা তাকে ধরেছে।

  1. “সুতরাং রাজবাড়িতেই যাই’—কে, কেন রাজবাড়িতে যেতে চেয়েছেন?

উত্তর: রাজশ্যালক রাজবাড়িতে যেতে চেয়েছেন} ধীবর রাজরক্ষীদের জানিয়েছিল যে রাজার নাম খােদাই করা রত্নখচিত আংটিটি সে রুই মাছের পেট থেকে পেয়েছে তার কথার সত্যতা যাচাই করার জন্যই রাজশ্যালক রাজবাড়িতে যেতে চেয়েছেন। ধীবরকে নিয়ে সদর দরজায় রক্ষীদের সাবধানে অপেক্ষা করতে বলে রাজশ্যালক জানান যে, আংটি কীভাবে পাওয়া গেল সেসব কথা মহারাজকে জানিয়ে তার আদেশ নিয়ে তিনি ফিরে আসবেন।

  1. “মহারাজের হুকুমনামা হাতে নিয়ে এদিকে আসছেন।”—— “হুকুমনামা” কী? সে মুকুমনামার কী নির্দেশ ছিল?

উত্তর:|: এককথায় “হুকুমনামা” বলতে আদেশপত্র বোঝায়।

ধীবরবৃত্তান্ত’ নাট্যাংশে রক্ষীরা প্রত্যাশা করেছিল যে মহারাজের সুকুমনামায় ধীবরকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার নির্দেশ থাকবে। কিন্তু রাজশ্যালক আসার পরে দেখা যায় হুকুমনামায় জেলেকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

  1. “সূচক, এই জেলেকে ছেড়ে দাও।”—জেলেকে ছেড়ে দেওয়া হল কেন?

 উত্তর: ‘ধীবরবৃত্তান্ত’ নাট্যাংশে ধীবরের কাছে রাজার নাম খোদাই করা রত্নখচিত আংটিটি পাওয়ার পরে রাজশ্যালক এবং রক্ষীরা তাকে চোর সাব্যস্ত করে| আংটি পাওয়ার বিষয়ে ধীবরের কোন কথাই তারা শোনে না | কিন্তু রাজশ্যালক রাজাকে বিষয়টি জানালে রাজা বলেন যে, আংটি বিষয়ে ধীবর যা বলেছে সবই সত্য। সে কারণে রাজা ধীবরকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

  1. “মুহূর্তের জন্য রাজা বিহ্বলভাবে চেয়ে রইলেন।”—কোন্ সময়ে রাজার এমন বিহ্বল অবস্থা হয়েছিল?

উত্তর: ‘ধীবরবৃত্তান্ত’ নাট্যাংশে ধীবরের কাছে রাজার নাম খোদাই করা রত্নখচিত আংটিটি পেয়ে রাজশ্যালক এবং রক্ষীরা ধীবরকেই চোর সাব্যস্ত করে এবং রাজশ্যালক পুরো বিষয়টি রাজাকে জানানোর জন্য যায়। আংটির দিকে তাকিয়ে রাজার কোন প্রিয়জনের কথা মনে পড়ে যাওয়ায়, স্বভাবে গম্ভীর প্রকৃতির হলেও ওই মুহূর্তে তিনি বিহ্বল হয়ে পড়েন।

  1. তখন তপোবনে এলেন ঋষি দুর্বাসা। — কখন দুর্বাসার আগমন ঘটে? এর ফলে কী ঘটেছিল?

দুর্বাসার আগমনকাল – যখন শকুন্তলা রাজা দুষ্মন্তের চিন্তায় অন্যমনস্ক ছিলেন দুর্বাসা তখন মহর্ষি কণ্বের তপোবনে আসেন।

উদ্দিষ্ট ঘটনার পরিণতি – অন্যমনস্ক শকুন্তলা দুর্বাসার উপস্থিতি বুঝতে পারেননি। ফলে ঋষি অপমানিত বোধ করেন এবং অভিশাপ দেন যে, যাঁর চিন্তায় শকুন্তলা মগ্ন হয়ে আছেন, সেই ব্যক্তিই একদিন শকুন্তলাকে ভুলে যাবেন। শেষপর্যন্ত অবশ্য শকুন্তলার সখী প্রিয়ংবদার অনুরোধে ঋষি দুর্বাসা বলেন যে, রাজার দেওয়া কোনো স্মৃতিচিহ্ন রাজাকে দেখাতে পারলে তবেই এই অভিশাপের প্রভাব দূর হবে।

  1. যার চিন্তায় সে মগ্ন, সেই ব্যক্তি শকুন্তলাকে ভুলে যাবেন — বক্তা কে? তাঁর এমন উক্তির কারণ কী?

বক্তার পরিচয় – উল্লিখিত মন্তব্যটির বক্তা ঋষি দুর্বাসা।

উদ্ধৃত উক্তির কারণ – মহর্ষি কণ্বের তপোবনে রাজা দুষ্মন্ত শকুন্তলাকে বিয়ে করে রাজধানীতে ফিরে যান? এরপরে দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও রাজার কোনো দূত আসে না শকুন্তলার খোঁজ নিতে। স্বামীর চিন্তায় শকুন্তলা অন্যমনস্কা হয়ে থাকেন। এইসময়েই সেখানে আসেন ঋষি দুর্বাসা। কিন্তু শকুন্তলা আনায় থাকায় দুর্বাসার উপস্থিতি টের পান না। তখন অপমানিত ঋষি অভিশাপ দিয়ে মন্তব্যটি করেন।

  1. তবে কি তোকে সদ ব্রাক্ষ্মণ বিবেচনা করে রাজা এটা দান করেছেন? — বক্তা কে? মন্তব্যটির কারণ ব্যাখ্যা করো।

বক্তার পরিচয় – উল্লিখিত মন্তব্যটির বক্তা প্রথম রক্ষী।

মন্তব্যের কারণ – ধীবর রাজার আংটি চুরি করার কথা অস্বীকার করলে প্রথম রক্ষী আলোচ্য মন্তব্যটি করে। ধীবরের কাছে রাজার নাম খোদাই করা মণিখচিত আংটিটি পেয়ে রাজশ্যালক এবং রক্ষীরা নিশ্চিত হয়ে যান যে ধীবরই আংটিটি চুরি করেছে। নীচু জাতের মানুষ হওয়ায় অনায়াসেই তাকে চোর সন্দেহ করা হয়। কিন্তু ধীবর সেই চুরির কথা অস্বীকার করলে প্রথম রক্ষী তাকে ব্যঙ্গ করে প্রশ্নোদ্ধৃত মন্তব্যটি করে।

  1. তা তোর জীবিকা বেশ পবিত্র বলতে হয় দেখছি। — কে, কোন্ প্রসঙ্গে মন্তব্যটি করেছে?

বক্তা – ধীবর-বৃত্তান্ত নাট্যাংশ থেকে নেওয়া আলোচ্য মন্তব্যটি করেছেন রাজশ্যালক।

প্রসঙ্গ – ধীবরের কাছে রাজার নাম খোদাই করা মণিখচিত আংটিটি পেয়ে দুই রক্ষী তাকে চোর সাব্যস্ত করে। আত্মপক্ষ সমর্থনে ধীবর নিজের কথা বলতে চাইলেও রক্ষীরা তাকে ব্যঙ্গবিদ্রুপ করে। ধীবর জানায় যে, সে একজন জেলে। জাল, বড়শি ইত্যাদির সাহায্যে মাছ ধরে সে তার সংসার চালায়। ধীবরের এই জবাব শুনে ব্যঙ্গের সুরে রাজার শ্যালক ধীবরের উদ্দেশে উদ্দিষ্ট মন্তব্যটি করেন।

  1. তা তোর জীবিকা বেশ পবিত্র বলতে হয় দেখেছি – বক্তা কাকে উদ্দেশ্য করে কথাটি বলেছেন? ওই ব্যক্তির প্রতিক্রিয়া কী ছিল?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – কালিদাসের ধীবর-বৃত্তান্ত থেকে নেওয়া নাট্যদৃশ্যে রাজশ্যালক ধীবরকে উদ্দেশ্য করে প্রশ্নোদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছেন।

উদ্দিষ্ট ব্যক্তির প্রতিক্রিয়া – ধীবরের পেশা নিয়ে রাজশ্যালক ব্যঙ্গ করলে ধীবর তার তীব্র প্রতিবাদ করে। সে এরকম কথা বলতে রাজশ্যালককে নিষেধ করে এবং আরও বলে মানুষ যে বৃত্তি নিয়ে জন্মেছে তা নিন্দনীয় হলেও কখনও পরিত্যাগ করা উচিত নয়। বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণের উদাহরণ দিয়ে সে জানায় স্বভাবে দায়পরবশ হলেও যজ্ঞের পশুবধের সময় নির্দয় হন। অর্থাৎ কোনো পেশাই সম্পূর্ণভাবে ত্রুটিহীন নয়।

  1. কি যা – তা অনুগ্রহ — বক্তা কে? এরকম মন্তব্যের কারণ কী?

বক্তা – কালিদাসের ধীবর-বৃত্তান্ত নাট্যদৃশ্যে উল্লিখিত মন্তব্যটির বক্তা প্রথম রক্ষী সূচক।

মন্তব্যের কারণ – সূচক এবং জানুক প্রত্যাশা করেছিল যে রাজার কাছে আংটি বিষয়ে ধীবরের যাবতীয় বক্তব্য মিথ্যা বলে প্রমাণিত হবে এবং তারা ধীবরকে মৃত্যুদণ্ড দেবে। কিন্তু ধীবরের সব কথা সত্য বলে স্বীকৃতি পায়। শুধু তা-ই নয়, রাজা তাকে আংটির সমপরিমাণ অর্থ পুরস্কার দেন। এতে রক্ষীরা হতাশ হয়ে মন্তব্যটি করে।

গুরুত্বপূর্ণ বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর:

  1. ‘সেই আংটি দেখে মহারাজের কোন প্রিয়জনের কথা মনে পড়েছে। স্বভাবত গম্ভীৱ প্রকৃতির হলেও মুহূর্তের জন্য রাজা বিহুলভাবে চেয়ে রইলেন। -কার উক্তি? প্রসঙ্গ উল্লেখসহ উধৃতাংশের তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও।

উত্তর : উদ্ধৃতিটি রাজশ্যালকের উক্তি।

তাৎপর্য : ধীবর সততা ও সত্যবাদিতার জন্য প্রচুর অর্থ পুরস্কার পেয়েছে। প্রথম রক্ষী সূচক কিন্তু পুরস্কার পাওয়ার এই কারণ বুঝতেই পারেনি। সে ভেবেছে রাজামশায়ের কাছে আংটিটা খুব প্রিয়। সেজন্য তিনি খুশি হয়ে অত টাকা ধীবরকে দিয়েছেন। হারানাে দামি আংটিটা পাওয়ায় তাঁর খুব আনন্দ হয়েছে। রাজার শ্যালক কিন্তু প্রথম রক্ষীর কথা সমর্থন করেন না। কারণ তিনি স্বচক্ষে আংটি পাওয়ার পরে রাজামশায়ের প্রতিক্রিয়া দেখে এসেছেন। রাজশ্যালক বলেন যে, আংটিটায় শুধুমাত্র দামি মণিমুক্তা বসানাে আছে বলেই রাজামশায়ের কাছে মূল্যবান নয়। রাজামশায়কে দেখে রাজশ্যালকের তাই মনে হয়েছে। তিনি লক্ষ করেছেন, আংটিটা দেখে কোনাে প্রিয়জনের কথা রাজামশায়ের মনে পড়েছে। প্রকৃতপক্ষে তাই। এই আংটিটি তপােবনের আশ্রম থেকে বিদায়ের সময় তাঁর স্মৃতিচিহ্নস্বরূপ শকুন্তলার আঙুলে পরিয়ে দিয়ে এসেছিলেন। শকুন্তলার কাছে এটি ছিল রাজনিদর্শন, অভিজ্ঞান তথা স্মারকচিহ্ন। আংটি দেখে দুর্বাসার অভিশাপের প্রভাব দূর হয়ে যায়। রাজা দুষ্মন্ত শকুন্তলাকে স্মরণ করতে পারেন। রাজশ্যালক এ কথা জানবেন কী করে? তা ছাড়া রাজা গম্ভীর প্রকৃতির মানুষ। কিন্তু রাজশ্যালক লক্ষ করেন, রাজা আংটি দেখার পর মুহূর্তের জন্য হলেও কেমন যেন অভিভূত হওয়ার ভালে তাকিয়ে থাকলেন। ওই অভিভূত বা মুগ্ধতার ভাব কাকে ঘিরে রাজশ্যালকের তাও অজানা।

  1. মহাৱাজ দুমন্ত প্রেরিত ধীবৱেৱ পারিতোষিক কত? ধীবৱেৱ অর্থপ্রাপ্তিকে দুই ব্ৰক্ষী কীভাবে নেন ও রাজশ্যালকই বা বিষয়টি কীভাবে গ্রহণ কৱেন?

উত্তর: মহারাজ দুষ্মন্ত প্রেরিত ধীবরের পারিতোষিকের পরিমাণ আংটির সমমূল্য অর্থ।

দুই ব্ৰক্ষী ও রাজশ্যালকের প্রতিক্রিয়া :

 অর্থপ্রাপ্তিকে দুই রক্ষী সহজ মনে মেনে নিতে পারেননি। টাকা পেয়ে ধীবর সবিনয়ে বলেছে সে অনুগৃহীত। তাতে প্রথম রক্ষী সূচকের প্রতিক্রিয়া, এ কি যা-তা অনুগ্রহ! এ যে শূল থেকে নামিয়ে একেবারে হাতির পিঠে চড়িয়ে দেওয়া হলো? মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যে মানুষটাকে শূলে বসানোর কথা, তাকে কিনা রাজামশায় অনুগ্রহ করে শূল থেকে নামিয়ে সম্মানীয় রাজঅতিথির মতো হাতির পিঠে চড়িয়ে দিলেন পুরস্কারের সম্মান দিয়ে।

 রাজার আদেশ অমান্য করা রাজরক্ষীর ক্ষমতার বাইরে। কিন্তু তার ভিতরের অসন্তোষ তাঁর কথার মধ্যে প্রকাশিত। দ্বিতীয় রক্ষী জানুকের প্রতিক্রিয়া হলো, যে পরিমাণ পারিতোষিক দেখছি—তাতেই বোঝাই যাচ্ছে সেই আংটিটা রাজার (খুব) প্রিয় ছিল। এই কথাতে দ্বিতীয় রক্ষীর সরাসরি অসন্তোষ প্রকাশিত না হলেও রাজামশায়ের পারিতোষিক দানের মধ্যে অনুগ্রহের কারণ বিশ্লেষণের চেষ্টা আছে। আংটির সমমূল্যের অর্থদান রাজামশায়ের অতিপ্রিয় জিনিস ফিরে পাওয়ার আনন্দ-উচ্ছাসের প্রকাশ। তাতেই ধীবরের প্রতি তাঁর ওই অপ্রত্যাশিত অনুগ্রহ। নইলে হয়তো সুবিচারই হতো ধীবরের শাস্তির ব্যাপারে।

 রক্ষীরা যে ধীবরের পারিতোষিক পাওয়াতে ঈর্ষান্বিত তার প্রকাশ ঘটে দ্বিতীয় রক্ষী জানুকের উক্তি ও আচরণে। রাজশ্যালক রাজার আংটি রাজার হাতে ফিরিয়ে দিয়ে রাজার সেবা করেননি, করেছেন ধীবরের । এ কথা বলেই জানুক ক্ষান্ত হননি। জেলেকে হিংসাভরা দৃষ্টিতে দেখেছেন। তাঁর এই আচরণে শুধু তাঁর নয় দুই রক্ষীরই একইসঙ্গে হতাশা ও ঈর্ষান্বিত মনোভাবের প্রকাশ ঘটেছে।

রাজশ্যালক কিন্তু ধীবরের সততা ও সত্যবাদিতা গুণে মুগ্ধ হয়ে উদার চিত্তে ও সাগ্রহে তাকে তার একজন বিশিষ্ট প্রিয় বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেছেন।

  1. সততা ও সত্যবাদিতা শেষাবধি জয়ী হয়েছে-‘ধীবৱ-বৃত্তান্ত’ নাট্যকাহিনি অবলম্বনে আলোচনা করো।

উত্তর : মানবিক গুণ : সততা, সত্যবাদিতা এগুলি মানবিক মহৎ গুণ। এইসব গুণের বিকাশ উচ্চবর্ণীয়, অভিজাত, শিক্ষিত ও সমাজে গণ্যমান্য মানুষের মধ্যে হয়, নিম্নবর্ণীয় ও অশিক্ষিত মানুষের মধ্যে হয় না, তা নয়। উচ্চ-নীচ, অভিজাত- অনভিজাত, শিক্ষিত-অশিক্ষিত কিংবা সমাজে গণ্যমান্য বলে খ্যাতঅখ্যাত নির্বিশেষে যে-কোন মানুষের মধ্যে বিকশিত হতে পারে, যার মধ্যে মানবিক বোধ আছে, মানবিক গুণের উপাদান আছে। এরকম একটি চরিত্র হলো ধীবর-বৃত্তান্ত নাট্যাংশের মূল চরিত্র ধীবর।

মানবিক গুণেৱ প্রকাশ : ধীবরের বাড়ি শক্রাবতারে। জাতিতে জেলে। জাল, বড়শি ইত্যাদি দিয়ে মাছ ধরা তার জীবিকা। তার জালে ধরা রুইমাছের পেট থেকে সে মহারাজ দুষ্মন্তের নাম খোদাই করা মণিমুক্তোখচিত মূল্যবান আংটি পায়। আংটি বিক্রি করার জন্য নগরের মধ্যে লোককে দেখানোর সময় রাজরক্ষীদের হাতে বন্দি হয়। তারা তাকে চোর ঠাউরে পীড়ন-তাড়ন শুরু করে। নগররক্ষক রাজশ্যালকের কৃপায় ধীবর নিজের পরিচয় ও আংটি পাওয়ার বৃত্তান্ত, যা প্রকৃত ঘটনা, তা অকপটে প্রকাশ করে। এর মধ্যে তার সৎ প্রকৃতি ও সত্যবাদিতা গুণের পরিচয় পাওয়া যায়।

  1. ‘এখন থেকে তুমি আমার একজন বিশিষ্ট প্রিয় বন্ধু হলে।’- কাৱা পৱম্পৱেৱ বন্ধু হয়েছে? এমন বন্ধুত্বের কারণ কী?

উত্তর; ধীবর ও রাজশ্যালক পরস্পরের বন্ধু হয়েছে।

ধীবরের বৃত্তি আমাদের অনুদার দৃষ্টিতে নিকৃষ্ট বলে মনে হয়। তাদের বৃত্তিকে আমরা ঘৃণার চোখে দেখি। ধীবরের বৃত্তির কথা শুনে রাজশ্যালক ব্যঙ্গের হাসি হেসে বলেছিলেন, ‘তা তাের জীবিকা বেশ পবিত্র বলতে হয় দেখছি। কিন্তু ধীবর-বৃত্তান্ত’ নাট্যদৃশ্যের ধীবরটি নিকৃষ্ট পেশার মানুষ হয়েও চরিত্র-গুণে মহৎ ও অনেক বড়াে মাপের মানুষ। সে সহজ সরল, চতুর ও ধান্দাবাজ নয়, লোভী নয়, স্পষ্ট সত্যবাদী মানুষ। রাজ-আংটি পাওয়া নিয়ে সে সত্য ঘটনা বলেছে অকপটচিত্তে। তাতে কোনরকম চাতুর্য নেই। তার এসব মহৎ চরিত্র গুণে মুগ্ধ হয়েছেন রাজশ্যালক।

  1. ‘সখীৱা মনে করলেন সেই আংটিই হবে ভবিষ্যতের স্মারকচিহ্ন।—সখীৱা কারা? সেই আংটি বলতে কোন্ আংটি? ‘ভবিষ্যতের স্মাৱকচিহ্ন’ হবে সখীৱা এ কথা ভাবলেন কেন?

 উত্তর: সখীরা হলেন মহর্ষি কম্বের পালিতা কন্যা শকুন্তলার দুই প্রিয় সখী অনসূয়া ও প্রিয়ংবদা।

সেই আংটি হলো তপোবন থেকে বিদায়কালে মহারাজ দুষ্মন্ত শকুন্তলার আঙুলে যে আংটি পরিয়ে গিয়েছিলেন সেই আংটি।

ভবিষ্যতের স্মারকচিহ্ন : অনসূয়া ও প্রিয়ংবদা জানেন ঋষি দুর্বাসার অভিশাপের কথা। ঋষির অভিশাপ অভ্রান্ত । সেজন্য সখীরা শকুন্তলার ভবিষ্যৎ নিয়ে খুবই শঙ্কিত হয়েছিলেন। বিশেষত প্রিয়ংবদা অভিশাপ ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য দুর্বাসাকে অনুনয় করেন। দুর্বাসা কিছুটা প্রসন্ন হয়ে অভিশাপ খণ্ডনের উপায় বাতলেছিলেন। বলেছিলেন যে, মহারাজের দেওয়া কোন নিদর্শন দেখাতে পারলে তা স্মারকচিহ্নের কাজ করবে। স্মারকচিহ্ন অভিশাপের প্রভাব থেকে মহারাজকে মুক্ত করবে। কাজেই শকুন্তলা ও মহারাজ দুষ্মন্তের ভবিষ্যৎ জীবনে ওই অঙ্গরীয় বিশেষ ভূমিকা নেবে। সেই কারণে সখীরা শকুন্তলাকে মহারাজ দুষ্মন্তের দেওয়া আংটিটি ভবিষ্যতের স্মারকচিহ্ন বলে মনে করেছেন।

  1. ‘ধীবর বৃত্তান্ত’ নাটকের প্রেক্ষাপটটি লেখ।

উঃ -মহর্ষি কন্বের তপোবনে আশ্রিতা হয়ে শকুন্তলাকে গন্ধব মতে বিবাহ করে রাজধানীতে ফিরে যান। দীর্ঘদিন দুষ্মন্ত-শকুন্তলা যোগাযোগ না থাকায় উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেন শকুন্তলা। এই অবস্থায় ঋষি দুর্বাসা কন্বের তপোবনে এলে যথাযথ আপ্যায়ন থেকে বঞ্চিত হন ঋষি দুর্বাসা। ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি অভিশাপ দেন শকুন্তলাকে যে , যার চিন্তায় সে মগ্ন সে তাকে ভুলে যাবে। শকুন্তলার এই দুঃসময়ে সখী প্রিয়ংবদার অনুরোধে ঋষি দুর্বাসা বলেন -যদি শকুন্তলা তাদের প্রেমের কোনো স্মৃতি দেখাতে পারে তাহলে শকুন্তলাকে রাজা চিনতে পারে। তাই কন্বের পরামর্শে শকুন্তলা সেই স্মৃতিচিহ্ন নিয়ে যাওয়ার পথে রাজধানীতে অঞ্জলি দেওয়ার সময় আংটি হারিয়ে ফেলে এবং রাজসভায় অপমানিত হয়ে আশ্রমে ফিরে আসেন।

  1. ‘ধীবর বৃত্তান্ত’ নাটকের ধীবরের চরিত্রটি আলোচনা করো।

উঃ – ‘ধীবর বৃত্তান্ত’ নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র ধীবর। এই নাটকে ধীবরের চরিত্রের যে বৈশিষ্ট্যগুলি পাওয়া যায় সেগুলি আলোচনা করা হল –

1) সরলতা :-ধীবর চরিত্রে প্রধান বিশিষ্ট্য হল তার সরলতা। নগররক্ষীরা তাকে চোর সন্দেহে ধরলেন সে সরলভাবে বলে ওঠে যে সে চুরি করেনি। মাছ ধরতে গিয়ে মাছের পেট থেকে সে এই আংটি পেয়েছে। সত্য কথাকে সে সরলভাবে প্রকাশ করেছে

2) শ্রদ্ধাশীলতা :-ধীবর চরিত্রটি নাটকের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকলের সঙ্গে শ্রদ্ধাশীল ভাবেই আচরণ করেছে ও কথা বলেছে। যেমন -”অনুগ্রহ করে শুনুন, মারতে হয় মারুন  ছেড়ে দিতে হয় ছেড়ে দিন।” ইত্যাদি ।

3) পেশার প্রতি শ্রদ্ধা :-ধীবরের পেশার প্রসঙ্গে যখন রাজশ্যালক, সূচক, জানুক প্রমুখেরা না জেনে অপমানজনক মন্তব্য করেছে। তখন ধীবর জানায় পেশা যতই নিন্দনীয় হোক না কেন তাকে পরিত্যাগ করা উচিত নয়। উদাহরণস্বরূপ সে বলেছে – ব্রাহ্মণ স্বভাবে দয়াপরায়ন হলেও যজ্ঞীয় পশুবধের সময় নির্দয় হয়ে থাকেন। এই মন্তব্যগুলি তার কর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধকে প্রকাশ করে।

4)সমাজ সচেতন :-ধীবর বুঝতে পেরেছে সমাজের উচচ শ্রেণীর শাসকের প্রতি বিরুদ্ধ আচরণ করলে তার পরিনাম ভালো হবে না। তাই রাজশ্যালক ও সঙ্গীদের সাথে সচেতনভাবেই কথা বলেছে।

5)সংসারের প্রতি দায়বদ্ধতা :সংসারের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকায় সে রাজশ্যালককে জানিয়েছে এভাবে আটক রাখায় অর্থ সংস্থান এর অভাবে আজ তার সংসার চলবে না। এই দায়বদ্ধতা বুঝতে পেরেই মহারাজ তাকে আংটির মূল্যের সমপরিমাণ অর্থ দিয়েধীবর চরিত্রের মধ্যে উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলি যথাযথ প্রকাশ পেয়ে চরিত্রটি আমাদের কাছে বাস্তব হয়ে উঠেছে। তার চারিত্রিক ইতিবাচকদিকগুলি শেষ পর্যন্ত তাকে রাজার পারিতোষিক লাভে এবং রাজশ্যালকের সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গঠনে সহায়তা করেছে।

  1. মুহূর্তের জন্য রাজা বিহ্বলভাবে চেয়ে রইলেন।” — কোন্ সময়ে রাজার এমন বিহ্বল অবস্থা হয়েছিল?

উঃ ‘ধীবরবৃত্তান্ত’ নাট্যাংশে ধীবরের কাছে রাজার নাম খোদাই করা রত্নখচিত আংটিটি পেয়ে রাজশ্যালক এবং রক্ষীরা ধীবরকেই চোর সাব্যস্ত করে এবং রাজশ্যালক পুরো বিষয়টি রাজাকে জানানোর জন্য যায়। কিন্তু আংটি সম্পর্কে ধীবরের বলা কথার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য রাজার কাছে গেলে ধীবরের সব কথা সত্য বলে প্রমাণিত হয়। আংটির দিকে তাকিয়ে রাজার কোনো প্রিয়জনের কথা মনে পড়ে যাওয়ায় স্বভাবে গম্ভীর প্রকৃতির হলেও ওই মুহূর্তে তিনি বিহ্বল হয়ে পড়েন।

    9.“যার চিন্তায় সে মগ্ন, সেই ব্যক্তি শকুন্তলাকে ভুলে যাবেন”- বক্তা কে? তাঁর এমন উক্তির কারণ কী?

উঃ আলোচ্য উক্তিটির বক্তা ঋষি দুর্বাসা।

আলোচ্য উক্তিটি ‘ধীবর বৃত্তান্ত’ নাট্যাংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। নাট্যাংশের পূর্বকথা থেকে আমরা জানতে পারি যে, রাজা দুষ্মন্ত কণ্ব ঋষির আশ্রমে, শকুন্তলাকে বিবাহ করেন এবং রাজধানীতে ফিরে যান। দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও রাজা দুষ্মন্ত ফিরে আসেন না। একদিন শকুন্তলা স্বামীর দুশ্চিন্তায় মগ্ন ছিলেন, সেই সময় ঋষি দুর্বাসা, কণ্ব মুনির আশ্রমে উপস্থিত হন। যথাযথ আপ্যায়ন না পেয়ে অপমানিত ঋষি দুর্বাসা শকুন্তলাকে অভিশাপ দেন যে, শকুন্তলা যার চিন্তায় মগ্ন, সেই ব্যাক্তি শকুন্তলাকে ভুলে যাবেন।

   10.“তবে কি তোকে সদ ব্রাহ্মন বিবেচনা করে রাজা এটা দান করেছেন?”- বক্তা কে? মন্তব্যটির কারণ ব্যাখ্যা করো।

উঃ আলোচ্য মন্তব্যটি ‘ধীবর বৃত্তান্ত’ নাট্যাংশের অন্তর্গত, মন্তব্যটির বক্তা দুই রক্ষীর মধ্যে একজনের।

নাট্যাংশে আমরা জানতে পারি যে, রাজার নাম খোদাই করা, মণিখচিত একটি দুর্মূল্য আংটি, একজন গরীব – সাধারণ ধীবরের কাছে দেখে নগর রক্ষায় নিযুক্ত রাজ-শ্যালক এবং দুই রক্ষী ঐ জনৈক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। ধীবর বারংবার বলে যে সে ঐ আংটি চুরি করেনি। ধীবরের বক্তব্য শুনে, রাজ রক্ষীদের একজন ব্যাঙ্গার্থে ধীবরকে আলোচ্য মন্তব্যটি করেন।

   11.“সূচক এই জেলেকে ছেড়ে দাও।”- কে কথাটি বলেছেন? জেলেকে ছেড়ে দেওয়া হল কেন?

উঃ ‘ধীবর বৃত্তান্ত’ নাট্যাংশের চরিত্র ‘রাজ-শ্যালক’, দুই রক্ষীর অন্যতম এক রক্ষী সূচককে এই কথা বলেছেন।

ধীবরের কাছে মহামুল্যবান আংটি দেখে নগররক্ষক ‘রাজ-শ্যালক’ ধীবরকে গ্রেফতার করেন। ঐ আংটির বিষয়ে জানার জন্য তিনি রাজার কাছে যান। ঋষি দুর্বাসার অভিশাপ অনুযায়ী, ‘নিদর্শন’ দেখে রাজার পূর্বকথা মনে পড়ে যায় এবং তিনি রাজশ্যালককে ঐ আংটির বিষয়ে বলেন এবং ধীবরকে পুরস্কৃত করার আদেশ দেন। রাজসভা থেকে ফিরে এসে ‘রাজ-শ্যালক’ ধীবরের কোন অপরাধ নেই তা বুঝে তাকে ছেড়ে দেবার নির্দেশ দেয়।

   12.“স্বভাবত গম্ভীর প্রকৃতির হলেও মুহূর্তের জন্য রাজা বিহ্বলভাবে চেয়ে রইলেন।” – রাজা তার গম্ভীর প্রকৃতি ছেড়ে কখন, কেন মুহূর্তের জন্য বিহ্বল হয়েছিলেন?

উঃ আলোচ্য মন্তব্যটি ‘ধীবর বৃত্তান্ত’ নাট্যাংশ থেকে নেওয়া হয়েছে, রাজ-শ্যালক যখন রাজা দুষ্মন্তকে তাঁর আংটি দেখিয়েছিলেন তখন গম্ভীর প্রকৃতির রাজা কিছু মুহূর্তের জন্য বিহ্বলভাবে চেয়েছিলেন।

নাট্যাংশের পূর্বকথা থেকে আমরা জানতে পারি যে ঋষি দুর্বাসার অভিশাপে রাজা দুষ্মন্ত তাঁর বিবাহিত স্ত্রী শকুন্তলাকে ভুলে গিয়েছিলেন। ঋষির কথামত রাজার পূর্ব স্মৃতি মনে পড়ার একমাত্র উপায় ছিল পূর্বের কোন নিদর্শন দেখা। রাজা শকুন্তলাকে একটি আংটি দিয়েছিলেন, যা দেখানোর জন্য শকুন্তলা রাজার কাছে যান। কিন্তু পথে সেই আংটি হারিয়ে যায় এবং কালক্রমে ঐ আংটি ধীবরের কাছে পৌঁছায়। ধীবরের কাছ থেকে নিয়ে ঐ আংটিটি রাজ-শ্যালক রাজাকে দেখান, এর ফলে রাজার সকল পূর্ব স্মৃতি মনে পড়ে যায়, যার ফলে তিনি কিছু সময়ের জন্য বিহ্বল হয়েছিলেন।

   13.“ঘটনাক্রমে সেই আংটি পেল এক ধীবর” — ধীবরের আংটি পাওয়ার আগের কাহিনি নিজের ভাষায় লেখো।

উঃ কালিদাসের ‘ধীবর বৃত্তান্ত’ নামক নাট্যাংশে মহর্ষি কম্বের অনুপস্থিতিতে মহর্ষির পালিত কন্যা শকুন্ডলাকে বিয়ে করে রাজা দুষ্মন্ত রাজধানীতে ফিরে দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও তিনি শকুন্তলার খোঁজ করেন না। একদিন ঋষি দুর্বাসা কম্বের আশ্রমে এলে স্বামীর চিন্তায় মগ্ন শকুন্তলা তা টের পান না। অপমানিত ঋষি অভিশাপ দেন যে যার চিন্তায় শকুন্তলা মগ্ন হয়ে আছেন তিনি শকুন্তলাকে ভুলে যাবেন। সখী প্রিয়ংবদার অনুরোধে অবশ্য অভিশাপ কিছুটা লঘু করে দুর্বাসা বলেন যে শকুন্তলা যদি প্রিয়জনকে কোনো স্মৃতিচিহ্ন দেখাতে পারেন তাহলে অভিশাপ কার্যকর থাকবে না। শকুন্তলার কাছে থাকা দুষ্মন্তের দেওয়া আংটিটাই স্মৃতিচিহ্ন বলে সখীরা ভেবে নেন। মহর্ষি কণ্ব তীর্থ থেকে ফিরে শকুন্তলাকে পতিগৃহে পাঠানোর উদ্যোগ নেন। কিন্তু যাওয়ার সময়ে শচীতীর্থে স্নানের পরে অঞ্জলি দিতে গিয়ে হাত থেকে আংটি খুলে জলে পড়ে যায়। ফলে দুষ্মন্ত শকুন্তলাকে আর চিনতে পারেন না। ওদিকে, এক ধীবর মাছ ধরতে গিয়ে একটা রুই মাছ ধরে এবং তার পেটে এই আংটিটি পায়।

   14.“তা তোর জীবিকা বেশ পবিত্র বলতে হয় দেখছি।”—কে, কোন প্রসঙ্গে মন্তব্যটি করেছে?

উঃ ধীবরের কাছে রাজার নাম খোদাই করা মণিখচিত আংটিটি পেয়ে দুই রক্ষী তাকে চোর সাব্যস্ত করে। আত্মপক্ষ সমর্থনে ধীবর নিজের কথা বলতে চাইলেও রক্ষীরা তাকে ব্যঙ্গবিদ্রুপ করে । তখন রাজার শ্যালক তার কাছে পুরো ঘটনাটি জানতে চাইলে ধীবর জানায় যে সে একজন জেলে জাল, বড়শি ইত্যাদির সাহায্যে মাছ ধরে সে তার সংসার চালায়। ধীবরের এই জবাব শুনে ব্যঙ্গের সুরে রাজার শ্যালক ধীবরের উদ্দেশে উদ্দিষ্ট মন্তব্যটি করেন।

   15.“… তা তোর জীবিকা বেশ পবিত্র বলতে হয় দেখেছি”- বক্তা কাকে উদ্দেশ্য করে কথাটি বলেছেন? ওই ব্যাক্তির প্রতিক্রিয়া কী ছিল?

উঃ আলোচ্য মন্তব্যটি ‘ধীবর বৃত্তান্ত’ নাট্যাংশের অন্তর্গত, মন্তব্যটি রাজ-শ্যালক ধীবর সম্পর্কে করেছেন।

রাজশ্যালক ধীবরের জীবিকা নিয়ে ব্যাঙ্গ করেছিলেন। সেই বক্ত্যব্যের বিরোধিতা করে ধীবর বলেছিলেন – “যে বৃত্তি নিয়ে যে মানুষ জন্মেছে, সেই বৃত্তি হলেও তা পরিত্যাগ করা উচিৎ নয়। বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ স্বভাবে দয়াপরায়ণ হলেও যজ্ঞীয় পশুবধের সময় নির্দয় হয়ে থাকেন।” ধীবর তার বক্ত্যব্যের মাধ্যমে বোঝেতে চেয়েছিলেন যে, তার জীবিকা নিম্নমানের হলেও তা দেখে ব্যাক্তি যাচাই করা উচিৎ নয়। কারণ, বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণের তাঁর স্বভাবে দয়ালু হলেও যজ্ঞের সময় তিনি নির্দয় ভাবে পশুবধ করেন।

Loading

Leave a Reply

error: