অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর (দু একটি শব্দে):
(১) এককোশি প্রাণী দেখার জন্য তুমি কোন অণুবীক্ষণ যন্ত্র ব্যবহার করবে?
যৌগিক আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র।
(২) কোন বিজ্ঞানী কোষ আবিষ্কার করেন?
রবার্ট হুক।
(৩) ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রে কাচের লেন্সের পরিবর্তে কি ব্যবহার করা হয়?
তড়িৎ চুম্বক।
(৪) একটি পর্দাবিহীন কোষ অঙ্গাণুর নাম উল্লেখ করো।
রাইবোজোম।
(৫) একটি কোষে যদি সব রাইবোজোম ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে কোষটির কোন কাজ ব্যাহত হবে?
প্রোটিন সংশ্লেষ।
(৬) চোখের রেটিনায় উপস্থিত কোন কোষ মৃদু আলোয় দর্শনে সাহায্য করে?
দণ্ডাকার রড কোষ।
(৭) উদ্ভিদের দেহে কি কি ধরনের কলা দেখা যায়?
স্থায়ী কলা ও ভাজক কলা।
(৮) উজ্জ্বল আলোয় বর্ণ দর্শনের সাহায্য করে কোন কোষ?
শঙ্কু আকৃতির কোণ কোষ।
(৯) একটি পর্দা ঘেরা অঙ্গানু যার মধ্যে পুরনো জীর্ণ কোষকে ধ্বংস করার জন্য নানা ধরনের উৎসেচক থাকে, তাহার নাম কি?
লাইসোজোম।
(১০) কোন কোষ অঙ্গাণু ‘কোষের মস্তিষ্ক ‘ নামে পরিচিত?
নিউক্লিয়াস।
(১১) ক্রোমোপ্লাস্টিড এর কাজ কি?
ফুল ও ফলের বর্ণ নিয়ন্ত্রণ করা।
(১২) লবণাক্ত পরিবেশে বসবাসকারী প্রাণীদের ফুলকায় অবস্থিত কোষের নাম কি?
ক্লোরাইড কোষ।
(১৩) মাইক্রোস্কোপের নিচে পেঁয়াজের কোষ পর্যবেক্ষণ করার সময় যে ফাঁকা গঠনটি চোখে পড়ে সেটি কী?
গহ্বর।
(১৪) ব্যাকটেরিয়ার শ্বসন অঙ্গটির নাম কি?
মেসোজোম।
(১৫) পেশি কোষের রক্ত কণিকার নাম কি?
লোহিত রক্ত কণিকা।
(১৬) জীব দেহের গঠনের ধাপগুলি রেখাচিত্রের সাহায্যে দেখাও।
জীবদেহের গঠনের ধাপগুলি হল-
জীবদেহ ➞ অঙ্গতন্ত্র ➞ অঙ্গ ➞ কলা ➞ কোষ
(১৭) যৌগিক আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্রের ব্যবহৃত লেন্স গুলির নাম লেখ।
অকিউলার লেন্স, অবজেকটিভ লেন্স।
(১৮) কোষের শক্তিঘর কোন কোষ অঙ্গানুকে বলা হয়?
মাইটোকন্ড্রিয়াকে।
(১৯) DNA এর সম্পূর্ণ নাম লেখ।
ডি-অক্সি রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড।
(২০) প্রাণী কোষ বিভাজনে কোন অঙ্গানু অংশগ্রহণ করে?
সেন্ট্রোজোম।
(২১) বর্ণহীন প্লাস্টিডের একটি কাজ লেখ।
নানা ধরনের খাদ্য সঞ্চয় করা।
(২২) স্নায়ুকলার একটি উল্লেখযোগ্য কাজ লেখ।
সংবেদন গ্রহন করা।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর:
(১) যৌগিক অণুবীক্ষণ যন্ত্রে ব্যবহৃত লেন্স দুটির নাম কি কি?
যৌগিক আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্রে বস্তুকে অনেকগুণ বড়ো করে দেখানোর জন্য বিবর্ধন ক্ষমতা সম্পন্ন একাধিক লেন্স ব্যবহৃত হয়।
যেমন- অকিউলার লেন্স, অবজেকটিভ লেন্স।
(২) কোষপর্দার দুটি কাজ উল্লেখ করো।
কোষপর্দা নিন্মলিখিত কাজগুলি সম্পন্ন করে থাকে-
(১) কোষমধ্যস্থ সজীব অংশকে রক্ষা করে।
(২) কয়েক প্রকার কোষ অঙ্গানু এবং নিউক্লিয় পর্দা সৃষ্টি করে।
(৩) কোষপর্দার গঠন ব্যাখ্যা করো।
কোষপর্দা তিনটি স্তর নিয়ে গঠিত। বাইরের ও ভিতরের স্তর দুটি প্রোটিন অণুস্তর এবং মাঝের স্তরটি লিপিড অণুস্তর দিয়ে গঠিত।
(৪) প্রাইমরডিয়াল ইউট্রিকল কি?
কোষের গহ্বররের আকার ক্রমশ যখন বাড়তে থাকে, তখন নিউক্লিয়াসসহ সাইটোপ্লাজম কোষ প্রাচীরের ভেতরের দিকে কোষের পরিধির দিকে সরে যায়। গহ্বরকে বেষ্টন করে সাইটোপ্লাজমের এরকম বিন্যাসকে প্রাইমরডিয়াল ইউট্রিকল বলে।
(৫) মানুষের লোহিত রক্ত কণিকার আকার কি রকম এবং এই আকারের জন্য তার কি সুবিধা হয়?
মানুষের লোহিত রক্তকণিকা গোলাকার, দু-পাশ চ্যাপ্টা, চাকতির মতো। এই রকম আকারের ফলে বিভিন্ন ব্যাসের রক্তনালীর মধ্য দিয়ে যাতাযাতে আর বেশি পরিমাণ অক্সিজেন পরিবহনে সুবিধা হয়।
লোহিত রক্ত কণিকার আকৃতি দুপাশ চ্যাপ্টা এবং চাক্তির মতো এর জন্য লোহিত রক্ত কণিকার কি সুবিধা হয়? এই প্রশ্নের ও একই উত্তর হবে।
(৬) এন্ডোপ্লাজমিয় জালিকার গঠন উল্লেখ করো।
এণ্ডোপ্লাজমীয় জালিকা প্লাজমা পর্দা থেকে উৎপন্ন হয়ে নিউক্লীয় পর্দা পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে। কতকগুলি পর্দাবেষ্টিত নানা আকারের নল নিয়ে এরা গঠিত। এরা সাইটোপ্লাজমকে কতকগুলি অসম্পূর্ণ প্রকোষ্ঠে ভাগ করে। কোনো কোনো পর্দার বাইরের দিকে প্রোটিন সংশ্লেষকারী রাইবোজোম যুক্ত থাকে। তাই এদের অমসৃণ দেখায়। আর কোনো পর্দার বাইরের দিকে রাইবোজোম না থাকায় মসৃণ হয়।
(৭) গলগি বস্তুর গঠন উল্লেখ করো। গলগি বস্তুর কাজ উল্লেখ করো।
গলগি বস্তু নিউক্লিয়াসের কাছে থাকা চ্যাপ্টা থলি, লম্বা থলি বা ছোটো গহ্বরের মতো গঠনযুক্ত অঙ্গানু। কোষমধ্যস্থ বিভিন্ন বস্তু যেমন হরমোন, উৎসেচক পরিবহণ ও ক্ষরণে এরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
(৮) ভাজক কলা ও স্থায়ী কলার দুটি করে কাজ লেখো।
ভাজক কলার কাজ: নতুন অঙ্গ সৃষ্টি করা, মূল ও কাণ্ডের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করা, নতুন পাতা, কাক্ষিক মুকুল ও শাখা উৎপন্ন করা।
স্থায়ী কলার কাজ: খাদ্য সংশ্লেষ সঞ্চয় ও পরিবহন করা, বর্জ্র পদার্থ সঞ্চয় করা, ফল ও বীজের বিস্তার করা।
(৯) যৌগিক আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র কোন কোন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়?
যৌগিক আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্রের ব্যবহার-
(১) ব্যাকটেরিয়া, শৈবাল, ছত্রাক, বিভিন্ন এককোশী ও বহুকোশী প্রাণীর দেহের বহির্গঠন জানার জন্য।
(২) উদ্ভিদ দেহের বিভিন্ন অংশের যেমন মূল, কাণ্ড ও পাতার অন্তর্গঠন পর্যবেক্ষণের জন্য।
(৩) জীবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ ও তার প্রস্থচ্ছেদ করে তার কলার গঠন জানার জন্য।
(৪) কোষের ভেতরের অঙ্গানু ও কোষের বাইরের পর্দার গঠন জানার জন্য।
(১০) কোষপর্দা ও কোষপ্রাচীর এর মধ্যে একটি মিল ও একটি অমিল উল্লেখ করো।
কোষপর্দা ও কোষপ্রাচীরের মধ্যে মিলঃ কোষপর্দা ও কোষপ্রাচীর উভয়ই কোশের বাইরের আবরণ হিসেবে কাজ করে এবং কোষকে বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশ থেকে রক্ষা করে।
কোষপর্দা ও কোষপ্রাচীরের মধ্যে অমিলঃ কোষপর্দা প্রাণী ও উদ্ভিদ উভয় কোষেই দেখা যায়, কিন্তু কোষপ্রাচীর শুধুমাত্র উদ্ভিদ কোষেই দেখা যায়।
(১১) ইউক্যারিওটিক কোষের দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
(১) ইউক্যারিওটিক কোষে নিউক্লিয়াসটি সংগঠিত ও নিউক্লিয় পর্দাবেষ্টিত হয়।
(২) এই কোষে পর্দাঘেরা একাধিক কোষ অঙ্গানু থাকে।
(১২) যৌগিক আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র কাকে বলে?
যে অণুবীক্ষণ যন্ত্রে বস্তুকে অনেকগুণ বড়ো (প্রায় ২ হাজার – ৪ হাজার গুণ) দেখানোর জন্য উচ্চ বিবর্ধন ক্ষমতা সম্পন্ন একাধিক লেন্স ব্যবহার করা হয় এবং বস্তুকে আলোকিত করার জন্য দৃশ্যমান আলো ব্যবহার করা হয় তাকে যৌগিক আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র বলে।
(১৩) যোগ কলার একটি কাজ লেখো।
বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মধ্যে সংযোগ রক্ষা করে।
(১৪) প্রাণীদেহের সবচেয়ে দীর্ঘ কোষ কোনটি?
স্নায়ু কোষ হল প্রাণিদেহের সবচেয়ে দীর্ঘ কোষ।
(১৫) “আত্মঘাতী থলি” বলতে কী বোঝায়? অথবা, আত্মঘাতী থলি কি? একে আত্মঘাতী থলি বলার কারণ কি?
গলগি বস্তু থেকে উৎপন্ন পর্দা দিয়ে ঘেরা থলির মতো অঙ্গানু হল লাইসোজোম। এর মধ্যে খাদ্যকে হজম করার, জীবাণুদের মেরে ফেলার ও পুরোনো জীর্ণ কোষকে ধ্বংস করার জন্য নানা ধরনের উৎসেচক থাকে। লাইসোজোম যে কোষে থাকে সেই কোষকেই ধ্বংস করতে পারে বলে একে আত্মঘাতী থলি বলে।
(১৬) নিউক্লিয়াসের গঠন ও কাজ লেখো।
নিউক্লিয়াস হল কোষেশের ভেতরের ঘন গোলাকার বস্তু। নিউক্লিয়াসের বাইরে নিউক্লিয় পর্দা থাকে। আর ভিতরে নিওক্লিপ্লাজম নামক তরল থাকে। নিউক্লিয়াসের ভেতরে একধরনের সূক্ষ্ম জালকাকার গঠন দেখা যায় যা সুতোর মতো একে অপরকে পেঁচিয়ে থাকে। এই গঠন গুলো হল DNA এবং প্রোটিন দিয়ে তৈরি ক্রোমাটিন। নিউক্লিয়াস কোষের ভেতরে ঘটে চলা নানা প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে।
(১৭) মাইটোকন্ডিয়ার গঠন ও কাজ লেখো।
গোলাকার ডিম্বাকার বা রডের মতো দেখতে। এর ধাত্রের মধ্যে নানা ধরনের উৎসেচক, রাইবোজোম ও নিউক্লিক অ্যাসিড (DNA, RNA) থাকে। এরা খাদ্যের পরিপোষককে (গ্লুকোজ, অ্যামিনো অ্যাসিড, ফ্যাটি অ্যাসিড) ভেঙে শক্তি নির্গত করে। এরা দুটি প্লাজমা পর্দা দিয়ে ঘেরা কোষীয় অঙ্গাণু । অন্তঃপর্দা ভাঁজ হয়ে ক্রিস্টি গঠন করে। মাইটোকন্ডিয়া শক্তি নির্গমন প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়।
(১৮) উদ্ভিদ দেহে বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিডের ভূমিকা উল্লেখ করো।
উদ্ভিদ কোষের সাইটোকাজনে এক ধরনের রঙিন গঠন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এরা হলো প্লাস্টিড। প্লাস্টিড মূলত তিন ধরনের হয়-
ক্লোরোপ্লাস্টিড- যে প্লাস্টিড গুলোর মধ্যে সবুজ রঙের রঞ্জক ক্লোরোফিল থাকে তারা হলো ক্লোরোপ্লাস্টিড। ক্লোরোপ্লাস্টিড এর মধ্যে গ্রানা নামক এক বিশেষ গঠন দেখা যায়। এদের উপস্থিতির জন্য উদ্ভিদের নানা অঙ্গ সবুজ হয়।
ক্রোমোপ্লাস্টিড- দ্বিতীয় ধরনের প্লাস্টিডে কমলা, লাল, হলুদ ও অন্যান্য বর্ণের (সবুজ ব্যতীত) রঞ্জক থাকে। এরা ফুল ও ফলের বর্ণ নিয়ন্ত্রণ করে। এদের ক্রোমোপ্লাস্টিড বলা হয়।
লিউকোপ্লাস্টিড- আর তৃতীয় ধরনের প্লাস্টিড বর্ণহীন। নানা ধরনের খাদ্য সঞ্চয় করে।
(১৯) যৌগিক ও ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রের মধ্যে একটি গঠনগত ও একটি কার্যগত পার্থক্য লেখো।
যৌগিক অণুবীক্ষণ যন্ত্রে উচ্চ বিবর্ধন ক্ষমতা সম্পন্ন একাধিক লেন্স ব্যবহার করা হয়ে থাকে আর এটির ক্ষেত্রে বস্তুকে প্রায় 2000 থেকে 4000 গুণ বড় দেখা সম্ভব।
অন্যদিকে ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রে কাঁচের লেন্সের পরিবর্তে তড়িৎচুম্বক ব্যবহার করা হয়। এটিতে বস্তুকে ৫০০০০ থেকে ৩ লক্ষ গুণ বড় দেখা সম্ভব। এটি সাধারণত ভাইরাস ও অন্যান্য অনুযায়ীকে দেখার জন্য ব্যবহার করা হয়।
(২০) রডকোষ ও কোণকোষ কাকে বলে?
চোখের রেটিনাই মৃদু আলোয় দর্শনে সাহায্যকারী দণ্ডাকার কোষকে রডকোষ বলে।
চোখের রেটিনাই উজ্জ্বল আলোয় বর্ণদর্শনে সাহায্যকারী শঙ্কু আকৃতির কোষকে কোণ কোষ বলে।
(২১) প্লাস্টিড কয় প্রকার ও কি কি?
উদ্ভিদ কোষের সাইটোপ্লাজম এক ধরনের রঙিন গঠন ছাড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এদের প্লাস্টিড বলে।
প্লাস্টিড মূলত তিন প্রকার ক্লোরোপ্লাস্টিড, ক্রোমপ্লাস্টিড এবং লেউকোপ্লাস্টিড।
(২২) উদ্ভিদ কোষ ও প্রাণী কোষের দুটি পার্থক্য লেখো।
উদ্ভিদ কোষ | প্রাণী কোষ |
---|---|
উদ্ভিদ কোষে কোষ প্রাচীর থাকে। | প্রাণী কোষে কোষ প্রাচীর থাকে না। |
এই কোষে দ্বি একক পর্দা বেষ্টির প্লাস্টিড থাকে। | এই কোষে সাধারন্ত প্লাস্টিড থাকে না। |
উদ্ভিদ কোষে লাইসোজোম থাকে না। | প্রাণী কোষে একক পর্দা বেষ্টিত লাইসোজোম উপস্থিত। |
(২৩) DNA ও RNA এর পুরো কথাটি কি?
DNA – ডি-অক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড
RNA- রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড
(২৪) কোষপর্দা কে প্রভেদক ভেদ্যপর্দা বলে কেন?
কোষ পর্দা সজীব কোষের বহিঃ ও অন্তঃমাধ্যমের একটি অভিস্রবণীয় প্রতিবন্ধক রূপে কাজ করে, তাই একে প্রভেদক ভেদ্যপর্দা বলে।
(২৫) একটি আদর্শ প্রাণী কোষের চিত্র অঙ্কন করো।
(২৬) একটি আদর্শ উদ্ভিদ কোশের চিত্র অঙ্কন করো।