Skip to content

পৃথিবীপৃষ্ঠে কোন স্থানের অবস্থান নির্ণয় – নবম শ্রেণী

CLASS IX – GEOGRAPHYCAL LOCATION OF ANY PLACE ON EARTH

Teacher: Dr. Arpana Bera
Video Credit: Banglar Shiksha
Textual Credit: Sahaj Path for Sahaj Shiksha

GEOGRAPHYCAL LOCATION

গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর

১. নিরক্ষরেখাকে মহাবৃত্ত (Great Circle) বলে কেন?
উত্তর : পৃথিবীর ওপর উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর মাঝ বরাবর ও সমদূরত্বে পূর্ব-পশ্চিমে যে রেখাটি কল্পনা করা হয়েছে, তাকে রক্ষরেখা বলে। এটি একটি পূর্ণবৃত্ত এবং সবচেয়ে বড়াে পরিধির বৃত্ত। সেইজন্য নিরক্ষবৃত্তকে মহাবৃত্ত বলে। মহাবৃত্ত বরাবর পৃথিবীকে কাল্পনিকভাবে কাটলে পৃথিবী সমান দুইভাগে বিভক্ত হবে।

২. নিরক্ষরেখার অপর নাম বিষুবরেখা কেন?
উত্তর : বিষুব’ কথাটির অর্থ সমান। নিরক্ষরেখার ওপর বছরের প্রতিটি দিন সূর্যরশ্মি লম্বভাবে বা প্রায় লম্বভাবে পড়ে বলে।দিন-রাত্রির দৈর্ঘ্য সমান হয়। তার্থাৎ, 12 ঘণ্টা দিন ও 12 ঘণ্টা রাত্রি সেই কারণে এই রেখাটির অপর এক নাম বিষুবরেখা।

৩. সমাক্ষরেখা কাকে বলে?
উত্তর : ভূগােলকের ওপর একই অক্ষাংশবিশিষ্ট স্থান বিন্দুগুলিকে পরপর যুক্ত করে যে রেখাটির সৃষ্টি হয়, তাকে সমাক্ষরেখা বলে। অর্থাৎ, সমান অক্ষাংশবিশিষ্ট রেখাকে সমাক্ষরেখা বলা হয় এবং একই সমাক্ষরেখার ওপর অবস্থিত প্রতিটি স্থানের অক্ষাংশ একই (সমান)।

৪. অক্ষাংশ (Latitude) কাকে বলে?
উত্তর : উভয় গােলার্ধে নিরক্ষরেখা থেকে উত্তরে বা দক্ষিণে পৃথিবীর কোনাে স্থানের কৌণিক দূরত্বকে সেই স্থানের অক্ষাংশ বলে। অর্থাৎ,নিরক্ষরেখার উত্তর বা দক্ষিণে অবস্থিত কোনাে স্থান পৃথিবীর নিরক্ষরেখাকেন্দ্রে নিরক্ষীয় তলের সঙ্গে যে কোণ উৎপন্ন করে, তাকে অক্ষাংশ বলে।
উদাহরণস্বরূপ-কলকাতার অক্ষাংশ 22°34’উত্তর বলতে বােঝায় কলকাতা নিরক্ষরেখা থেকে উত্তরে 22°34′ কৌণিক দূরত্বে অবস্থিত।

৫. দ্রাঘিমা (Longitude) কাকে বলে?
উত্তর : মূলমধ্যরেখা থেকে পূর্ব ও সুমেরু পশ্চিমে কোনাে স্থানের নিরক্ষীয়তল বরাবর কৌণিক দূরত্বকে সেই স্থানের দ্রাঘিমা (Longitude) বলে। তার্থাৎ, পৃথিবীর কেন্দ্রে মূলমধ্যরেখা থেকে পূর্বে ও পশ্চিমে কোনাে স্থানের কৌণিক দূরত্বকে সেই স্থানের দ্রাঘিমা বলে। উদাহরণস্বরূপ- কুমেরু কলকাতার দ্রাঘিমাংশ ৪৪°30′ পূর্ব চিত্র 3.27° কৌণিক দূরত্বের বলতে বােঝায় কলকাতা নিরক্ষীয় সাহায্যে দ্রাঘিমা নির্ণয় তল বরাবর মূলমধ্যরেখা থেকে পূর্বে ৪৪°30′ কৌণিক দূরত্বে অবস্থিত।

৬. 180° পূর্ব ও 180° পশ্চিম দ্রাঘিমারেখাকে কেন একই দ্রাঘিমারেখা বলা হয়?
উত্তর : 180° পূর্ব ও 180° পশ্চিম দ্রাঘিমারেখা দুটি একই স্থানে অবস্থিত বলে এই দ্রাঘিমারেখা দুটিকে একই দ্রাঘিমারেখা বলে।পৃথিবীর আয়তাকার মানচিত্রে এই রেখা দুটি অঙ্কন করা যায়, কিন্তু ভূ-গােলকে একটি দ্রাঘিমারেখার দ্বারাই উভয় রেখাদ্বয়কে বােঝানাে হয়।

৭. রৈখিক দূরত্ব (Linear Distance) কাকে বলে?
উত্তর : কোনাে সমতল জায়গায় দুটি স্থানের দূরত্ব সােজাসুজি ফিতে বা দড়ি দিয়ে মাপার পর ওই মাপটিকে সেন্টিমিটার, মিটার,কিলােমিটার ইত্যাদির মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। এইভাবে দূরত্ব প্রকাশ করাকে রৈখিক দূরত্ব (Linear Distance) বলে।

৮. কলকাতার অক্ষাংশ 22°34’ উত্তর বলতে কী বােঝায়?
উত্তর : কলকাতার অক্ষাংশ 22°34′ উত্তর বলতে বােঝায় কলকাতা পৃথিবীর কেন্দ্র ও নিরক্ষীয় তলের সঙ্গে 22°34′ কোণ উৎপন্ন করে এবং কলকাতা উত্তর অক্ষাংশে অবস্থিত।

৯. কলকাতার দ্রাঘিমা ৪৪°30° পূর্ব বলতে কী বােঝায়?
উত্তর : কলকাতা থেকে নিরক্ষীয় তল বরাবর পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত অঙ্কিত সরলরেখা, মূলমধ্যরেখা থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত বিস্তৃত সরলরেখার সঙ্গে ৪৪°30′ কোণ উৎপন্ন করে এবং কলকাতা পূর্ব দ্রাঘিমায় অবস্থিত।

১০. ভৌগােলিক জালক (Grid) কাকে বলে?
উত্তর : দুটি স্থির মেরুবিন্দু (উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরু) সংযােগকারী কাল্পনিক রেখাটিকে অক্ষ বলে। গ্লোবের মধ্যে পূর্ব থেকে পশ্চিমে কাল্পনিক অক্ষরেখা এবং উত্তর থেকে দক্ষিণে কাল্পনিক দ্রাঘিমারেখা জালের মতাে বেষ্টন করে থাকে, একে ভৌগােলিক জালক (Grid) বলে। এই রেখাগুলির মাধ্যমে কোনাে স্থানের অবস্থান নির্ণয় করা যায়।

টিকা লেখো

১. মূলমধ্যরেখা (Prime Meridian)
উত্তর : ভূগােলকের অন্তর্গত 0° দ্রাঘিমারেখাটি মূলমধ্যরেখা (Prime Meridian) নামে পরিচিত।

কাল্পনিক অবস্থান: এই রেখাটি লন্ডনের গ্রিনিচ মানমন্দিরের উপর দিয়ে কল্পনা করা হয়েছে।

বৈশিষ্ট্য : মূলমধ্যরেখাটি উত্তরে সুমেরু থেকে দক্ষিণে কুমেরু পর্যন্ত বিস্তৃত। ও এই রেখাটি অর্ধবৃত্তাকার। প্রতিটি অক্ষরেখাকে মূলমধ্যরেখা প্রায় লম্বভাবে ছেদ করেছে।

গুরুত্ব : পৃথিবীকে পূর্ব ও পশ্চিম গােলার্ধে বিভক্ত করেছে। মূলমধ্যরেখার স্থানীয় সময়কে সারা পৃথিবীর প্রমাণ সময় হিসাবে ধরা হয়।

২. স্থানীয় সময় (Local Time)
উত্তর : পৃথিবীর পশ্চিম থেকে পূর্বে আবর্তনের ফলে পৃথিবীর কোনাে-না-কোনাে দ্রাঘিমারেখা সূর্যের সামনে আসে, অর্থাৎ সূর্যরশ্মি প্রতিটি দ্রাঘিমারেখার উপর লম্বভাবে পতিত হয়। এইভাবে কোনাে দ্রাঘিমারেখায় সূর্যের সর্বোচ্চ উন্নতির সময় দুপুর 12টা ধরে দিনের বাকি সময়ের হিসাব করা হয়। এইভাবে আকাশে সূর্যের অবস্থান অনুসারে যে সময় নির্ধারণ করা হয়, তাকে স্থানীয় সময় বলে।

উদাহরণ : কলকাতায় (88°30′ পূর্ব) যখন সূর্যের উন্নতি সর্বোচ্চ তখন কলকাতার স্থানীয় সময় দুপুর 12টা। ঠিক সেই মুহূর্তে দিল্লির (77°12′ পশ্চিম) স্থানীয় সময় হবে সকাল 11টা 14 মিনিট 36 সেকেন্ড।

৩. প্রমাণ সময় (Standard Time)
উত্তর : পৃথিবীর একই দ্রাঘিমারেখায় অবস্থিত স্থানগুলির স্থানীয় সময় এক হলেও 1° দ্রাঘিমার পার্থক্যে 4 মিনিট সময়ের পার্থক ঘটে। ফলে কোনাে দেশে বহুসংখ্যক দ্রাঘিমারেখার উপস্থিতির দরুন বিভিন্ন স্থানীয় সময় থাকলে রেল, ডাক, বেতার এবং প্রশাসনিক কাজ চালানাে অসুবিধাজনক হয়ে পড়বে।

এই অসুবিধা যাতে না হয়, সেজন্য কোনাে দেশের প্রায় মধ্যাঞ্চল দিয়ে উত্তর-দক্ষিণে প্রসারিত দ্রাঘিমাকে প্রমাণ দ্রাঘিমা ধরা হয় এবং এই দ্রাঘিমার ওপর। নির্ভর করে যখন দেশের বা ওই ভূখণ্ডের সময় নির্ণীত হয়, তখন তাকে ওই দেশ বা ভূখণ্ডের প্রমাণ সময় বলে।

উদাহরণ : ভারতের প্রায় মাঝামাঝি স্থানে এলাহাবাদের কাছে অবস্থিত 82°30′ পূর্ব দ্রাঘিমারেখার স্থানীয় সময়কে ভারতের প্রমাণ সময় হিসাবে ধরা হয়।

৪. am ও pm
উত্তর : পৃথিবীর আবর্তন গতির ফলে কোনাে দ্রাঘিমারেখা যখন সূর্যের সামনে আসে তখন সূর্যকে সেই স্থানের মধ্যাকাশে দেখা যায় এবং তখন সেখানের স্থানীয় সময় হয় মধ্যাহ্ন বা বেলা 12টা। বিপরীত দ্রাঘিমারেখায় তখন সময় হয় মধ্যরাত্রি বা রাত্রি 12টা। অর্থাৎ, কোনাে জায়গায় মধ্যরাত্রি 12টার পর থেকে পরদিন মধ্যাহ্ন অর্থাৎ দুপুর 12টার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত সময়কে Ante (Before) Meridian বা am এবং মধ্যাহ্ন বা দুপুর 12টার পর থেকে মধ্যরাত্রি 12টার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত সময়কে Post (After) Meridian বা pm বলে।

অর্থাৎ, কোনাে জায়গার দ্রাঘিমা বা Meridian-এর উপর সূর্য পৌঁছানাের আগের সময় বােঝাতে Ante Meridian এবং সূর্য পৌঁছানাের পরের সময় বােঝাতে Post Meridian ব্যবহার করা হয়। আর রাত্রি 12টা এবং দুপুর 12টাকে am বা pm না বলে যথাক্রমে মধ্যরাত্রি 12টা এবং মধ্যাহ্ন 12টা বলা হয়ে থাকে।

নিজে করার অনুশীলন প্রশ্ন

  1. সুমেরুবৃত্তরেখা ও কুমেরুবৃত্তরেখা কাকে বলে?
  2. দ্রাঘিমারেখা কী?
  3. কোনো দেশ স্থানীয় সময়ের পরিবর্তে প্রমাণ সময়কে কি বলে?
  4. নিরক্ষীয় তল কী?
  5. অক্ষাংশ কী?
  6. কৌণিক দূরত্ব কাকে বলে?
  7. কোনো দেশ স্থানীয় সময়ের পরিবর্তে প্রমাণ সময়কে কি বলে?
  8. মহাবৃত্ত ও ক্ষুদ্ৰবৃত্তের মধ্যে প্রভেদ কী?
  9. মূলমধ্যরেখা কী?
  10. নিরক্ষরেখা কী?
  11. কৌণিক দূরত্ব কাকে বলে?
  12. প্রমাণ সময় কী?
  13. দ্রাঘিমাংশ কী?
  14. অক্ষরেখাগুলিকে সমাক্ষরেখা বলে কেন?
  15. উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশ বলতে কী বোঝ?
  16. সুমেরুবৃত্তরেখা ও কুমেরুবৃত্তরেখা কাকে বলে?
  17. আন্তর্জাতিক তারিখরেখা কী?
  18. অক্ষরেখাগুলিকে সমাক্ষরেখা বলে কেন?

Loading

Leave a Reply

error: