Skip to content

Kinetic theory of Gases – গ্যাসের গতিতত্ত্ব

Theoretical Source: Internet
Video Source: SPKF Teacher Shri Biresh Layek

kinetic theory of gases
ছবিতে ১৯৫০ বায়ুমণ্ডলীয় চাপে হিলিয়াম অণুর আপেক্ষিক অবস্থান দেখানো হয়েছে। ঘরের তাপমাত্রায় এই অণুগুলির কিছু নির্দিষ্ট গড় দ্রুতি আছে (যা ছবিতে প্রায় ১০১২ গুণ কমিয়ে দেখান হয়েছে)।

Kinetic theory of Gases – গ্যাসের গতিতত্ত্ব

গ্যাসের গতিতত্ত্ব বা গ্যাসের আণবিক গতিতত্ত্ব(Kinetic theory) অনুযায়ী সব বস্তুই বহুসংখ্যক ক্ষুদ্র কণার (অণুর) সমন্বয়ে গঠিত। এই তত্ত্ব অনুযায়ী অণুগুলি সর্বদা অনিয়মিতভাবে গতিশীল। সতত গতিশীল এই কণাগুলির অনবরত পরস্পরের সঙ্গে ও ধারক পাত্রের দেওয়ালের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়ে চলে। কোনো গ্যাসীয় ব্যবস্থায় কোন কোন অণু বর্তমান ও তাদের গতির ধারণা ব্যবহার করেই এই তত্ত্ব দিয়ে ওই ব্যবস্থার সমষ্টিগত ধর্মগুলি, যেমন চাপ, তাপমাত্রা, অথবা আয়তন ব্যাখা করা যায়।

গ্যাসের অণুগুলো এলোমেলোভাবে ছুটাছুটি করে। এ ছুটাছুটি তথা গতিশীলতার কারণে পদার্থের গ্যাসীয় অবস্থায় কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্যের উৎপন্ন হয়। এসব বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করার জন্য Gassendi, Newton, Bernoulli, Clausius এবং Maxwell প্রভৃতি বিজ্ঞানীদের গবেষণার ফলে একটি তত্ত্ব উপস্থাপিত হয় যা গ্যাসের গতীয় তত্ত্ব নামে পরিচিত। গতীয়তত্ত্ব কতগুলো স্বীকার্য নিয়ে গঠিত।

গ্যাসের আনবিক গতিতত্ত্বের স্বীকার্যগুলো নিম্নে দেওয়া হলো :
1. গ্যাসের গঠন :
                    যেকোন গ্যাস অসংখ্য ক্ষুদ্র কনিকা যেমন পরমানু বা অনু নিয়ে গঠিত। এসব কনিকা বা অনু দ্রুতগতিতে সরলরৈখিক পথে সবদিকে ছোটাছুটি করে।
2. গ্যাস অনুসমূহের আয়তন :
                 গ্যাস অনুগুলোর মোট আয়তন গ্যাসাধারের বা গ্যাস পাএের মোট আয়তনের তুুলনায় নগন্য বা নেই বললে চলে, গ্যাসের মোট আয়তনের অধিকাংশ স্থানই খালি।
3. গ্যাস অনুসমূহের মধ্যে আকর্ষণ ও বিকর্ষণ :
                 গ্যাস অনুগুলোর মধ্যে পারষ্পারিক কোন আকর্ণন বা বিকর্ষণ নেই, তারা পরষ্পর প্রভাবমুক্ত বা স্বাধীন।  এই আদর্শ গ্যাসের ক্ষেএে গ্যাসাধারের বা গ্যাস পাএের সাথে গ্যাসের কোন আকর্ষন থাকে না।
4. আন্তঃআনবিক সংঘর্ষ ও প্রকৃতি :
                       গ্যাস অনুগুলোর মধ্যে পরষ্পরের সাথে বা পাএের দেয়ালের সাথে সংঘর্ষ ঘটে, তখন ঐ সংঘর্ষগুলো সম্পূর্ণ স্থিতিস্থাপক হয় অর্থাৎ তাদের গতিশক্তি অভ্যন্তরীণ বা অন্যকোন শক্তিতে রুপান্তরিত হয় না। নিদিষ্ট তাপমাত্রায় (T) গ্যাসের অনুগুলোর মোট গতিশক্তি (Ek) স্থির থাকে।
5. গ্যাসের চাপ :
             অবিরাম স্থিতিস্থাপক সংঘর্ষের মাধ্যমে গ্যাসাধারের দেয়ালে প্রতি একক ক্ষেএফলে গ্যাস অনুগুলোর প্রয়োগকৃত বলকে গ্যাসের চাপ বলে।
♦ গ্যাস মিশ্রণের আংশিক চাপ :
কোন গ্যস মিশ্রণ যে আয়তন দখল এর একটি উপাদান গ্যাস এ একাকী ঐ আয়তন দখল করে যে চাপ প্রয়োগ করে তাকে আংশিক চাপ বলে।
 
6. গ্যাসের অনুর গতিশক্তি :
                    গ্যাসের অনুগুলোর গড় গতিশক্তি সংশ্লিষ্ট গ্যাসের কেলভিন তাপমাত্রার সমানুপাতিক। যদি কোন আদর্শ গ্যাসের আয়তন V, এর চাপ P, প্রতিটি গ্যাস অনুর ভর m, অনুর সংখ্যা N এবং গ্যাস অনুুর বর্গমূল গড় বর্গবেগ c, হয় তবে;
               PV = mNc^2÷3 
এটি আদর্শ গ্যাসের গতীয় সমীকরণ।
★ আনবিক সংঘর্ষ ও সংঘর্ষ ব্যাস :
                          গ্যাসের আনবিক সংঘর্ষ বুঝতে হলে আনবিক ব্যাস, আনবিক সংঘর্ষ ব্যাস ও গড় মুক্ত পথ এ তিনটি ধারনা থাকা প্রয়োজন।
দুটি অনুর সম্ভাব্য নূন্যতম দূরত্বে এসে এদের মধ্যে বিকর্ষণের কারনে বিপরীত দিকে ফিরে যাওয়াকে আনবিক সংঘর্ষ বলে।
দুটি সংঘর্ষের মধ্যবর্তী দূরত্বসমুহের গড় মানকে গ্যাস অনুর গড় মুক্ত পথ বলে।
প্রতিটি আনবিক সংঘর্ষকালে উভয় অনুর কেন্দ্রবিন্দুর নূন্যতম দূরত্বকে সংঘর্ষ ব্যাস বলে। সংঘর্ষ ব্যাসকে সিগমা দ্বারা প্রকাশ করা হয়। আনবিক
ব্যাস থেকে সংঘর্ষ ব্যাস একটু বড় হয়।  অধিকাংশ গ্যাসের ক্ষেএে ব্যাসের মাএা 2A হয়।
বিজ্ঞানীরা গ্যাস অনুগুলোর গতিবেগকে তিনভাগে প্রকাশ করেছেন। যথা :
1. বর্গমুল গড় বর্গবেগ : RMS – Root mean squre velocity
2. সাধারন গড়বেগ : Average velocity
3. সম্ভাব্য বেগ : Most probable velocity
ব্যাখা :
1.  বর্গমূল গড় বর্গবেগ বা RMS বেগ :
               কোন গ্যাসের অনুসমূহের গতিবেগের বর্গের গড় মানের বর্গমূলকে গ্যাস অনুগুলোর RMS বেগ বলে। একে c দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
তাপমাত্রা দেওয়া থাকলে RMS বেগের রাশিমালা হবে,
2. গড় বেগ : 
         কোন গ্যাসের অনুগুলোর বিভিন্ন গতিবেগের পাটিগণিতীয় গড় মানকে ঐ গ্যাসের অনুগুলোর গড় গতিবেগ বলা হয়। গড় গতিবেগকে c বার দ্বারা প্রকাশ করা হয়। 
3.  সম্ভাব্য বেগ :
           গ্যাসের অনুগুলোর সংঘর্ষের কারনে কোন একটি নিদিষ্ট মুহূর্তে একটি বিশেষ বেগ লাভ করে। বিশেষ মুহূর্তের এই বেগকে সম্ভাব্য বেগ বলে। একে আলফা দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
 

বয়েলের সূত্র উপপাদন

কোন নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থাৎ n মোল গ্যাসে N সংখ্যক অণু থাকলে, প্রতিটি অণুর ভর m এবং অণুসমূহের বর্গমূল গড় বর্গ গতিবেগ c এবং ঐ গ্যাসের চাপ P ও আয়তন V হলে গ্যাসের গতিতত্ত্ব হতে যে গতীয় সমীকরণ পাওয়া যায় তা হচ্ছে নিম্নরূপ-

PV = (1/3) mNc2

or, PV = (2/3) N x (1/2) mc2

or, PV = 2/3 x ET ——– (1)

এখানে, (1/2) mc2 অণুসমূহের গড় গতিশক্তি।

অণুসমূহের মোট গতিশক্তি,

ET = (1/2) mNC2

আবার গতিতত্ত্বের স্বীকার্য মতে, মোট গতিশক্তি (ET) কেলভিন তাপমাত্রার সমানুপাতিক।

অণুসমূহের মোট গতিশক্তি,

ET ~ T

or, ET = KT, এখানে K হলো ধ্রুবক। সুতরাং (1) নং সমীকরণে মোট গতিশক্তি E এর মান বসিয়ে পাই-

PV = (2/3) × KT ——– (2) [স্থির তাপমাত্রায়]

or, PV = K’

যেখানে, (2/3) × KT = K’ (আরেকটা ধ্রুবক)

or, V = k’ (1/P)

or, V ~ 1/P [স্থির তাপমাত্রায়]

এটিই বয়েলের সূত্রের গাণিতিক রূপ। অতএব, গ্যাসের গতিতত্ত্ব হতে বয়েলের সূত্র উপপাদন করা হল।

চার্লসের সূত্র উপপাদন

গ্যাসের গতিতত্ত্ব হতে প্রাপ্ত গতীয় সমীকরণ হচ্ছে,

PV = (1/3) mNc2

= (2/3) N (1/2) mc2

এখানে P = গ্যাসের চাপ, V = নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের আয়তন, m = প্রতিটি গ্যাস অণুর ভর, N = মোট অণুর সংখ্যা, c = গ্যাসের RMS বেগ। আবার = mc2 হচ্ছে গ্যাসের অণুসমূহের গড় গতিশক্তি। গতিতত্ত্বের স্বীকার্য মতে, গ্যাসের অণুসমূহের গড় গতিশক্তি কেলভিন তাপমাত্রার সমানুপাতিক। অর্থাৎ-

(1/2) mc2 ~ T

or, (1/2) mc2 = KT, যেখানে K একটি ধ্রুবক,

এবার এই সম্পর্ক গুলো থেকে পাই-

PV = 2/ 3 NKT

or, V = (2NK / 3P) x T (স্থির চাপে)

এখানে নির্দিষ্ট পরিমাণ গ্যাসের অণুর সংখ্যা N এর মান নির্দিষ্ট। অতএব স্থির চাপ (P)-এ নির্দিষ্ট পরিমাণ গ্যাসের জন্য লেখা যায়,

V = K’ × T, যেখানে K’ = 2NK / 3P একটা স্থির সংখ্যা।

or, V ~ T (স্থির চাপে নির্দিষ্ট পরিমাণ গ্যাসের জন্য)

এটিই চার্লসের সূত্রের গাণিতিক রূপ। অতএব, গ্যাসের গতিতত্ত্ব হতে চার্লসের সূত্র উপপাদন করা হল।

অ্যাভোগাড্রোর সূত্র উপপাদন

একই তাপমাত্রা (T) ও একই চাপ (P)-এ সমআয়তনের (V) দুটি গ্যাসের কথা বিবেচনা করি। গ্যাসের গতীয় সমীকরণ মতে,

১ম গ্যাসের জন্য পাই,

PV = (1/3) m1N1c12

যেখানে m1, N1, ও c1 যথাক্রমে প্রথম গ্যাসের প্রতিটি অণুর ভর, অণুর সংখ্যা এবং অণুসমূহের RMS গতিবেগ।

অনুরূপভাবে, ২য় গ্যাসের ক্ষেত্রে,

PV = (1/3) m2N2c22

যেহেতু উভয় গ্যাসের ক্ষেত্রে P ও V সমান, সুতরাং তাদের PV এর মান পরস্পর সমান। তাহলে,

(1/3) m1N1c12 = (1/3) m2N2c22

or, m1N1c12 = m2N2c22 ———(1)

এখানে গ্যাস দুটির তাপমাত্রা সমান, তাই গ্যাসের গতিতত্ত্বের স্বীকার্য মতে উভয় গ্যাসের অণুর গড় গতিশক্তি সমান। তাহলে-

(1/2) m1c12 = (1/2) m2c22

or, m1c12 = m2c22 ——– (2)

সমীকরণ (১)-কে সমীকরণ (২) দ্বারা ভাগ করে পাওয়া যায়, N1 = N2 অর্থাৎ একই তাপমাত্রা ও চাপে সমান আয়তনের বিভিন্ন গ্যাসে সমান সংখ্যক অণু থাকে। এটিই অ্যাভোগাড্রোর সূত্র। সুতরাং গ্যাসের গতিতত্ত্ব হতে অ্যাভোগাড্রোর সূত্র উপপাদন করা হল।

গ্রাহামের ব্যাপন সূত্র উপপাদন

গ্যাসের গতিতত্ত্ব হতে প্রাপ্ত গতীয় সমীকরণ হচ্ছে,

PV = (1/3) mNc2

or, mNc2 / V = 3P ——– (1)

আবার কোন নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের নমুনায় N সংখ্যক অণু থাকলে এবং প্রতি অণুর ভর m হলে mN হচ্ছে সে নমুনা গ্যাসের ভর। গ্যাসের আয়তন V হলে, তখন গ্যাসের ঘনত্ব,

d = ভর / আয়তন

    = mN / V

সুতরাং, (1) সমীকরণে, d এর মান বসিয়ে পাই,

dc2 = 3P

or, c2 = 3P / d

or, c = √(3P / d)

or, c = √(3P) x (1/√d)

or, c = K (1/√d)

এখানে K = √3P একটি ধ্রুবক, যখন P স্থির থাকে।

তাহলে, c ~ 1 / √d

একটি গ্যাসের অণুসমূহের গতিবেগ যত বেশি হবে, কোন সূক্ষ্ম ছিদ্র দিয়ে সে গ্যাসের ব্যাপন হার তত বাড়বে। অর্থাৎ নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কোন গ্যাসের ব্যাপন হার-

r ~ c

সুতরাং, গ্যাসের ব্যাপনের হার,

r ~ 1/√d, যখন গ্যাসের চাপ ও তাপমাত্রা স্থির থাকে।

এটিই গ্রাহামের ব্যাপন সূত্রের গাণিতিক রূপ। অতএব গ্রাহামের ব্যাপন সূত্র উপপাদন করা হল।

ডালটনের আংশিক চাপ সূত্রের উপপাদন

মনে করি, নির্দিষ্ট T তাপমাত্রায় A ও B দুটি গ্যাসকে V আয়তনের পৃথক দুটি পাত্রে আবদ্ধ করতে যথাক্রমে P1 ও P2 চাপের প্রয়োজন হয়। আবার পরস্পর বিক্রিয়াহীন এ গ্যাস দুটিকে একই তাপমাত্রায় ও একই V আয়তনে রাখতে P চাপের প্রয়োজন হয়। আংশিক চাপের সংজ্ঞা মতে, P1 ও P2 হল ঐ গ্যাস মিশ্রণে যথাক্রমে A ও B উপাদান গ্যাসের আংশিক চাপ। প্রমাণ করতে হবে যে, P = P1 + P2.

মনে করি, A গ্যাসে প্রতিটি m ভরের N সংখ্যক অণু আছে এবং এদের বর্গমূল গড় বর্গবেগ হল c। সুতরাং গ্যাসের গতিতত্ত্ব থেকে আমরা পাই,

P1V = (1/3) mNc2

      = (2/3) N (1/2) mc2

     = (2/3) N Ke, এখানে (Ke = A এর প্রতি অণুর গড় গতিশক্তি)

     = (2/3) KEA, এখানে KEA = A এর N সংখ্যক অণুর মোট গড় গতিশক্তি।

or, KEA = (3/2) P1V

অনুরূপভাবে, B গ্যাসের জন্য দেখানো যায় যে, KEB = (3/2) P2V

আবার A ও B গ্যাস দুটির মিশ্রণের বেলায়,

KETotal = (3/2) PV

গ্যাস দুটি পরস্পর বিক্রিয়াহীন এবং এদের তাপমাত্রা নির্দিষ্ট, তাই-

KETotal = KEA + KEB

or, (3/2) PV = (3/2) P1V + (3/2) P2V

or, (3/2) PV = (3/2) V (P1 + P2)

or, P = P1 + P2

অর্থাৎ গ্যাস মিশ্রণের মোট চাপ-এর উপাদান গ্যাসসমূহের আংশিক চাপের যোগফলের সমান। এটিই ডালটনের আংশিক চাপ সূত্র। অতএব, গ্যাসের গতিতত্ত্ব হতে ডালটনের আংশিক চাপ সূত্র উপপাদন করা হল।

Guidance from Shri Biresh Lakey Sir

Loading

Leave a Reply

error: